২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ফেনী-৩ আসনে নয়া সমীকরণ

ফেনী-৩ আসনে নয়া সমীকরণ - নয়া দিগন্ত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী না থাকায় জাপার প্রার্থী লে: জেনারেল (অব:) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে সহজে মেনে নিতে পারছেনা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ইতোমধ্যে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

অন্যদিকে বিএনপির প্রার্থী দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু শেষ মুহুর্তে মনোনয়নপত্র জমা না দেয়ায় এগিয়ে এসেছেন ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক জেএসডির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। এতে করে দুই জোটেই অস্থিরতা বিরাজ করছে।

জেলার সমুদ্র উপকূলীয় সোনাগাজী আর দাগনভূঞা উপজেলা নিয়ে গঠিত ফেনী-৩ আসনে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৯৫৬ জন ভোটার রয়েছেন। ৯টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে সোনাগাজী এবং ৮টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে দাগনভূঞা উপজেলা গঠিত।

স্বাধীনতা পরবর্তী ১০টি নির্বাচনের দুটিতে আওয়ামী লীগ, দুটিতে জাতীয় পার্টি, এরপর টানা ৫টিতে বিএনপি ও ২০১৪ সালে বিএনপি বিহীন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হন। বর্তমান সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্লাহ বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্ছিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন।

ওই নির্বাচনে আসনটি মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির রিন্টু আনোয়ারকে ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়ান নৌকার প্রার্থী যুবলীগ নেতা আবুল বাশার। দলীয় কর্মী-সমর্থকরা লাঙলের প্রার্থীকে প্রত্যাখান করে একজোটে প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা হাজী রহিম উল্লাহর পক্ষ নেন। এতে অনেকটা ফাঁকা মাঠে জয় পান হাজী রহিম।

এবারো নৌকার মনোনয়ন চেয়ে অন্তত দেড় ডজন নেতা আবেদন করলেও শেষ পর্যন্ত কাউকেই প্রার্থী দেয়া হয়নি। জাতীয় পার্টিতে সদ্য যোগ দেয়া আলোচিত সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লে: জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীই এ আসনে মহাজোটের প্রার্থীতা অনেকটা নিশ্চিত।

মনোনয়ন বঞ্ছিত গত দুইবারের নৌকার প্রার্থী আবুল বাশার ও সংসদ সদস্য হাজী রহিম উল্লাহ স্বতন্ত্র হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। একইসাথে আবুল বাশার পুত্র ব্যবসায়ী ইসতিয়াক আহমেদ সৈকতকেও প্রার্থী করা হয়।

শোনা যাচ্ছে, দলীয় পদ রক্ষায় হাইকমান্ডের নির্দেশে যুবলীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য আবুল বাশারকে শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়াতে হলেও সৈকতকে নিয়েই তার সমর্থকরা মাঠে থাকবেন। অন্যদিকে মাসুদ চৌধুরীকে জাপার টিকিট দেয়ায় ক্ষুদ্ধ জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন গতবারের মহাজোট প্রার্থী রিন্টু আনোয়ার। তিনি পার্টি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ছাড়াও জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে তাকেই এ আসনে দলের প্রার্থী করা হয়েছিল বলে প্রচার রয়েছে।

এদিকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের কতিপয় কিছু নেতাকর্মীকে নিয়ে মাঠে রয়েছেন লে: জেনারেল (অব:) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী।

যুবলীগ নেতা আবুল বাশার জানান, দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনগনের অনুরোধেই তিনি প্রার্থী হয়েছেন। দীর্ঘদিন কাজ করায় তাদের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ভোটাররা কোন মৌসুমী পাখিকে গ্রহণ করবেনা।

একই কথা বললেন রিন্টু আনোয়ার। তার মতে, দলকে সংগঠিত করতে দীর্ঘদিন তিনি এলাকার নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করেছেন। হঠাৎ কেউ রাতারাতি নেতা হয়ে জনগনের মন জয় করতে পারবেননা।

লে: জেনারেল (অব:) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই তিনি কাজ করছেন। মান-অভিমান ভুলে নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করতে হবে।

অপরদিকে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুকে ঘিরে দুই উপজেলার দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হলেও শেষ মুহুর্তে আশার গুড়েবালি। তিনি মনোনয়নপত্র জমা না দেয়ায় এখানে নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। মিন্টুর ছোট ভাই দাগনভূঞা উপজেলা সভাপতি আকবর হোসেন ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনিকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হলেও নেতাকর্মীদের মাঝে এনিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

হেভিওয়েট মাসুদ চৌধুরীর মোকাবেলায় মিন্টুর বিকল্প দেখছেনা স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এনিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে একধরনের ক্ষোভও রয়েছে। মিন্টুর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দলীয় হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তে তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন।

তবে এখানে বিএনপির বিপুল ভোট ব্যাংক নিয়ে আশাবাদী আবদুল লতিফ জনি ও আকবর হোসেন। নির্বাচনী মাঠে নতুন হলেও জনি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। অন্যদিকে আকবর হোসেন দাগনভূঞা পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত মেয়র। তাছাড়া তিনি ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী ছিলেন।

আবদুল লতিফ জনি নয়া দিগন্তকে জানান, চূড়ান্ত মনোনয়ন পেলে বিএনপির ঘাঁটি পুনরুদ্ধারে তিনি দৃঢ় আশাবাদী। তার মতে, এ দুটি উপজেলা একদিকে যেমন সন্ত্রাস কবলিত অন্যদিকে উন্নয়ন বঞ্ছিত। দীর্ঘ একদশক ধরে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে এখানকার জনগন ভোটাধিকার থেকে বঞ্ছিত। অনুকূল পরিবেশ পেলে ব্যালটের মাধ্যমে উপযুক্ত জবাব দিবে।

অন্যদিকে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী আবদুল আউয়াল মিন্টু সরে যাওয়ায় এ আসনটি পেতে তৎপর ঐক্যফ্রন্টের শরিক জেএসডির যুগ্ম-সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। তার পৈত্রিক বাড়ি দাগনভূঞার জায়লস্কর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে। ছাত্র রাজনীতি থেকেই এলাকার সাথে তার যোগাযোগ রয়েছে। ফেনী-৩ এর পাশাপাশি তিনি ঢাকা-১৮ আসনেও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন জানান, জেএসডির পক্ষ থেকে এর আগে এ আসনটি দাবী করা হয়েছে। আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রার্থী না হওয়ায় তিনি প্রার্থী হয়ে ঐক্যফ্রন্টকে আসনটি উপহার দিতে চান।


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল