যে কারণে চাঁদপুরের রিটার্নিং অফিসারের অপসারণ দাবি করছে বিএনপির

চাঁদপুর জেলার রিটানিং অফিসার (জেলা প্রশাসক) মো: মাজেদুর রহমান খানের অপসারণ দাবি করেছে জেলা বিএনপি। সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর স্থানীয় বিএনপির আবেদনের পরও প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎ না করায় এ দাবি জানিয়েছে তারা। শুক্রবার জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানায় জেলা বিএনপি।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. সলিম উল্যা সেলিম মতবিনিময় সভায় বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আমাদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের সাথে দেখা করার সুযোগ চেয়ে অনুরোধ জানাই। কিন্তু তিনি আমাদের সাথে দেখা না করে তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে আমি তাকে বললাম, আপনি যখন ডিসি ছিলেন তখন আপনি আওয়ামী লীগের ডিসি ছিলেন। এখন আপনি রিটার্নিং অফিসার। বিএনপি নির্বাচনে যাচ্ছে। নির্বাচন বিষয়ে আমাদের আপনার সাথে দেখা করা দরকার। তাই আপনি আমাদের সাথে দেখা করতে হবে। জবাবে রিটার্নিং অফিসার বলেন, ‘নো, আমি আপনাদের সাথে দেখা করতে বাধ্য নই।’ পরে একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনি একা আসেন।’ তখন আমি বললাম, না, বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্ট একজনের দল না। তিনি বলেন, যখন উনি কোনভাবেই আমাদের সাথে দেখা করতে রাজি হচ্ছিলেন না তখন আমি তাকে অনুরোধ করে বলি- আমরা জাস্ট আপনার সাথে পরিচিতির জন্য যাবো। তাও উনি রিজেক্ট করলেন। এ অবস্থা যদি একজন রিটানিং কর্মকর্তার হয় তাহলে আমরা সুষ্ঠু এবং নিরপক্ষে নির্বাচন কিভাবে আশা করবো। আমরা নির্বাচনে যাচ্ছি হাত-পা বাঁধা অবস্থায়। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাঁতার কাটার মতো অবস্থা।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চাঁদপুর-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক তার বক্তব্যে বলেন, দিন কয়েক আগে স্থানীয় কয়েকটি পত্রিকায় এসেছে- তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকা যাবে না, তাহলে খারাপ লোকেরা চলে আসবে।’ খারাপ-ভালো নির্বাচন করবে জনগন। তারা যাকে ভোট দেবেন তারাই বিজয়ী হবেন। রিটানিং কর্মকর্তা যদি নিরপেক্ষ না থাকার কথা বলেন, তাহলে কিভাবে তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে? তিনি আমাদেরকে দেখা করার সুযোগ দিচ্ছেন না। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্য করে মিছিল করছে। আর আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তফসিল ঘোষণার পরও একটি মামলা করা হয়েছে। এসব মিলে এই রিটার্নিং কর্মকর্তার অধীনে সুষ্ঠু ও নিরক্ষে নির্বাচন নিয়ে আমাদের আশংকা রয়েছে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক সবার জন্য। সব নাগরিকের জন্য। একজন নাগরিক হিসেবেও আমরা তার দেখা করতে পারি, কথা বলতে পারি। সেই সুযোগও তিনি দিচ্ছেন না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক মির্জা জাকির, সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, কাজী শাহাদাত, শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, বিএম হান্নান, শহীদ পাটওয়ারী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুজ্জামান মন্টু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আনোয়ার বাবলু, মুনির চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান সফিকুজ্জামান, বিএনপি নেতা অ্যাড. হারুনুর রশিদ, জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন খান আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহারসহ জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

এদিকে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মাজেদুর রহমান খান বলেছেন, নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী যে কেউ আসতে পারে। এক্ষেত্রে কোন বাধা-নিষেধ নেই। যে কোন সময়ই আসতে পারে।