স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ আওয়ামী লীগের কর্মীদের
- ফেনী সংবাদাতা
- ০৫ নভেম্বর ২০১৮, ০৬:১২
ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে রোববার গণধর্ষণ করেছে সরকার দলীয়রা। ঘটনাটি জেনে হারুনুর রশিদ ওরপে বাংকু নামে নিজ দলের এক কর্মীকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ডেকে নিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র ও নির্যাতিতার পরিবার সূত্র জানায়, রিক্সা চালকের কিশোরী মেয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি ধলিয়া বাজার সংলগ্ন একটি বিউটি পার্লারে খন্ডকালীন কাজ করে। গতকাল রবিবার স্কুল থেকে পার্লারে যাওয়ার পথে ওই স্কুল ছাত্রীকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জোরপূর্বক তুলে অন্যত্র নিয়ে যায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ আহবায়ক এমদাদুল হক সোহেল, ছাত্রলীগ কর্মী রাজু, হারুনুর রশিদ বাংকুসহ চার বখাটে। পরে অজ্ঞাত স্থানে পালাক্রমে গণধর্ষণ শেষে সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে রেখে যায়।
স্থানীয় একটি মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও বিষয়টি জানাজানি হয়। রাতে নির্যাতিতাকে নিয়ে তার স্বজনরা শহরের মাষ্টারপাড়ায় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর সাথে স্বাক্ষাত করে ঘটনাটি জানান। তিনি তাৎক্ষণিক হারুনুর রশিদ ওরফে বাংকুকে ডেকে নিয়ে মডেল থানা পুলিশে সোপর্দ করেন। ঘটনায় জড়িত অন্যদেরও দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
ধলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার আহম্মেদ মুন্সি জানান, তিনি ঘটনাটি শোনার পর মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় মেম্বার সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেছেন।
এছাড়া অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এমদাদুল হক সোহেলও একইকথা বলেন। তিনি জানান, বিকালে ওই মেয়েটিকে অপহরণের কথা শুনে কয়েক জায়গায় খোঁজাখুজি করেন। নিজে ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, রাজু মেয়েটিকে আটক করেছিল বলে তিনি শুনেছেন।
ফেনী মডেল থানার ওসি মো: আবুল কালাম আজাদ একজনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্ত্রী ‘পর-পুরুষে আসক্ত’ : অতঃপর
চট্টগ্রাম ব্যুরো
সন্দেহের বশবর্তী হয়ে স্ত্রী সুমি ইসলামকে রশি দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছেন জাহিদ হোসেন রাজু (২৮)। এরপর লাশ গুম করতে শরীর এবং মাথা আলাদা করে বস্তায় ভরে ফেলে দেন। গত রোববার রাতে গ্রেফতারের পর এ তথ্য পুলিশকে জানান তিনি।
গত ২৬ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর থানার ছোটপুল এলাকার একটি নালা থেকে সুমি ইসলামের (২০) মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রাজুকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্য নিয়ে পুলিশ সুমির মাথা এবং ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধার করে।
জাহিদ হোসেন রাজু খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার হারুনুর রশিদের ছেলে। চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ ছোটপুল এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। সুমি ইসলাম (২০) খুলনা সদর থানার টোটপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলামের মেয়ে। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) আমেনা বেগম সিএমপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গ্রেফতারের পর রাজু বলেন, তার স্ত্রী বিভিন্ন ছেলের সাথে মোবাইলে কথা বলতেন। এটা নিয়ে কয়েকবার তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। গত ২৫ অক্টোবরেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর রাত পৌনে ২টায় সুমিকে প্রথমে রশি দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন রাজু। পরে শরীর থেকে মাথা আলাদা করে ফেলা হয়। লাশ গুম করতে বস্তায় ঢুকিয়ে হালিশহর থানার ছোটপুল ইসলাম মিয়া ব্রিকফিল্ডের কাছে নালায় ফেলে দেন। আর মাথা ডবলমুরিং থানার বেপারীপাড়ায় পইট্টা দীঘির পশ্চিম পাড় কবরস্থানের দক্ষিণ পাশে ঝোপের মধ্যে ফেলে দেন তিনি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাজু জানিয়েছেন, হত্যা এবং লাশ গুম করতে রাজুকে সহযোগিতা করেন প্রতিবেশী আব্দুল জলিল ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী।