২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শিশুটিকে মোমবাতির ছ্যাকা দিয়ে খিলখিল করে হাসতো অভিনেত্রী শাহানা

অপরাধ
ছ্যাকা দিলে শিশু প্রিয়াংকার চিৎকারে খিলখিল করে হাসতো শাহানা আক্তার শাহেনী। - ছবি : নয়া দিগন্ত

শরীরে গরম পানি কিংবা তেল জাতীয় কিছু ঢেলে ঝলসে দেয়া হতো। সেই সাথে মোমবাতির ছ্যাকা দিলে শিশু প্রিয়াংকার চিৎকারে খিলখিল করে হাসতো শাহানা আক্তার শাহেনী।

এটি কোন নাটক-সিনেমার কাহিনী নয়, বর্বর এ ঘটনাটি ঘটেছে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের গজারিয়া কান্দি গ্রামে। বাংলা চলচ্চিত্রে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়কারী শাহেনীর এমন বাস্তব ঘটনা নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওইদিন দুপুরে শর্শদী ইউনিয়নের গজারিয়াকান্দি এলাকার পাঠান বাড়ির সংলগ্ন একটি সড়কে ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে কাঁদতে দেখে তাকে বাড়ি নিয়ে যান প্রতিবেশী জোহরা আক্তার। পরে স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের পরামর্শে তাকে আধুনিক ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করায় তারা।

মেয়েটি তার নাম প্রিয়াংকা ও মায়ের নাম শাহিনী শুধু এ তথ্য দিতে পেরেছে।

বর্তমানে শিশুটি সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। কোথায় কিভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ওই শিশু সে তথ্য জানা যায়নি।

এদিকে পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে শাহানা আক্তারকে আটক করে।

প্রতিবেশী জোহরা বেগম জানান, প্রিয়ংকার বাবা-মা নেই। শাহানা তাকে পালক মেয়ে বললেও তাকে দিয়ে ঘরের কাজকর্ম করাতেন। কারণে-অকারণে শিশুটির ওপর নির্যাতন চালাতেন। কয়েকদিন আগে শাহানা ফেনীর বাড়িতে আসেন, প্রিয়াংকাও তার সাথে আসে। সোমবার রাতে কোনো এক সময় শিশুটির ওপর শাহানা নির্যাতন চালান। মঙ্গলবার দুপুরে শাহানার বাড়ি থেকে ক্রমাগত কান্নার শব্দ আসতে থাকায় স্বামীকে নিয়ে তিনি ওই বাসায় যান। সেখান থেকে প্রিয়াংকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

প্রিয়াংকার বরাত দিয়ে জোহরা বলেন, সোমবার রাতে লাঠি দিয়ে পেটানোর পর একপর্যায়ে শাহানা শিশুটির শরীরে গরম পানি বা তেল জাতীয় কিছু ঢেলে ঝলসে দেয়। পরে তাকে ঘরে আটকে রেখে বেরিয়ে যায়।

ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. নাজমুল হাসান বলেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। শরীরের বিভিন্ন জায়গা ঝলসে যাওয়ায় ওর কিডনি ঝুঁকিতে রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেয়া প্রয়োজন।

সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে চিকিৎসা ও আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।

পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার গৃহকত্রী শাহানাকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।

আরো পড়ুন :
গৃহকর্মী বৃষ্টির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন
শাহাদাত হোসেন ফেনী, ০৩ অক্টোবর ২০১৮
ফেনীর শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে মেডিস্ক্যান হাসপাতালের পেছনের একটি বাসায় কিশোরী গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্ত্রী লাভলী আক্তারকে সোমবার রাতে আটক করেছে পুলিশ। নির্যাতিত মেয়েটি এখন ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত রমজানের পর থেকে কিশোরী বৃষ্টি ইতালি ভবনের ওই বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয়। সে পরশুরাম উপজেলার ধনিকুণ্ডা গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। গৃহকর্ত্রীর অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে মেয়েটি সোমবার সকালে পালিয়ে যায়। এক ব্যক্তির সহায়তায় বিকেলে শহরের মেডিনোভা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এলে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। মেয়েটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন। খবর পেয়ে পুলিশ বৃষ্টিকে ওই হাসপাতাল থেকে নিয়ে যায়।

ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম জানান, মেয়েটিকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক গৃহকর্ত্রী লাভলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সে দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের জহির উদ্দিনের স্ত্রী। লিখিত অভিযোগ নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গৃহকর্মী রোকসানা নির্যাতন মামলায় সোনিয়া কারাগারে
ফরহাদ খান, নড়াইল ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮
নড়াইলের গৃহকর্মী শিশুকন্যা রোকসানা (১০) নির্যাতন মামলার আসামি গৃহকর্ত্রী সোনিয়া খাতুনের জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে জামিন না মঞ্জুর করে সোনিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন লোহাগড়া আমলী আদালতের বিচারক জাহিদ হাসান।

জানা যায়, প্রায় ৮ মাস আগে ঢাকার ওয়ারি এলাকার ইলিয়াস হোসেন পলাশ নামের এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয় লোহাগড়া উপজেলার বাহিরপাড়া গ্রামের দিনমজুর রাসেল শেখের শিশুকন্যা রোকসানা। পলাশের স্ত্রী সোনিয়া ও তার ভাই ইব্রাহিম শিশুটির ওপর নির্মম নির্যাতন করে। রোকসানাকে প্রথমে ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতাল এবং পরে নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।

ভুক্তভোগী শিশুটির মা রতনা বেগম জানান, গত জানুয়ারিতে প্রতিবেশি সালেহা বেগমের মাধ্যমে রোকসানাকে ঢাকার ওয়ারিতে পলাশের বাসায় পাঠানো হয়। পলাশদের বাসা থেকে গত ১৭ আগস্ট রতনাকে জানানো হয়, রোকসানা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। রোকসানার মা ঢাকায় গিয়ে মেয়েকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় দেখতে পান। ঢাকা থেকে এনে ১৯ আগস্ট রোকসানাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোকসানার কঙ্কালের মতো শরীর দেখে চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ বিস্ময় প্রকাশ করে ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন।

নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মশিউর রহমান বাবু বলেন, রোকসানার শরীর জুড়ে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন এবং পোড়া দাগ রয়েছে। এছাড়া হাড় ভেঙ্গে গেছে। শিশুটির অবস্থা আশংকাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৪ আগস্ট রোকসানাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এদিকে রোকসানার বাবা বাদী হয়ে গৃহকর্ত্রী সোনিয়াসহ চারজনকে আসামী করে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার বিচার চেয়ে এলাকাবাসীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ নড়াইল ও ঢাকায় মানববন্ধন করেছেন।

নোয়াখালীতে কনস্টেবলের বাসায় গৃহকর্মী কিশোরীকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন
নোয়াখালী সংবাদদাতা, ০৭ জুলাই ২০১৮
নোয়াখালীতে পুলিশ কনস্টেবল কর্তৃক গৃহকর্মী কলিকে দফায় দফায় হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনার জেরে গত বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। মাইজদী শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের পশ্চিমে খন্দকার পাড়ায় সাবেক শিল্প ব্যাংকের কর্মকর্তা এ কে এম গোলাম মোস্তফার বাসার ভাড়াটিয়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কনস্টেবল রিনা আক্তার তার বাসার একটি কক্ষে গৃহকর্মী কলি (১৩) কে দফায় দফায় হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে আহত করেন।

এ ঘটনার প্রতিবেশীরা থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নির্যাতনের সত্যতা পেয়ে নারী পুলিশ কনস্টেবল রিনা আক্তারকে ও আহত গৃহকর্মী কলিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল কলিকে চিকিৎসা না করে মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলার তার গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। জানা গেছে, নারী পুলিশ কনস্টেবল রিনা আক্তারের বাড়ি মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলায়। তার স্বামীর বাড়ি কুমিল্লায়। তিনি অজ্ঞাত পুলিশের স্ত্রী। রিনা তার গ্রামের বাড়ি থেকে এক বছর আগে জনৈক দিনমজুরের মেয়ে কলিকে বাসায় গৃহপরিচালিকার কাজে নিয়ে আসেন। কিন্তু খুটিনাটি বিষয়ে ছুতা ধরে কলিকে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করতেন।

সহকারী পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ) সার্কেল মো: শাহজাহান শেখ বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে সুধারাম থানায় কথা বলুন। সুধারাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, মেয়েটি কাজের মেয়ে নয় তার আত্মীয়। এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এলে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল