১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নবজাতকসহ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়লেন মা, অতঃপর যা হলো 

নবজাতকসহ ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়লেন মা, অতঃপর যা হলো  - সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালের ছাদ থেকে নবজাতক ছেলে সন্তানসহ লাফিয়ে পড়ে সীমা আক্তার (২৫) নামে এক মা আত্মহত্যা করেছে।

শুক্রবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৯ টার দিকে পৌর শহরের পুরাতন জেলরোড এলাকার ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও স্পেলাাইজড হাসপাতালের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে সিমা। তবে সিমা পাশ্ববর্তী লাইফ কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। নিহত সীমা সদর উপজেলার ঘাটিয়ার গ্রামের প্রবাসী মনির মিয়ার স্ত্রী। তবে কি কারনে তিনি আত্মহত্যা করেছেন এই বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেন নি কেউ।

পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সীমার প্রসব বেদনা উঠলে গত ১৬ অক্টোবর পরিবারের লোকজন তাকে পৌর শহরের লাইফ কেয়ার নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। ঐদিনই সে ছেলে বাচ্চা প্রসব করলেও হাসপাতালের ৩০২ নং কক্ষে তার চিকিৎসা চলছিল। শুক্রবার সকালে তার মা রেহেনা বেগম হাসপাতালের রুম থেকে নাস্তা আনার জন্য নিচে বের হয়। পরে তিনি হাসপাতালের রুমে এসে দেখের তার মেয়ে নেই।

পরে অন্যন্য রোগীর স্বজনদের কাছে জানতে পারে তার মেয়ে হাসপাতালের ছাদ ওঠে পাশে একটি হাসপাতালের ছাদের ছয় তলা থেকে প্রথমে তার নবজাতককে ফেলে দিয়ে তিনি সিনজেও লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে। তবে কি কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন এই বিষয়ে কেউ সঠিক কারন জানাতে পারেন নি। এই ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ রেজাউল করিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা হতে পারে। তবে তার পার্শবর্তী রোগীরা জানায় রাতে তার স্বামীর সাথে ফোনে কথাকাটি হয়েছে। এরই জের ধরে এই ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিষয় যা-ই হোক তা খতিয়ে দেখা হবে। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আরো পড়ুন : হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় : সঙ্কটে নবজাতক
শাহাদাত হোসেন, ফেনী ১৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৯:৩৭
ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যুর নিয়ে তোলপাড় চলছে। কর্তৃপক্ষ দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির আশ্বাস দিলে প্রায় চার ঘন্টা পর বুধবার মধ্যরাতে ওই হাসপাতাল থেকে প্রসূতির লাশ গ্রহণ করে নেন তার স্বজনেরা। নবজাতক শিশুটিও সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।

প্রসূতির স্বজন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ফেনী শহরের ট্রাংক রোড়ের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী বিবি আয়েশা (২২) ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নিলুফা ইয়াছমিনের পরামর্শ অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি হন। বেলা আড়াইটার দিকে ডা. নিলুফার তত্ত্বাবধানে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে প্রসূতির একটি ছেলে সন্তান জন্ম হয়।

প্রসূতির মামি ফেরদৌস আরা জানান, নবজাতক শিশুটির অবস্থার অবনতি দেখে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে শহরের আরেকটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। অপর দিকে প্রসূতির শারীরিক অবস্থারও উন্নতি না দেখে বারবার স্বজনরা কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জানালেও তারা তেমন কর্ণপাত করেননি। অপারেশনের পর ডা.নিলুফাও তাকে দেখতে আসেননি। এমতাবস্থায় বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিবি আয়েশা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

খবর পেয়ে পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মী ও স্বজনরা হাসপাতালে ভিড় জমাতে থাকেন। তাদের সামনে নিহতের ঝা মনি বেগম অভিযোগ করেন, চিকিৎসা সেবায় অবহেলায় বিবি আয়েশার মৃত্যু হয়েছে। বার বার জানানো হলেও কতৃপক্ষ কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাননি। কর্তব্যরত চিকিৎসকরাও প্রসূতির প্রকৃত অবস্থা স্বজনদের জানাননি।

একপর্যায়ে বিপুল সংখ্যক বহিরাগত হাসপাতালে অবস্থান নিয়ে রোগীর শোকাহত স্বজনদের এ ব্যাপারে “বাড়াবাড়ি” না করতে হুমকি ধমকি দেয়। ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এডভোকেট আক্রামুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক সুশেন চন্দ্র শীল এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। দফায় দফায় বৈঠক শেষে রাত ১২টার দিকে নিহতের লাশ স্বজনদের বাড়ি নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে শহরতলীর ফতেহপুরে নিজবাড়ির সামনে জানাযা শেষে তার দাফন হয়।

নিহতের বড় ভাই ফয়েজ আহমদ জানান, আয়েশার ৫ বছর বয়সী শিশু সন্তান জানে না যে তার মা না ফেরার দেশে চলে গেছেন। নবজাতক শিশুটিকেও আশঙ্কাজনক অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে ফেনী থেকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে।

ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আশিকুল ইসলাম মহিম জানান, আয়েশার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তিনি ধারণা করেন, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ায় স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে।

এ বিষয়ে ডা. নিলুফা ইয়াছমিন জানান, প্রাইভেট রোগী হিসেবে তিনি ডায়াবেটিক হাসপাতালে এসে সিজার করেছেন। কার অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে সে ব্যাপারে ডায়াবেটিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সরকারি হাসপাতালের বদলে প্রাইভেট হাসপাতালে সিজার করানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমার প্রাইভেট রোগী ছিল।’


আরো সংবাদ



premium cement