কসবায় শালিস বৈঠকে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা
- ১১ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:২৭
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বুধবার রাতে পাওনা টাকা নিয়ে শালিস বৈঠকে মানিক মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত মানিক মিয়া কসবা উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ি গ্রামের আবদুল কাদির ওরফে কালা মিয়ার ছেলে। তিনি পাশ্ববর্তী আখাউড়া উপজেলার তন্তর বাজারের একজন মনোহরী ব্যবসায়ী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শি সূত্রে জানা যায়, কসবা উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের নিমবাড়ি গ্রামের মোতাহার হোসেন তাঁর ছোট ভাই মালয়েশিয়া প্রবাসী সানু মিয়ার স্ত্রী মাহমুদা বেগমের কাছ থেকে নতুন বাড়ি বানানোর জন্য তিন মাস আগে ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়। চলতি আশ্বিন মাসে এই টাকা পরিশোধ করার কথা থাকলেও টাকা পরিশোধ করেননি মোতাহার হোসেন। মাহমুদা বেগম এক সপ্তাহ আগে এই টাকা চাইতে গেলে মাহমুদা বেগমকে অশ্লিল ভাষায় গালিমন্দ করেন। এক পর্যায়ে মারধোর করতে আসেন। মাহমুদা বেগম নিমবাড়ি গ্রামের নোয়াব মিয়া, দেবর ইউসুফ, ভাতিজা মানিক মিয়া ও ইসমাইলকে ঘটনাটি অবগত করান। এ নিয়ে মোতাহারের বাড়িতে বুধবার রাতে এক শালিস বৈঠক বসেন। ওই বৈঠকে নোয়াব মিয়া, ইউসুফ মিয়া, মানিক মিয়া ও ইসমাইলসহ এলাকার বেশ কয়েকজন সাহেব সর্দার উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে মোতাহার হোসেন ও তার ছেলেরা ইসমাইল ও ইউসুফ মিয়ার উপর উত্তেজিত হয়ে মারধোর করতে আসেন। পরে মানিক মিয়া ফিরাতে গেলে মোতাহার হোসেন ও তার ছেলেরা তাকে লাইট দিয়ে পিটিয়ে ও শারিরীকভাবে গুরুতর আহত করেন। পরে তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। বৃহস্পতিবার সকালে সদর থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ওই হাসপাতালে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।
নিমবাড়ি গ্রামের মাহমুদা বেগম বলেন, মোতাহার হোসেন তাঁর স্বামীর বড় ভাই। বাড়ির কাজ করার জন্য তার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়। ওই টাকা ফেরত চাইলে তাকে অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে তাকে মারধোর করতে আসেন। বিষয়টি বাড়ির লোকজনকে জানালে তাঁর ভাসুরের ঘরের সামনে রাতে লোকজন এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার ভাসুর মোতাহার ও তার ছেলেরা মারধোর করতে শুরু করে। মানিক মিয়া ফিরাতে গেলে তাকে লাইট দিয়ে পিটিয়ে ও মারধোর করে খুন করেছে।
কসবা থানার ভারাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মালেক বলেন, মোতাহার হোসেন ৫০ হাজার টাকা ধার নেয়। ওই টাকাকে কেন্দ্র করে তার বাড়িতেই একটি শালিস বৈঠক হয়। বৈঠকে মোতাহার ও তার ছেলেরা মানিক মিয়াকে পিটানো ও মারধোর করার কারণেই তিনি মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সদর থানা পুলিশ হাসপাতাল থেকে নিহতের সুরতহাল করেছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। মোতাহার ও তার ছেলেদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।