‘ভোট দিয়ে কি হইবে? রেজাল্ট যা হবার তাই হবে’
- শরীফ চৌধুরী, চাঁদপুর
- ০৪ অক্টোবর ২০১৮, ১৪:৩৩
চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ৪টা পর্যন্ত একটানা ৫৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন চলে। এ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউপির মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭শত ৪৮জন । এতে পুরুষ ভোটার ৮৩ হাজার ৫শত ২ জন ও মহিলা ভোটার ৮৫ হাজার ২শত ৪৬ জন। কেন্দ্রের সংখ্যা ছিলো ৫৮টি।
চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। তারা হলেন- মো: কামরুজ্জামান মিন্টু (নৌকা), ওবায়দুল হক মজুমদার (ধানের শীষ) এবং আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী বাবুল আক্তার (আনারস) প্রতীক। চেয়ারম্যান পদে ৩২ হাজার ৮শ ৪৬ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগের সম্মানিত সদস্য মোঃ কামরুজ্জামান মিন্টু।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থী ধানের শীর্ষ প্রতীকের ওবায়েদুল হক মজুমদার পেয়েছেন ১৬ হাজার ৪ শ ৩৬ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ বাবুল আক্তার আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭ হাজার ৭ ভোট ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে কোন উৎসাহ উদ্দিপনা ছিলো না। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রই ছিল ফাঁকা। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। মাঝে মাঝে ২/১ জনকে দেখা গেছে ভোট দিতে। প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণাও ছিল না তেমন। অনেক কেন্দ্রে সরকার দলীয় সমর্থকরা এসে জাল ভোট দিতে দেখা গেছে। আবার আবার অনেক কেন্দ্রে ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে আগে থেকেই সিল দেয়া অবস্থায় দেখা গেছে।
এ ব্যাপরে ঐ বুথের পোলিং অফিসার জানান, ছাএলীগের ৫/৬ জন এসে জোর করে তার কাছ থেকে ব্যালট নিয়ে সিল দেয়। তবে সে ব্যালটে তার কোন স্বাক্ষর ছিল না। পরে সে সব ব্যালট বাতিল করা হয়।
ভোটাররা বলেছেন, একদিকে উপ-নির্বাচন, অপরদিকে বিগত দিনে ভোট প্রয়োগ করা হলেও তার মূল্যায়ন না হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভোট দিয়ে কি হইবে। রেজাল্টতো যা হইবার তাই হইবে। এখন আর মানুষের মধ্যে ভোট দেয়ার আগ্রহ নাই। তারা বলেন, ভোট দিমু এটা, রেজাল্ট হইবো আরেকটা।
শাহরাস্তি থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) শাহআলম জানান, পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি কোন অবস্থায় যেনো অবনতি না হয়। নির্বাচনী দায়িত্বে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, উপ নির্বাচন হওয়ায় কেন্দ্র গুলোতে ভোটারের উপস্থিতি কম।
শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো: ওবায়েদুর রহমান জানান, শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন মিয়াজী ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি নেন। এরপর নির্বাচন কমিশন শাহরাস্তি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।
তফসিল ঘোষণা হলেও দুই মাস আগে আইনগত জটিলতায় উপ-নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। পরবর্তীতে বুধবার সেই নির্বাচনের দিন ধার্য্য করা হয়। তিনি আরো জানান, ২০১৯ সালের ২০ মে এ পরিষদের মেয়াদ পূর্ণ হবে।
আরো পড়ুন: জাল ভোট ঠেকাতে ইসির পদক্ষেপ চান আরিফুল
নিজস্ব প্রতিবেদক, ১০ আগস্ট ২০১৮
সিলেট সিটিতে স্থগিত হওয়া দুই কেন্দ্রে যেন জাল ভোট না পড়ে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সিইসির কাছে দাবি জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসারের ঘোষিত ফলে এগিয়ে থাকা বিএনপির মেয়রপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার সাথে সাাৎ করে ভোটের দিন মৃত ও প্রবাসীদের ভোট গণনায় না নেয়ার দাবি জানান তিনি। ৩০ জুলাইয়ের ভোটে দুই কেন্দ্রের জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল স্থগিত রয়েছে। সেই দুই কেন্দ্রে ভোট হবে শনিবার।
গতকাল সিইসির সাথে দেখা করে বের হয়ে সাংবাদিকদের আরিফুল হক চৌধুরীর বলেন, সিলেটে যেসব ভোটার মৃত্যুবরণ করেছেন এবং প্রবাসে আছেন তাদের নামের তালিকাটা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে দিয়েছি। নামসহ এ তালিকা দেয়া হয়েছে। আমার তাদের (ইসির) প্রতি অনুরোধ থাকল মৃত এবং প্রবাসীদের ভোটগুলো যেন কাস্ট না হয়।
আরিফুল জানান, তার দাবির বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন সিইসি। তিন বলেন, এমনিতেও আমি আনেক ভোটে এগিয়ে আছি। সিইসি আমাকে বলেছেন, এটা তারা দেখবেন। এখন তারা দেখছেন। সার্বিকভাবে সিলেটের নির্বাচন নিয়ে আরিফুল হক বলেন, এগুলো বলে লাভ নেই, আমার মনে হয় লাইভ হলে ভালো হতো। আপনারা এগুলো জনগণকে দেখান না।
সিলেট সিটির ভোট নিয়ে সিইসিকে কী জানানো হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফুল হক বলেন, বলার জায়গায় সব বলেছি। আমি এখন আপনাদেরকে লাইভ (সরাসরি প্রচার) ছাড়া কিছু বলতে চাই না। লাইভ হলে আপনারা কাট করতে পারবেন না। আর না হলে আসল কথাটা জনগণ জানল না। নানা অভিযোগের পরও এগিয়ে থাকার বিষয়ে আরিফুল বলেন, আমি প্রত্যেকটা মিডিয়ার সামনে একই কথা বলেছি, সুষ্ঠু নিরপে নির্বাচন হলে আমি এক লাখের উপরে ভোট পাবো। কারণ জনগণের প্রতি আমার কনফিডেন্স আছে। আমি সে কনফিডেন্স নিয়েই কথা বলেছি। তার প্রমাণও পেয়েছেন। সিলেট সিটি নির্বাচনের আসল চিত্র জনগণ দেখার সুযোগ পায়নি। তার পরও আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমি এখনও এগিয়ে আছি।
গত ৩০ জুলাই রাজশাহী ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাথে সিলেট সিটিতে ভোটগ্রহণ করা হয়। অনিয়মের কারণে দু’টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করে ইসি। সিলেটের রিটার্নিং অফিসার ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টির যে ফলাফল ঘোষণা করেন, তাতে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ৪ হাজার ৬২৬ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের বদর উদ্দীন আহমদ কামরানের চেয়ে এগিয়ে আছেন। সিলেটের গত মেয়াদের মেয়র আরিফুল ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৩ ভোট।
আর সাবেক মেয়র কামরান নৌকা প্রতীকে ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট পেয়েছেন। স্থগিত থাকা গাজী বোরহান উদ্দিন মাদ্রাসা (১১৬ নম্বর কেন্দ্র) ও হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৩৪ নম্বর কেন্দ্র) কেন্দ্রে মোট ভোট আছে ৪৭৮৭টি। অর্থাৎ দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধানের চেয়ে ১৬১টি ভোট বেশি রয়েছে স্থগিত কেন্দ্র দুটিতে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা