২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাকিবের ইউটার্ন!

ক্রিকেট
নিজের ফিটনেস নিয়ে সাকিব আল হাসানের আত্মবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। - ছবি: সংগৃহীত

নিজের ফিটনেস নিয়ে সাকিব আল হাসানের আত্মবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। দুদিন আগে একটি ইংরেজি দৈনিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের ফিটনেস নিয়ে সাকিব যে মন্তব্য করেন এতে বিসিবি তাকে ধরে নিচ্ছিল ‘আনফিট’ হিসেবেই। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ পরিস্থিতি থাকলেও রাতে সাকিবের এক ই-মেইলে মেলে তার ‘ইউটার্ন’।

ওই দৈনিকটির সাথে কথোপকথনে সাকিব তার মাত্র ২০-৩০ ভাগ ফিটনেসের কথা জানিয়েছিলেন। তাই প্রশ্ন উঠেছিল এই ফিটনেস নিয়ে তিনি এশিয়া কাপে ব্যাটিং-বোলিং করবেন কীভাবে!

সূত্র জানিয়েছে, বিসিবিকে পাঠানো ই-মেইলে সাকিব দাবি করেছেন, নিজের ফিটনেস নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও ব্যাটিং-বোলিং করতে পারবেন না, এমন কথা তিনি বলেননি। এমনকি সাক্ষাৎকারটিকেও বলেছেন ‘হালকা কথোপকথন’।

বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সাকিবের ই-মেইলের বিষয়ে একটি দৈনিককে বলেছেন, ‘সাকিব আমাদের জানিয়েছেন, তিনি ওভাবে কথাগুলো বলেননি। তার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। দলের আগেই তিনি দুবাই পৌঁছে যাবেন।’

সাকিবের ফিটনেসের কথা ভেবে অবশ্য এর আগেই এশিয়া কাপের ১৫ সদস্যের দলের সঙ্গে ১৬তম সদস্য হিসেবে যোগ করা হয় মুমিনুল হককে। অর্থাৎ সাকিব দলের সাথে যাচ্ছেন, থাকবেন মুমিনুলও। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানকে উদ্ধৃত করে দুপুরে মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসই জানান সেটি। বলেন, ‘সে (সাকিব) যদি এশিয়া কাপে যেতে চায়, আমরা বাধা দেব না। কিন্তু ২০-৩০ ভাগ ফিট মানে সে খেলার মতো অবস্থায় নেই, আনফিট। তার খেলা উচিত হবে না। দলের সঙ্গে তাই ১৬তম সদস্য হিসেবে মুমিনুল হককে পাঠানো হচ্ছে।’

সাকিবের ফিটনেস-সংক্রান্ত আলোচনায় বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল বিসিবি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কী করবে না করবে, তা নিয়ে হয়ে পড়েছিল কিছুটা বিভ্রান্তও। জালাল ইউনুসের কথায়ও বোঝা গেছে তা, ‘আমেরিকা যাওয়ার আগেও সাকিব বলেনি তার হাতে ব্যথা, খেলতে পারবে না। ২০-৩০ ভাগ ফিট হলে আগে তা বোর্ডকে বলা উচিত ছিল। ও ঠিক কাজ করেনি। আমাদের একটা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।’

কোচ স্টিভ রোডস অবশ্য মনে করছেন, সাকিবের কথাটাই ছিল ভুল, ‘আমি বিশ্বাস করি না সে মাত্র ২০-৩০ ভাগ ফিট। আমার মনে হয় ও এর চেয়েও অনেক বেশি ফিট।’ কোচের এমন ভাবনার পেছনে কাজ করছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে সাকিবের পারফরম্যান্স। এই চোট নিয়েই তো জুলাই-আগস্টের সফরে দারুণ খেলে এলেন সাকিব! দলের সঙ্গে তাঁর অনুশীলন না করাতেও কোনো সমস্যা দেখছেন না কোচ।

অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও সাকিবের ফিটনেস মূল্যায়ন করছেন সর্বশেষ সিরিজের পারফরম্যান্স দিয়ে, ‘আপনি যদি সাকিবের পারফরম্যান্স (ওয়েস্ট ইন্ডিজে) দেখেন, তাহলে বলতে হবে আমাদের জয়ের জন্য সে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছে। আমার কাছে মনে হয় ও অতটুকু সুস্থ থাকলেই সেটা দলের জন্য যথেষ্ট।’

তবে এশিয়া কাপে খেলা বা না খেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা সাকিবকেই নিতে হবে মনে করেন ওয়ানডে অধিনায়ক, ‘সিদ্ধান্তটা সাকিবের। এখানে কারো হাত নেই। সিদ্ধান্ত নেয়ার পর অজুহাতের কোনো জায়গা থাকার কথা না। সে যখন খেলবে, তখন শতভাগ দিয়েই খেলবে।’

আরো পড়ুন :
রাজনীতিতে আসা নিয়ে যা বললেন সাকিব
নিউইয়র্ক থেকে এনা, ১৮ জুন ২০১৮
বিশ্বের সেরা অল রাউন্ডার এবং বাংলাদেশের জাতীয় দলের অধিনায়ক নিউইয়র্কে এক ঈদ আড্ডা অনুষ্ঠানে বলেছেন, আমেরিকা এখন আমার সেকেন্ড হোম। যে কারণে মাঝে মধ্যে আসা হয়। গত বছরও এসেছিলাম আপনাদের সাথে সময় কাটিয়েছি। এবারও এলাম। আমার খুব ভালো লাগছে। শো টাইম মিউজিক এন্ড প্লে আয়োজিত ঈদ আড্ডা ইউথ সাকিব আল হাসান অনুষ্ঠানটি গত ১৭ জুন সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের বেলাজিনো অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শো টাইম মিউজিকের প্রেসিডেন্ট আলমগীর খান আলম শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

সাংবাদিক শামীম আল আমিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন বিশিষ্ট রিয়েলেটর মঈনুল ইসলাম, পিপল এন টেকের প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিফ, কাদের মিয়া ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মিয়া, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম আজিজ, এনওয়াই ইন্স্যুরেন্সের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, রিয়েলেটর খায়রুল ইসলাম সবুজ, কামাল ভুইয়া, কাওরান বাজারের ইমরান কে ভুলু, হাজী এনাম, রিয়েলেটর আনোয়ার হোসেন, রাজনীতিবিদ হাজি এনাম, গোলাম এম হায়দার মুকুট, নাসরিন কে আহমেদ, হাসান জিলানী. ডা. বর্নালি হাসান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সাকিব আল হাসান প্রথমে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এ ছাড়াও তিনি সাংবাদিক ও সুধীজনদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সাকিব আল হাসান তার বক্তব্যে সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমেরিকা এখন আমার সেকেন্ড হোম। যে কারণে মাঝে মধ্যে আসা হয়। গত বছরও এসেছিলাম আপনাদের সাথে সময় কাটিয়েছি। এবারও এলাম। আমার খুব ভালো লাগছে। আমি এবার ঈদ করেছি অরল্যান্ডোতে। বাংলাদেশের

ক্রিকেট সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ভালো করছে আবার মাঝে মধ্যে খারাপও করছে। ভালো করলে প্রশংসা করবে, আর খারাপ করলে সমালোচনা করবে- এটাই স্বাভাবিক। আমি সমালোচনাকে অনুপ্রেরণা হিসাবে গ্রহণ করি। আপনারা সবাই যদি সমর্থন করেন তাহলে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আমরা অনেক দূর নিয়ে যেতে পারবো। আপনারা জানেন আগামী বছর বিশ্বকাপ ক্রিকেট। সেই বিশ্বকাপে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে ভালো করার।

সম্প্রতি আফগানিস্তানের সাথে হারার ব্যাপারে তিনি বলেন, সত্যি আমরা খারাপ করেছি। তবে এটাও সত্য টি টুয়ান্টি পরমেটে ওরা আমাদের চেয়ে র‌্যাঙ্কি- এ উপরে।

রাজনীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এখন রাজনীতি নিয়ে ভাবছি না। এখন আমি ক্রিকেট নিয়ে ভাবছি। ভবিষ্যতই বলে দেবে আমি কী করব। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ভাবিনি ক্রিকেটার হবো। ছোট বেলায় ক্রিকেটের প্রতি আমার ফোকাস ছিল না। প্রতি বছর আমার স্বপ্ন পরির্তন হতো। কখনো মনে করতাম ডাক্তার হবো, আবার ভাবতাম ইঞ্জিনিয়ার হবো, আবার মনে করতাম ফুটবলার হবো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটার হয়ে গেলাম।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে স্পন্সরদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন সাকিব আল হাসান এবং কৃষ্ণাতিথির সঙ্গীতের মাধ্যমে আড্ডা শেষ হয়।


আরো সংবাদ



premium cement