২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গৃহবধূ হত্যার রহস্য উদঘাটন

গৃহবধূ হত্যার রহস্য উদঘাটন - ছবি : সংগৃহীত

মানিকছড়িতে গৃহবধূ খুনের পর পর রহস্য উদঘাটনে পুলিশের তৎপরতায় ৯ দিনেই সাফলতার মুখ দেখেছে। ঘাতক স্বামী মো. বেলাল হোসেন নিজেই স্ত্রীকে হত্যা করেছেন বলে ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে।
এসেছে। মাত্র ৯ দিনেই হত্যার রহস্য উদঘাটনেঘটনায় নিহতের স্বামী মো. বেলাল হোসেনকে (২৬) এজাহারভুক্ত আসামী দেখিয়ে মামলা দায়ের করেছেন নিহতের পিতা মো. নেজাম। ঘাতক মো. বেলাল হোসেনকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং শ্বশুর মো. মমতাজ উদ্দীন ও শাশুড়ি শিরিনা আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ি উপজেলার নামার তিনটহরী গ্রামের মো. মমতাজ উদ্দীনের ছেলে মো. বেলাল হোসেন (২৬) বিগত ৫ বছর পূর্বে চট্টগ্রামে মো. নেজামের মেয়ে সালমা আক্তারের (২২) সাথে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করেন। ওদের সংসারে দেড় বছরের একটি শিশুপুত্র রয়েছে। সম্প্রতি বেলাল হোসেন ইয়াবা সেবন ও পাচারের কাজে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে একাধিকবার ঝগড়া হয়। এর পাশাপাশি কিছু দিন আগে মো. বেলাল হোসেন শ্বশুরালয়ে গেলে সেখানে তাকে নির্যাতনও করা হয়। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্য বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে গত রমজানের পর বেলাল স্ত্রীকে নিয়ে পৃথক হয়ে বসবাস শুরু করেন।

৩১ জুলাই দিবাগত রাত (১ আগস্ট) আনুমানিক ২.৩০টার দিকে তাদের বাড়িতে চিৎকার শুনতে পেয়ে বেলালের পিতা ও ছোট ভাই সাগর হোসেন সেখানে ছুটে যান। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন যে বেলাল হোসেন এবং তার স্ত্রী সালমা আক্তার (২২) রক্তাক্তাবস্থায় উঠানে পড়ে ছটপট করছেস। পরে তারা আহত দু’জনকে উদ্ধার করে মানিকছড়ি হাসপাতালে এসে ভর্তি করান। চিকিৎসক চিকিৎসা শুরু করতে না করতেই স্ত্রী সালমা আক্তার (২২) মৃত্যুবরণ করেন। আহত বেলাল হোসেনকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনার পর পর মানিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রশীদ বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেন এবং ওই দিনই নিহতের পিতা মো. নেজাম মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য স্বামী মো. বেলাল হোসেনকে এজাহার ভুক্ত আসামি দেখিয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ ঘাতক স্বামী মো. বেলাল হোসেনকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং শ্বশুর মো. মমতাজ উদ্দীন ও শাশুড়ি শিরিনা আক্তারকে আটক করেন। মামলা নং ১, তারিখ ০১.০৮.১৮ খ্রি. ধারা ৩০২।

অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ রশীদের নিদের্শনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুল্লাহ আল মাসুদ গত ৯ দিনে ব্যাপক তদন্তসহ আসামিদের রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘাতক স্বামী মো. বেলাল হোসেন গত ১০ আগস্ট খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক প্রদান করেন।

ঘাতক মো. বেলাল হোসেন জানান, তাকে শ্বশুরালয়ে নির্যাতন এবং পুলিশে দেয়ার ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্ত্রীকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ঘটনার রাত আনুমানিক আড়াইটায় ঘুমিয়ে থাকা স্ত্রীকে প্রথমে পেটে ছুরিকাঘাত করেন। স্ত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় পালাতে চেষ্টা করলে ঘাতক বেলাল দৌড়ে গিয়ে উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাত এবং একপর্যায়ে গলা কেটে তাকে হত্যা করেন। ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ঘাতক বেলাল নিজের গলায় ছুরিকাঘাত করেন এবং চিৎকার শুরু করেন! চিৎকার শুনে নিহতের শ্বশুর, দেবর, শাশুড়িসহ লোকজন ছুটে আসেন।

আরো পড়ুন :

৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা : আটক ১
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার পৌরসভার চৌড়া নয়াবাড়ী গ্রামে পাঁচ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। 
এজাহার সূত্রে জানা যায়, চৌড়া নয়াবাড়ী গ্রামের আব্দুল্লাহ ওরফে ফালাইন্নার ৫ বছর বয়সী কন্যা জোনাকী স্থানীয় চৌড়া নয়াবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীর ছাত্রী। গত ৭ আগষ্ট দুুপুরে বিদ্যালয় থেকে বাড়ী ফিরে প্রতিবেশী জনির কন্যা মিথিলার (৬) সাথে খেলা করছিল। এসময় ৪ সন্তানের জনক প্রতিবেশী কালাই চন্দ্র সূত্রধর (৫৫) শিশু দু’টিকে লেবু দেওয়ার কথা বলে তার ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। কালাই নিজে বিবস্ত্র হয়ে পরে জোনাকীকে বিবস্ত্র করে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করলে মিথিলা ভয় পেয়ে ঘর থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে কালাই ঘটনা কাউকে না বলার জন্য হুমকি দিয়ে জোনাকীকে ছেড়ে দেয়। 

জোনাকির বাবা আব্দুল্লাহ জানায়, আমার কন্যার উপর নির্যাতনের বিষয়টি স্ত্রী-কন্যার কাছে জানতে পেরে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানাই। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে একটি প্রভাবশালী চক্র তা ধামাচাপা দিতে রাতের আধারে আমার বাড়ীতে এসে থানায় মামলা না করতে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। পরে আমি স্থানীয়দের সহযোগীতায় থানায় গেলে সেকেন্ড অফিসার এসআই মনিরুজ্জামান আমার কন্যার জবানবন্দি শুনে একটি লিখিত এজাহার দায়েরকরতে বলেন। পরে এজাহার দায়ের করলে রাতেই পুলিশ আসামীকে গ্রেফতার করে।

ঘটনার স্বাক্ষী মিথিলা জানায়, আমি ও জোনাকী লতাদের বাড়ী খেলা করার সময় কালাই আমাদের লেবু দেওয়ার কথা বলে তার ঘরে নিয়ে যায়। পরে কালাই নিজে ল্যাংটা হয়ে ও জোনাকীকে ল্যাংটা করে মুখ চেপে ধরে খারাপ কাজ করার সময় আমি ভয় পেয়ে দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাই। পরে বাড়ী গিয়ে মায়ের কাছে সব কিছু বলে দেই।
মিথিলার মা প্রমিলা বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আমার মেয়ে জানায় কালাই তাদের দু’জনকে লেবু দেওয়ার কথা বলে ঘরে নিয়ে যায়। জোনাকীর মুখ চেপে ধরে খারাপ কাজ করার সময় আমার মেয়ে ভয় পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে আসে।
এ বিষয়ে এসআই আবুল হাশেম জানান, শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement