২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারো হাঁটুপানি

উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আবারো হাঁটুপানি - ছবি : নয়া দিগন্ত

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রাতভর থেমে থেমে বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও জোয়ারের পানিতে উখিয়ার উপকূলীয় এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল আবারো তলিয়ে গেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হাঁটুপানিতে সীমাহীন কষ্টে রয়েছেন লাখ লাখ রোহিঙ্গারা। বৃহস্পতিবার ৪১.৬ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ ফরমান আলীর সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় ৯৮ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ৫ দিন ধরে উখিয়াতে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরণের ভারী বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। ভারী বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি এলাকাসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। পালংখালী শফিউল্লাহ কাটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ৪ রোহিঙ্গা গুরুতর আহত হয়েছে।আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে এমএসএফ হাসপাতালে ভতি করা হয়েছে। জানা যায়, ১৩ জুন সকাল ১১ টার দিকে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের শফিউল্লাহ কাটা নামক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। পাহাড় ধসের ঘটনায় আহতরা হলেন ডি-২ ব্লকের বাসিন্দা আলী আজগরের স্ত্রী মরিয়ম খাতুন (৪৫), মোহাম্মদ ইব্রাহিমের স্ত্রী সমুদা খাতুন, মোহাম্মদ সাকের আলমের স্ত্রী রোকেয়া (২৫) ও তার ৩ বছরের শিশু উম্মে হাবিবা।

ডি ২ ব্লকের ক্যাম্পের মাঝি জয়নাল আবেদিন জানান, পাহাড়ের পাদদেশে থাকা দু'টি রোহিঙ্গা পরিবারের উপর বড় একটি পাহাড়ের অংশ ধসে পড়ে ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছে। হ্যাড মাঝি নুরুল কবির জানান, সকাল ১১ টার দিকে পাহাড়টি ধসে পড়ে ৪ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, যদি টানা বৃষ্টি না থামে তাহলে আরো পাহাড় ধসে পড়তে পারে। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স ও এনজিও কমীরা দ্রুত এসে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে।

এদিকে কক্সবাজারে ঈদের বাজার করতে যাওয়া শামীম বলেন, উখিয়া থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে গত বুধবার ছেইন্দা নামক স্থানে আটকা পড়ি। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর ঈদ বাজার করতে কক্সবাজারে যাওয়া হলো না। উখিয়াসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। অনেকের বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। ভুগান্তির শেষ নেই ঈদ কেনা-কাটা করতে যাওয়া মানুষের।

মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, গত ৫ দিন ধরে প্রতি রাতে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। সকালে উঠে দেখি রাস্তায় পানি। বৃষ্টি হলেই সড়কে জমে যায় হাঁটুপানি। তখন দুর্ভোগের শেষ থাকে না। পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, কক্সবাজারে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করছে কয়েক লাখ মানুষ। পাহাড় ধসে গত পাঁচ বছরে নিহত হয়েছে ২০০ জনের বেশি। আহত ৫ শতাধিক। বর্ষা মৌসুমে প্রশাসন তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিলেও হয় না স্থায়ী পুনর্বাসন। বাধ্য হয়ে আবার একই ঝুঁকি নিয়ে বসবাস।


আরো সংবাদ



premium cement