২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

যেভাবে গ্রেফতার করা হলো ‌'পারুল ভাবীকে'

পারুল ভাবী - সংগৃহীত

পারুল বেগম প্রকাশ ‘ভাবী’। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, সিএমপি ও র্যাবের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক কারবারি। ২০০৬ সালে বাংলা মদ (ছোলাই মদ), গাঁজা বিক্রি করত মাদকের আখড়া বরিশাল কলোনির ফারুক-ইউসুফ গ্র“পের নারীসদস্য হিসেবে। এখন চট্টগ্রামে ইয়াবা, হেরোইন পাচারের অন্যতম শীর্ষ কারবারি। চট্টগ্রামে মাদক বাণিজ্যের পুরো নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে পারুল বর্তমানে কোটিপতি। একযুগ ধরেই ৪০ নারী ও ৩০ শিশু-কিশোরকে ব্যবহার করে মাদকব্যবসার নিয়ন্ত্রণে ছিল এ নারী মাদক কারবারি। তার রয়েছে বাড়ি, গাড়ি, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স এবং সম্পত্তি। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সদরঘাট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে পারুল ও তার সহযোগী জহুরা বেগমকে (৫৬) পুলিশ গ্রেফতার করে।

সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) অলক বিশ্বাস বলেন, পারুল বেগম বরিশাল কলোনির মাদক বিক্রেতা ও মাদকসেবীদের কাছে ‘পারুল আপা’ ও ‘ভাবী’ নামে পরিচিত। ১২ বছর ধরে সে মাদকের ব্যবসায় করে আসলেও এই প্রথম পারুল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে।

সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নেজাম উদ্দিন নয়া দিগন্তকে জানান, বরিশাল কলোনি ও মালি কলোনিতে মাদক বেচাকেনা ও সেবনের যেসব ঘুপচিঘর (স্থানীয় ভাষায় গিরা) আছে, তার মধ্যে একটি গিরা পারুলের। তা পারুলের গিরা নামে পরিচিত।
পুলিশের এক প্রেস বার্তায় জানানো হয়, বরিশাল কলোনির এক সময়ের নিয়ন্ত্রক ফারুক-ইউসুফ গ্র“পের নারীসদস্য ছিল পারুল। গত বছরের ২০ অক্টোবর ফারুক র্যাবের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হওয়ার পর বরিশাল কলোনির নিয়ন্ত্রণ চলে আসে ইউসুফ-ছালামতের কাছে। পারুল তখন সেই গ্র“পের হয়ে কাজ করে। গত ১৭ মে রাতে ইউসুফ-সালামত সিন্ডিকেটের দু’জন সদস্য হাবিবুর রহমান ওরফে মোটা হাবিব (৫২) এবং মো: মোশাররফ (৩২) র্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে মারা যায়। মাদকের আখড়া নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ফারুকের ভাই মো: শুক্কুরের হাতে। পারুল তখন শুক্কুরের সঙ্গে ভিড়ে যায়।

১৯ মে সদরঘাট থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে তাদের সিন্ডিকেটের তিন সদস্য গ্রেফতার হলে স্পট ছেড়ে শুক্কুরও গাঁ ঢাকা দেয়। সর্বশেষ ২৩ মে সদরঘাট ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ যৌথভাবে মাদক স্পটের ৩০টি ঘুপচিঘর উচ্ছেদ করে দিলে এ স্পটে একদিন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে মাদক বেচাকেনা। গত বৃহস্পতিবার রাতে পারুল ল্যাঙ্গা লোকমানের কলোনিতে সহযোগীদের নিয়ে মজুদ মাদক অন্যত্র সরিয়ে নিতে গেলে খবর পেয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। বিপুল মাদকদ্রব্যসহ সেখানে পারুল গ্রেফতার হয়।

সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) অলক বিশ্বাস দাবি করেন, পারুলের অধীনে ৪০ নারী মাদক বিক্রেতা আছে। আরো ২০ থেকে ২৫ কিশোর আছে, যাদের মাদক বহনে কাজে লাগায় পারুল। তাদের দৈনিক বেতন ১০০ টাকা।


র‌্যাব ও পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান
সিলেট ব্যুরো

মাদকের বিরুদ্ধে সারা দেশের মতো সিলেটেও জোরেশোরে অভিযান চলছে। গত এক সপ্তাহে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৯৩ জন মাদক বিক্রেতা ও মাদকসেবীকে আটক করেছে র্যাব ও পুলিশ।

র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯, সিপিসি-১ ও সিলেট ক্যাম্পের একটি বিশেষ অভিযাত্রিক দল গত বৃহস্পতিবার রাতে এএসপি নাহিদ হাসানের নেতৃত্বে সিলেট নগরীর পাঠানটুলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিদেশী মদসহ তিন পেশাদার মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতাররা হচ্ছে কোম্পানীগঞ্জের মহিষখেড় গ্রামের মো: সফিক মিয়া (৩৯), গোয়াইনঘাট উপজেলার আঙ্গারজুর গ্রামের ইলিয়াছ (৩৪) এবং সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার শাহপুরের লালা মিয়া (২৮)। তাদের কাছ থেকে ৪৩ বোতল বিদেশী মদ ও একটি সিএনজি উদ্ধার করে র্যাব। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা। উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য ও গ্রেফতারকৃত আসামিদের জালালাবাদ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় নগরীর চালিবন্দর কাষ্টঘর পয়েন্টে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ইকবাল চৌধুরী (৩২) নামে এক মাদক বিক্রেতাকে ৩২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করা হয়।

জানা যায়, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জি এম হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ইয়াবাসহ ইকবাল চৌধুরীকে আটক করে। ইকবাল চৌধুরী সিলেটের গোলাপগঞ্জের নোয়াই গ্রামের শফিকুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে। সে অন্য মাদক বিক্রেতাদের সহযোগিতায় শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ইয়াবা ট্যাবলেট সংগ্রহ করে মাদকসেবীদের কাছে খুচরা বিক্রি করত।
বৃহস্পতিবার রাতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৯, সদর কোম্পানির (সিলেট ক্যাম্প) একটি অভিযাত্রিক দল সিনিয়র এএসপি মাঈন উদ্দিন চৌধুরী এবং এএসপি মো: আফজাল হোসেনসহ সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ওই থানার পূর্ব মাদারখাল ভুইয়ার বাজার এলাকায় মো: আব্দুল খালেকের মুদি দোকানের সামনে রাস্তার ওপর ২৮৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বিল্লাল আহম্মেদ (৩৪) নামে এক মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়। সে জকিগঞ্জের বালাউট গ্রামের বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার নগরীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১৯ মাদকসেবীকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন র্যাব-৯ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মো: মনির হোসেন, ফয়সল মিয়া (৩০) ও রিপন মিয়াকে (১৮) ছয় মাস, মোক্তার হোসেন (১৮), মো: জীবন (১৮), মীর মো: শাহীন মিয়া (৩০), মনির হোসেন (৩২), মো: নাসির (৪০), মো: মফিজ মোল্লা (৩৮), মো: আব্দুল নুর (১৮) ও সাজেদুল ইসলামকে (৪৫) দুই মাস, মো: বাদশা মিয়া (৩৪), জতন (৩৯), লোকমান হেকিম (৩৫), মো: রেহান মিয়া (৩০), মো: জাকির হোসেন (২৮), আব্দুল্লাহ (২৬) ও কালামকে (২২) এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এ ছাড়া গত বুধবার মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০ পিস ইয়াবা ও চার পুরিয়া গাঁজা উদ্ধার করে ধ্বংস করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খৃষ্টফার হিমেল রিছিল তাদের কারাদণ্ড দেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে মো: আব্দুল বাশিত (৩৫), মো: জাহাঙ্গীর (৩৫), মো: রুবেল (২৫), মো: শরীফকে (২৫) এক মাস, জুয়েল ইসলাম (১৯), কাজল মিয়া (২৮), মো: পিন্টু খানকে (৩১) তিন মাস, বদরুল ইসলাম (২২) মারুফ আহমেদ (৩৯), দুলাল আহম্মদকে (২৪) ১৫ দিন, মোস্তফা আলী (৩৮) ও আকবর আলীকে (৪৮) ১০ দিন এবং বাচ্চু মিয়াকে (৫২) দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।  

 


আরো সংবাদ



premium cement
আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান

সকল