২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সপ্তাহজুড়ে দুই বাজারে ৪ শতাংশ সূচক বৃদ্ধি

মূলধন বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা গড় লেনদেন ৯০০ কোটি টাকা
-

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোকে বিশেষ ফান্ড গঠনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে তার সুবাতাস বইতে শুরু করেছে শেয়ারবাজারে। আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহটিও উত্থানে পার করেছে পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারে সব সূচক বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে টাকার পরিমাণে লেনদেন এবং বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর। এ সময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন ৭৪ শতাংশ আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন ৫৯ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া ডিএসইতে সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ আর সিএসইতে বেড়েছে ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪ হাজার ৫২১ কোটি ৭৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৪৪ টাকার লেনদেন হয়েছে; যা আগের সপ্তাহ থেকে ১ হাজার ৯২৫ কোটি ২৪ লাখ ২৪ হাজার ৯৮৫ টাকা বা ৭৪ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৫৯৬ কোটি ৫০ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ টাকার। ডিএসইতে গত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৯০৪ কোটি ৩৪ লাখ ৯৪ হাজার ৯৮৮ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৫১৯ কোটি ৩০ লাখ ৯ হাজার ৯৯১ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৩৮৫ কোটি ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৯৯৭ টাকা বেশি হয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন ১২ হাজার ১৯৬ কোটি ৪০ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৬৬ কোটি ১৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা। আর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়ে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬২ কোটি ৫৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬৮ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৩৩ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪৪ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ২১ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৫৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং সিডিএসইটি সূচক ৩৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৯০, ১৫৯৩ ও ৯৫২ পয়েন্টে। ডিএসইতে মোট ৩৫৮টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৪২টি বা ৬৮ শতাংশের, কমেছে ৯১টির বা ২৫ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির বা ৭ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৮৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এ ছাড়া ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘বি’ গ্রুপের অবদান ১০ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের অবদান ১ দশমিক ৬২ শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাফার্জহোলসিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৩১ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৯০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খুলনা পাওয়ারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ১০১ কোটি ৭১ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সামিট পাওয়ার। লেনদেনে এরপর রয়েছেÑ ওরিয়ন ফার্মা, গ্রামীণফোন, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যাল, ওরিয়ন ইনফিউশন ও এডিএন টেলিকম।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহজুড়ে ২৪৫ কোটি ৪৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯২০ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১৫৪ কোটি ৭২ হাজার ৫৫ টাকার। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৯১ কোটি ৪২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৬৫ টাকা বা ৫৯ শতাশ বেড়েছে। গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬২২ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫২৫ পয়েন্টে। এ ছাড়া সিএসসিএক্স ৩৮০ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৮১৭ পয়েন্ট বা ৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ৪৬ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং সিএসআই ৪৩ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮ হাজার ৮১২ পয়েন্ট, ১২ হাজার ৭৭৫ পয়েন্ট, ১০৫৩ পয়েন্ট এবং ৯৪৬ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের হাতবদল হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৩৩টির বা ৭৫ শতাংশ, দর কমেছে ৬০টির বা ১৯ শতাংশ এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টির বা ৬ শতাংশ।
পিই রেশিও : গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়েছে। গত সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই ছিল ১২ দশমিক ০৬ পয়েন্টে; যা সপ্তাহ শেষে ১২ দশমিক ৫৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও ০ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭ দশমিক ৪৩ পয়েন্টে। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ২০ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতের ১৭ দশমিক ৭২ পয়েন্টে, ওষুধ ও রসায়ন খাতের ১৬ দশমিক ৯০ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতের ১৮ দশমিক ০৬ পয়েন্টে, বীমা খাতের ১৩ দশমিক ১৯ পয়েন্টে, বিবিধ খাতের ২৪ দশমিক ৪২ পয়েন্টে, খাদ্য খাতের ১৪ দশমিক ৫৪ পয়েন্টে, চামড়া খাতের ২২ দশমিক ০৬ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতের ৩৯ দশমিক ৯০ পয়েন্টে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১১ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে, আর্থিক খাতের ৪৮ দশমিক ৫৯ পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের ৩২ দশমিক ৮৭ পয়েন্টে, পেপার খাতের ৫১ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে, টেলিযোগাযোগ খাতের ১১ দশমিক ৮০ পয়েন্টে, সেবা ও আবাসন খাতের ১৩ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে, সিরামিক খাতের ২৭ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে এবং পাট খাতের পিই ৪২ দশমিক ২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement