২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টানা চার দিন পর কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

-

টানা চার দিন পতনের পর গতকাল সামান্য উত্থানে শেষ হয়েছে শেয়ারবাজারের লেনদেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ কার্যদিবসে ১৯৬ পয়েন্ট কমেছে, বিপরীতে গতকাল মাত্র ৫ পয়েন্ট বেড়েছে। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪ কার্যদিবসে ৬১১ পয়েন্ট কমেছে, বিপরীতে বেড়েছে মাত্র ৩৬ পয়েন্ট।
সূত্র জানায়, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫১২ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট ও ডিএসই-৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০১৭ ও ১৫৫২ পয়েন্টে। ডিএসইতে গতকাল টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ২৯৪ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট, যা আগের দিন থেকে ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা কম। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩০৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকার। ডিএসইতে গতকাল ৩৫১টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৩টির বা ৩৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ১৬৫টির বা ৪৭ শতাংশের এবং ৬৩টি বা ১৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের। এ দিন কোম্পানিটির আট কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা খুলনা পাওয়ারের সাত কোটি ৬৬ লাখ টাকার এবং সাত কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে উঠে আসে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। ডিএসইর টপটেন লেনদেনে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে : এস কে ট্রিমস, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বিকন ফার্মা, জিলবাংলা সুগার, সিনোবাংলা এবং নিউ লাইন ক্লোথিংস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এ দিন ৩৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭২০ পয়েন্টে। এ দিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ২৩২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৯১টির, কমেছে ১০৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৬টির দর। গতকাল সিএসইতে ২৩ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ১৪টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির সাড়ে ১৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৪৪ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪৯টি শেয়ার ৪৪ বার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ১৯ কোটি ৫৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ পাঁচ কোটি ৫০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে ট্রাস্ট ব্যাংকের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চার কোটি ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকার ব্র্যাক ব্যাংকের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ চার কোটি সাত লাখ ১০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে বিবিএস কেবলসের। এ ছাড়া এসিআইয়ের ৩১ লাখ ৭২ হাজার টাকার, ব্যাংক এশিয়ার এক কোটি ছয় লাখ ২৭ হাজার টাকার, ফাইন ফুডসের সাত লাখ ১৭ হাজার টাকার, গ্রামীণফোনের ৫৮ লাখ ১১ হাজার টাকার, ন্যাশনাল ফিড মিলসের পাঁচ লাখ এক হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকার, রেকিট বেনকিজারের ২২ লাখ ৭০ হাজার টাকার, এস কে ট্রিমসের ৩৩ লাখ ২৮ হাজার টাকার, স্কয়ার ফার্মার ৩৮ লাখ টাকার, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের এক কোটি ৭৬ লাখ ৬০ হাজার টাকার এবং জাহিন স্পিনিংয়ের ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
গতকাল ব্যাংক খাতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৭ শতাংশের শেয়ার দর বেড়েছে। এ দিন ৩০টি ব্যাংক লেনদেনে অংশ নিয়েছে। ব্যাংকগুলোর মধ্যে ১৪টির বা ৪৭ শতাংশের শেয়ার দর বেড়েছে। শেয়ার দর কমেছে সাতটির বা ২৭ শতাংশের এবং শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে আটটির বা ২৬ শতাংশ ব্যাংকের। গতকাল শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ০.৬০ টাকা বেড়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ০.৪০ টাকা বেড়েছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ০.৩০ টাকা করে বেড়েছে ডাচ্-বাংলা ইসলামী ব্যাংকের। এ ছাড়া ট্রাস্ট ও ঢাকা ব্যাংকের ০.২০ টাকা করে এবং এক্সিম, আইসিবি ইসলামিক, মার্কেন্টাইল, প্রিমিয়ার, পূবালী, রূপালী, সাউথইস্ট ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার দর ০.১০ টাকা করে বেড়েছে।
গতকাল আটটি ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে। শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ০.৭০ টাকা কমেছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের। এ ছাড়া ব্র্যাক, সিটি ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ০.২০ টাকা করে এবং ব্যাংক এশিয়া, আইএফআইসি, ওয়ান ও উত্তরা ব্যাংকের শেয়ার দর ০.১০ টাকা করে কমেছে। লেনদেন শেষে শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে আটটি ব্যাংকের। ব্যাংক আটটি হলো : ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, স্যোসাল ইসলামী, প্রাইম, এনসিসি, ন্যাশনাল, যমুনা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ও এবি ব্যাংক।
রিং শাইনের ইপিএস ৪৬ পয়সা : সম্প্রতি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পাওয়া কোম্পানি রিং শাইন টেক্সটাইল লিমিটেড প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর-১৯) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার-প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪৬ পয়সা। আইপিওর পরবর্তী শেয়ার হিসাবে এই ইপিএস হয়েছে। একই সময় কোম্পানিটির শেয়ার-প্রতি সম্পদ মূল্য বা এনএভি হয়েছে ২০ টাকা ১৭ পয়সা।
এ দিকে ৩০ সেপ্টেম্বর শেষে কোম্পানিটির কর পরিশোধের পর মুনাফা হয়েছে ১৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। শেয়ার-প্রতি আয় হয়েছে ৭০ পয়সা (আইপিওর আগের হিসাবে)। আগের বছর একই সময় কোম্পানির মুনাফা ছিল ১৪ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং ইপিএস ছিল ৫০ পয়সা।
আজিজ পাইপের লভ্যাংশ অনুমোদন : পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি আজিজ পাইপসের ৩০ জুন-১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদন করেছেন শেয়ারহোল্ডাররা। গতকাল বুধবার কোম্পানিটির ৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এ অনুমোদন দেয়া হয়। কোম্পানি সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য ৭ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ।
সর্বশেষ অর্থবছরে (২০১৮-২০১৯) কোম্পানিটির শেয়ার-প্রতি আয় (ইপিএস) করেছে ৮০ পয়সা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার-প্রতি সম্পদমূল্য দায় হয়েছে ১৬ টাকা ৭৪ পয়সা। এজিএমে সভাপতিত্ব করেন কোম্পানির চেয়ারম্যান রিফাত হাসান। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেনÑ কোম্পানির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আবসার। এ ছাড়া কোম্পানির পরিচালক ও স্বতন্ত্র পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন এবং কোম্পানির সিএফও, সেক্রেটারি এবং শেয়ারহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
লভ্যাংশ পাঠিয়েছে কেডিএস এক্সেসরিজ : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কেডিএস এক্সেসরিজ সমাপ্ত হিসাব বছরের লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঠিয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, কোম্পানিটি সিডিবিএলের মাধ্যমে বোনাস শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে পাঠিয়েছে। আর নগদ লভ্যাংশ বিইএফটিএন নেটওয়ার্কসের মাধ্যমে ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া যাদের লভ্যাংশ বিইএফটিএন সিস্টেমসের মাধ্যমে পাঠানো যায়নি, তাদের লভ্যাংশ ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্টের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরে কেডিএস এক্সেসরিজ ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর মধ্যে ১০ শতাংশ নগদ ও ৫ শতাংশ বোনাস।॥


আরো সংবাদ



premium cement