১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ডিএসইর লেনদেন ফের ৪০০ কোটির ঘরে

মূল্যবৃদ্ধিতে মৌলভিত্তিহীন কোম্পানির প্রাধান্য
-

টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সূচক ধরে রেখেছে ঢাকা শেয়ারবাজার। গতকাল দিনভর সূচকের বেশ ওঠানামা থাকলেও দিনশেষে সবগুলো সূচকই উন্নতি ধরে রাখে। আর এ নিয়ে টানা দুই দিন সূচক বাড়ল বাজারটির। আর এর সুবাদে বৃদ্ধি পায় লেনদেনও। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন আবার ৪০০ কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করল। সর্বশেষ গত ৩১ অক্টোবর ৪০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন নিষ্পত্তি করেছিল ঢাকা শেয়ারবাজার।
রোববারের মতো গতকালও লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সূচকের ব্যাপক ওঠানামা দেখা যায়। তবে বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি দিনের সূচকের উন্নতি টিকিয়ে রাখতে বড় ভূমিকা রাখে। দিনশেষে সবগুলো সূচকেরই আচরণ ছিল ইতিবাচক। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ দশমিক ৬২ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৪ হাজার ৭১৭ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি সোমবার দিনশেষে পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৭২২ দশমিক ০১ পয়েন্টে। ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ৯ দশমিক ৭৮ ও ১ দশমিক ০২ পয়েন্ট।
তবে দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সূচকের চিত্র ছিল ভিন্ন। এখানে প্রধান দু’টি সূচকের অবনতি ঘটে। সিএসই সার্বিক মূল্যসূচক ২৩ দশমিক ৩১ পয়েন্ট হারায়। সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে ১৩ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট। তবে বিশেষায়িত দু’টি সূচক সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ যথাক্রমে দশমিক ২৮ ও দশমিক ০৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়।
ডিএসই গতকাল ৪০৯ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিন অপেক্ষা ৪৬ কোটি টাকা বেশি। রোববার সিএসইর লেনদেন ছিল ৩৬৩ কোটি টাকা। সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে। সিএসই ২২ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে গতকাল। রোববার বাজারটির লেনদেন ছিল ১২ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টদের মতে, গতকালের বাজার আচরণ আবারো প্রমাণ করল পুঁজিবাজারে লেনদেন অনেকটা সূচকের আচরণের ওপরই নির্ভরশীল। সূচকের উন্নতির ধারাবাহিকতা বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণও বাড়িয়ে দেয়। আর টানা মন্দায় মুখ ফিরিয়ে নেন ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। এতে হ্রাস পায় লেনদেন।
এ দিকে রোববারের মতো গতকালও দুই পুঁজিবাজারে দুর্বল মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোকেই মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে জায়গা করে নিতে দেখা যায়। কয়েকটি বীমা কোম্পানি বাদ দিলে ডিএসইর মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় বেশির ভাগই ছিল দুর্বল কোম্পানি। কয়েকটি ‘বি’ ও ‘জেড’ শ্রেণীর কোম্পানিও এ তালিকায় উঠে আসে। এগুলোর মধ্যে ছিল তুং হাই টেক্সটাইলস, এমারেল্ড অয়েল, সাফকো স্পিনিং ও ফারইস্ট ফিন্যান্স। কোম্পানিগুলোর মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৯ শতাংশের বেশি। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মন্দা বাজারে দুর্বল কোম্পানিগুলো নিয়ে এক শ্রেণীর বিনিয়োগকারী অনৈতিক আচরণ করে থাকেন যা বাজারের শৃঙ্খলা নষ্ট করে।
গতকাল সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ঢাকা শেয়ারবাজারে ডিএসইএক্স সূচকটি ৪ হাজার ৭১৭ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে বেশ কয়বার ওঠানামার পর বেলা পৌনে ১২টার দিকে পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৭৩৮ পয়েন্টে। পরবর্তীতে ফের বিক্রয়চাপের মুখে পড়ে। বেলা দেড়টার দিকে সূচক নেমে আসে ৪ হাজার ৭২২ পয়েন্টে। দিনের বাকি সময় আবারো অস্থির আচরণ করে বাজার সূচক। দিনশেষে ৪ দশমিক ৬২ পয়েন্ট উন্নতিতে ৪ হাজার ৭২২ দশমিক ০১ পয়েন্টে স্থির হয় ডিএসই সূচক।
দুই পুঁজিবাজারের বেশির ভাগ খাতে গতকাল ছিল মিশ্র আচরণ। তবে বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় ছিল বেশির ভাগ কোম্পানি। এ তালিকায় ছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাতও। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৫১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৫৬টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১৩৫টি। অপরিবর্তিত ছিল ৫০টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রাম স্টকে লেনদেন হওয়া ২৩৭টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৯৬টির দাম বাড়ে, ১১১টির দাম কমে এবং ৩০টি সিকিউরিটিজের দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকালও লেনদেনের শীর্ষস্থানটি ন্যাশনাল টিউবসের দখলে ছিল। ১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ১০ লাখ ৯৪ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ১৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় ২ লাখ ২৬ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ওয়াটা কেমিক্যালস ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, ডাচ বাংলা ব্যাংক, স্টাইলক্র্যাফট, ন্যাশনাল পলিমার, ফরচুন স্যুজ, মুন্নু সিরামিকস ও স্কয়ার ফার্মা।


আরো সংবাদ



premium cement