২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিশ্র পুঁজিবাজার সূচক, লেনদেনে উন্নতি

-

সূচকের টানা উন্নতির পর সংশোধন ঘটেছে পুঁজিবাজারে। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচকের উন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়। মুনাফা তুলে নিতে গিয়ে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের বিক্রয়চাপের কারণেই এটা ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ এর আগে চার দিন দুই পুঁজিবাজার সূচকের কমবেশি উন্নতি ঘটে। সংশোধনের এ দিন ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেনের উন্নতি ঘটে। তবে উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগ দর হারায়।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচকটি ২ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ৪ হাজার ৭৮১ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি মঙ্গলবার দিনশেষে ৪ হাজার ৭৭৯ দশমিক ১৮ পয়েন্টে স্থির হয়। ডিএসই-৩০ সূচক হারায় দশমিক ০৩ শতাংশ। কিন্তু একই সময় ডিএসই শরিয়াহ সূচকের ৩ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট উন্নতি ঘটে। অপর দিকে দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূচকের সামান্য উন্নতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এখানে সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ১১ দশমিক ৫৮ ও ৭ দশমিক ৯৫। সিএসই শরিয়াহ সূচকে যোগ হয় ১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট।
সূচকের মিশ্র আচরণ সত্ত্বেও লেনদেন বেড়েছে ঢাকা শেয়ারবাজারে। ডিএসই গতকাল ৩৯২ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন অপেক্ষা ৮৬ কোটি টাকা বেশি। সোমবার বাজারটির লেনদেন ছিল ২৯৬ কোটি টাকা। তবে লেনদেন কমেছে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে। সিএসই গতকাল ৩০ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন ছিল ৩৪ কোটি টাকা।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, ধারাবাহিক মন্দা কাটিয়ে গত সপ্তাহের শেষ দিকে মূল্যবৃদ্ধির ধারায় ফিরে পুঁজিবাজার। গত চারটি কর্মদিবসে উভয় পুঁজিবাজারেই সূচকের উন্নতি ঘটে। ঢাকা শেয়ারবাজারে সূচক বাড়ে ১০০ পয়েন্টের বেশি। ফলে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মূল্যস্তর বৃদ্ধির সুযোগে তাদের মুনাফা তুলে নেয়ার প্রক্রিয়ায় ছিলেন। একে সৃষ্টি হয় বিক্রয়চাপ। তবে দীর্ঘ দিনের মন্দায় মূল্যস্তর যে পর্যায়ে নেমেছিল তাতে গতকাল বিক্রয়চাপ ছিল সহনীয়। এর ফলে ঢাকায় সূচক মিশ্র হলেও চট্টগ্রাম শেয়ারবাজার কমবেশি সূচকের উন্নতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়। তবে এ সময় বাজারগুলোর লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি দরপতনের শিকার হয়। তবে তারা মনে করেন, সংশোধন শেষে ফের ঊর্ধ্বমুখী হবে পুঁজিবাজার।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি টেক্সটাইলসহ বেশ কয়েকটি খাতেই বিক্রয়চাপ বেশি ছিল গতকাল। ফলে এ সব খাতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানিই দরপতনের শিকার হয়। অপর দিকে বীমা ও তথ্য প্রযুক্তি খাতে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে বেশির ভাগ কোম্পানির। এছাড়া বেশ কয়েকটি কোম্পানির রেকর্ড পরবর্তী মূল্যসমন্বয়ের দিন ছিল গতকাল, যা সূচকের অবনতিতে ভূমিকা রাখে। তবে গ্রামীণফোনের মতো বড় মূলধনী কোম্পানির পাশাপাশি বীমা খাতের মূল্যবৃদ্ধি সূচকের বড় অবনতি ঠেকায়। ঢাকা স্টকে লেনদেন হওয়া ৩৫৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১২৮টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১৯৪টি। অপরিবর্তিত ছিল ৩২টির দর। অপর দিকে, চট্টগ্রাম স্টকে লেনদেন হওয়া ২৫৪টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৯১টির দাম বাড়ে ১৩৬টির কমে এবং ২৭টি সিকিউরিটিজের দর অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল ন্যাশনাল টিউবস। ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় ৮ লাখ ২২ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় প্রকৌশল খাতের রাষ্ট্রায়ত্ব এ কোম্পানির। ১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় ১ লাখ ৮৫ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ওয়াটা কেমিক্যালস উঠে আসে দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, ন্যাশনাল পলিমার, ফরচুন স্যুজ, উত্তরা ব্যাংক, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি ও লংকা বাংলা ফিন্যান্স।
দিনের মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স। ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে কোম্পানিটির। উল্লেখযোগ্য মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে ইনটেক লিমিটেড ৯.৭২, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স ৮.০৭, ঝিল বাংলা সুগার মিলস ৭.১৬, পেনিনসুলা ৭.০৩, অ্যাপোলো ইস্পাত ৬.৪৭ ও সেন্ট্রাল ফার্মার ৬.৪৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। অপর দিকে দিনের সর্বোচ্চ দরপতন ঘটে বসুন্ধরা পেপার মিলসের। ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ দর হারায় কোম্পানিটি। কোম্পানিটি গতকাল সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করলে এ দরপতনের শিকার হয়।


আরো সংবাদ



premium cement