২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সূচকের উন্নতির মধ্যেও পুঁজিবাজারে দরপতন

পুঁজিবাজার থেকে ২৩৮ কোটি টাকা তুলবে ওমেরা

-

দিনশেষে সূচকের উন্নতি ঘটলেও দরপতনের শিকার হয়েছে লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগই। রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে দেশের দুই পুঁজিবাজারেই এ ঘটনা ঘটে। লেনদেন শুরুর পর প্রায় দেড় ঘণ্টা সূচকের ওঠানামার মধ্য দিয়ে পার করা বাজারগুলো মাঝামাঝি সময়ে এসে ঊর্ধ্বমুখী রূপ নেয়। তবে দিনশেষে সূচকের পুরো উন্নতি ধরে রাখতে পারেনি দুই বাজার। এ সময় উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া কোম্পানির ৫২ শতাংশ দরপতনের শিকার হয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ১১ দশমিক ০৯ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৪ হাজার ৭৭১ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি দিনশেষে পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৭৮২ দশমিক ০৯ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ৬ দশমিক ৯৩ ও ৫ দশমিক ১৭ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ৩৪ দশমিক ৯১ ও ২৩ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট। এখানে সিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে ১ দশমিক ৬২ পয়েন্ট।
সূচকের উন্নতি ঘটলেও গতকাল লেনদেন হ্রাস পায় ঢাকা শেয়ারবাজারে। ডিএসই গতকাল ৩১২ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন অপেক্ষা এক কোটি টাকা কম। গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর লেনদেন ছিল ৩১৩ কোটি টাকা। তবে লেনদেন বেড়েছে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে। এখানে ১৮ কোটি টাকা থেকে ৫১ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন। তবে এর মধ্যে এককভাবে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৩৫ কোটি টাকার শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে।
গ্রামীণফোনের পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতের মূল্যবৃদ্ধিই গতকাল দুই পুঁজিবাজার সূচককে এগিয়ে নেয়। অন্য খাতগুলোর ব্যাপক দরপতন ঘটলেও ব্যাংকিং খাতে প্রায় ৭০ শতাংশ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গতকাল। এ ছাড়া গ্রামীণফোনও হারানো দরের একটি অংশ ফিরে পায়। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৫২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১২৯টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১৮০টি, যা প্রায় ৫২ শতাংশ। অপর দিকে চট্টগ্রামে লেনদেন হওয়া ২৪৮টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ১০৪টির দাম বাড়ে, ১১৫টির কমে এবং ২৯টির অপরিবর্তিত থাকে।
এ দিকে ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ারবাজার থেকে ২৩৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা সংগ্রহ করবে ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড। এর মধ্যে ১৮৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে কোম্পানিটি ৩ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন এলপিজি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন অত্যাধুনিক মানের সমুদ্রগামী জাহাজ কিনবে। এ ছাড়া ঋণ পরিশোধে ব্যয় হবে ৪৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে গতকাল ২০ অক্টোবর রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত রোড শো অনুষ্ঠানে কোম্পানির উদ্যোক্তারা এ তথ্য জানান।
রোড শোতে ওমেরা পেট্রোলিয়ামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল হক আহমেদ জানান, ‘বর্তমানে ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ৬২.৪৯ শতাংশ শেয়ারের মালিক মবিল যমুনা বাংলাদেশ লিমিটেড। এ ছাড়া কোম্পানিটির অন্যান্য অংশীদারের মধ্যে আছে বি বি এনার্জি এশিয়া পিটিই লিমিটেড এবং সিঙ্গাপুর ও নেদারল্যান্ডের আর্থিক প্রতিষ্ঠান এফএমও।’
তিনি জানান, ‘দেশের এলপি গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় রেখে ২০১৫ সালে সম্পূর্ণ ইউরোপিয়ান প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি স্থাপনের মধ্য দিয়ে ওমেরা পেট্রোলিয়াম এলপিজি খাতে যাত্রা শুরু করে। এলপিজি আমদানি করে ওমেরা পাঁচটি ভিন্ন আকারে যথা ৫.৫, ১২, ২৫,৩৫ ও ৪৫ কেজি সিলিন্ডারে বোতলজাত করে গৃহস্থালী এবং বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য বাজারজাত করে থাকে। এ ছাড়াও শিল্পে ব্যবহারের জন্য বাল্ক আকারে এলপিজি বিক্রি করে ওমেরা।’
কোম্পানির সিইও আরো জানান, এলপিজি সংরক্ষণ ও ব্যবহারকারীদের নিকট বিতরণের জন্য ওমেরার রয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন অবকাঠামোগত সুবিধা। ওমেরার রয়েছে ৯,০৫০ মেট্রিক টন এলপিজি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচটি ট্যাংক। এ ছাড়াও মোট ১০০০ মেট্রিক টন ক্ষমতাসম্পন্ন তিনটি এলপিজি বহনকারী বার্জÑ যা অভ্যন্তরীণ নৌপথে এলপিজি পরিবহনে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি ওমেরার রয়েছে ৩২টি এলপিজি পরিবহনকারী রোড ট্যাংকার, যার প্রত্যেকটি ধারণক্ষমতা ১৭ মেট্রিক টন। প্রতিদিন এক শিফটে ৬০ হাজার সিলিন্ডার বোতলজাত করার সক্ষমতা রয়েছে ওমেরার। অনুষ্ঠানে ওমেরা পেট্রোলিয়ামের পরিচালক আজম জে চৌধুরী, তানজিল চৌধুরী, রিয়াজ আবু নাসের বাসান্তে, বাহাদিন মোহামেদ আবুল নাসের বাসান্তে, রিচার্ড ভারবোভে, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আকতার হোসেন সান্নামাত, কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement