২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মূল্যবৃদ্ধিতে বীমা ও দরপতনে বস্ত্র খাতের প্রাধান্য

সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার
-

ধারাবাহিক দরপতনের মধ্যে থাকা পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন বীমা খাতের বিনিয়োগকারীরা। অন্য খাতগুলোর ব্যাপক দরপতনের মধ্যেও এ খাতটিতে মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে দেখা যায় বেশির ভাগ কোম্পানির। ফলে দুই পুঁজিবাজারেই মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ দশে এ খাতের সুস্পষ্ট প্রাধান্য ছিল। অন্য দিকে দরপতনের দিক থেকে সবচেয়ে মন্দা খাত ছিল বস্ত্র। ৫৫টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত বাজারের সবচেয়ে বড় খাত এটি। দরপতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির ছয়টিই ছিল বস্ত্র খাতের। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের গত সপ্তাহের বাজার পর্যালোচনায় এ তথ্য জানা যায়।
গত সপ্তাহের মোট পাঁচ কর্মদিবসের চারটিতেই বাজার আচরণ ছিল নেতিবাচক। রোববার ও সোমবার ডিএসই সূচকের প্রায় ১০০ পয়েন্ট হারানো বাজারটিতে মঙ্গলবার হঠাৎ সূচকের বড় রকম উন্নতি ঘটে। বাজারে সৃষ্ট কিছু গুজবকে কেন্দ্র করে ঘটা সূচকের এ উত্থান একদিনও টেকেনি। সপ্তাহের বাকি দু’দিন আবার নেতিবাচক প্রবণতার শিকার ছিল ডিএসই। এ দুই দিনে ৫০ পয়েন্টের বেশি হারায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজারটি। সপ্তাহ শেষে ডিএসইএক্স সূচকটি ৩৯ দশমিক ২২ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ৪ হাজার ৮১০ দশমিক ২২ পয়েন্ট থেকে সপ্তাহ শুরু করা সূচকটি সপ্তাহান্তে নেমে আসে ৪ হাজার ৭৭১ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ হারায় যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৫২ ও ১৭ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি অবনতি ঘটে বাজারটির লেনদেনেরও। গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন রেকর্ড করা হয় ৩১২ কোটি ৭৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা, যা আগের সপ্তাহ অপেক্ষা ২ দশমিক ০২ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে বাজারটির গড় লেনদেন ছিল ৩১৯ কোটি ২১ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তবে এ সময় বাজারটির মোট লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। তবে দুর্গাপূজার সরকারি ছুটির কারণে আগের সপ্তাহে কর্মদিবস একটি কম থাকলেও গত সপ্তাহে কর্মদিবস ছিল পাঁচটি। ফলে আগের সপ্তাহের ১ হাজার ২৭৬ কোটি টাকার স্থলে গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয় ১ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহ অপেক্ষা ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেশি।
সমাপ্ত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে প্রকৌশল খাত। ডিএসইতে মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশ অবদান রয়েছে এই খাতে। লঙ্কা-বাংল সিকিউরিটিজ লিমিটেড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অন্য খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ-রসায়ন খাতে ১৬ শতাংশ, সাধারণ বীমা খাতে ১২ শতাংশ, জ্বালানি বিদ্যুৎ খাতে ৯ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ৮ শতাংশ, ব্যাংক খাতে ৭ শতাংশ, বিবিধ খাতে ৬ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন ও সিরামিক খাতে ৪ শতাংশ করে লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া খাদ্য, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ৩ শতাংশ, আইটি, জীবন বীমা ও সিমেন্ট খাতে ১ শতাংশ করে লেনদেন হয়েছে।
একই সূত্র অনুসারে বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে দর কমেছে ১৬ খাতে। অন্য দিকে মাত্র চার খাতে দর বেড়েছে। জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি দর কমেছে সিরামিক খাতে। এই খাতে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ দর কমেছে। সিমেন্ট খাতে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ দর কমেছে। অন্য খাতগুলোর মধ্যে প্রকৌশল খাতে ১.৯ শতাংশ, খাদ্য-আনুষঙ্গিক খাতে ১.১৭ শতাংশ, জ্বালানি খাতে ১.৮৯ শতাংশ, জীবন বীমা খাতে ১.৪১ শতাংশ, আইটি খাতে ৩.৯৯ শতাংশ, বিবিধ খাতে ১.৮৫ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ১.১২ শতাংশ, আর্থিক খাতে ১.৪৬ শতাংশ, কাগজ খাতে ১.০৮ শতাংশ, সেবা-আবাসন খাতে ২.৩৮ শতাংশ, ট্যানারি খাতে ১.৯৭ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন খাতে ৪.৬১ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ৪.৬৬ শতাংশ ও ভ্রমণ-অবকাশ খাতে ৩.৪৪ শতাংশ দর কমেছে।
অন্য দিকে দর বেড়েছে বাকি চার খাতে। সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে সাধারণ বীমা খাতে। এই খাতে ৪.৯৫ শতাংশ দর বেড়েছে। পাট খাতে ২.০৩ শতাংশ, ওষুধ খাতে ০.১৪ শতাংশ ও ব্যাংক খাতে ১.০৩ শতাংশ দর বেড়েছে।
আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষস্থানটি দখলে ছিল ন্যাশনাল টিউবের। ৮৬ কোটি ৫৩ লাখ ৮০ হাজর টাকায় ৪৫ লাখ ৯৭ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রকৌশল খাতের এ প্রতিষ্ঠানটির। ৫২ কোটি ৪৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকায় ৯৯ লাখ ২৯ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে আরেক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে স্কয়ার ফার্মা, ওয়াটা কেমিক্যালস, মুন্নু জুট স্টাফলারস, সামিট পাওয়ার, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, বিকন ফার্মা ও গ্রামীণফোন।

 


আরো সংবাদ



premium cement