১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তৃতীয় দিনেও পুঁজিবাজারে পতন ৭০ শতাংশ কোম্পানি শিকার

-

টানা তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে পুঁজিবাজারের দরপতন। দুর্গাপূজার ছুটির কারণে গতকাল ছিল চলতি সপ্তাহের তৃতীয় কর্মদিবস। তিন কর্মদিবসের তিনটিতেই পতন ঘটেছে পুঁজিবাজার সূচকের। এ ছাড়া প্রতিদিনই বেড়েছে পতনের মাত্রা। এ তিন দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) হারিয়েছে প্রধান সূচকটির ৭৫ পয়েন্টের বেশি। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) হারায় ২১৬ পয়েন্ট। এর আগে গত সপ্তাহের শেষ দুই কর্মদিবসে নামমাত্র উন্নতি ঘটে দুই পুঁজিবাজার সূচকের।
বুধবার লেনদেন শুরু হওয়ার আধঘণ্টার মাথায় বিক্রয়চাপের মুখে পড়ে দুই পুঁজিবাজার। দিনের বাকি সময় বাজার আচরণে আর খুব বেশি পরিবর্তন ঘটেনি। মাঝামাঝি সময়ে দু-একবার বিক্রয়চাপ সামলে বাজারগুলো ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেও তা সম্ভব হয়নি। দিনশেষে উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর প্রায় ৭০ শতাংশ দর হারায়।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৩২ দশমিক ০৫ পয়েন্ট হারায়। ৪ হাজার ৮৯৪ দশমিক ৩১ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি বুধবার দিনশেষে নেমে আসে ৪ হাজার ৮৬২ দশমিক ২৬ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি রেকর্ড করা হয় যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৫৭ ও ৫ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক ৭৯ দশমিক ১১ ও ৪৭ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট হ্রাস পায়। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ হারায় যথাক্রমে ৩ দশমিক ৪৮ ও ৪ দশমিক ১৩ পয়েন্ট।
সূচকের অবনতি ঘটলেও গতকাল লেনদেন বেড়েছে দুই পুঁজিবাজারে। ডিএসই গতকাল ৩২০ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন অপেক্ষা ১৯ কোটি টাকা বেশি। সোমবার ডিএসইর লেনদেন ছিল ৩০১ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে ১১ কোটি টাকা থেকে ১৬ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন। তবে গতকাল খুব বেশি ব্লক ট্রেডিংয়ের ঘটনা ছিল না। কিছু কিছু কোম্পানি বড় ধরনের দরপতনের শিকার হলে তাতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। পতনের বাজারে এটাকেই লেনদেন বৃদ্ধির কারণ মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বুধবার পুঁজিবাজারগুলোর লেনদেনের শুরুটা ভালো হলেও তা বেশিক্ষণ টেকেনি। ৪ হাজার ৮৯৪ দশমিক ৩১ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেলা ১১টায় ৪ হাজার ৯০৪ পয়েন্টে পৌঁছে। সূচকের এ অবস্থান থেকেই শুরু হয় বিক্রয়চাপ। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একবার চাপ সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা থাকলেও তা সফল হয়নি। লেনদেনের শেষ দুই ঘণ্টা এ চাপ অব্যাহত থাকলে দিনশেষে ৪ হাজার ৮৬২ দশমিক ২৫ পয়েন্টে স্থির হয় সূচকটি।
বরাবরের মতো ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বড় দরপতনই দিনের সূচকের বড় পতন ঘটায় গতকাল। তবে এর বাইরে অন্য খাতগুলোতেও ব্যাপক দরপতন ঘটে। বাদ যায়নি বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও। আবার বেশ কয়েকটি খাতে দরপতন ঘটে শতভাগ কোম্পানির। এগুলো ছিল সেবা, পাট, কাগজ, চামড়া ও বিনোদন। আর এভাবে উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া কোম্পানির প্রায় ৭০ শতাংশই ছিল দরপতনের তালিকায়। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৫২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৬৮টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ২৪১টি। অপরিবর্তিত ছিল ৪৩টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৫১টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৫৯টির দাম বাড়ে, ১৫৫টির কমে এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল নিয়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো লেনদেনের শীর্ষস্থানটি দখলে রাখে প্রকৌশল খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল টিউবস। ২৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ১২ লাখ ৪৩ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ২০ কোটি ৭১ লাখ টাকায় ৮ লাখ ৬১ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে স্কয়ার ফার্মা উঠে আসে দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে সামিট পাওয়ার, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, মুন্নু স্টাফলারস, সিলকো ফার্মা, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, ওয়াটা কেমিক্যালস, স্টাইলক্রাফট ও গ্রামীণফোন।


আরো সংবাদ



premium cement