১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিউচুয়াল ফান্ডে বোনাস লভ্যাংশ দেয়া যাবে না

পুঁজিবাজার সূচকের উন্নতি
-

দিনভর ওঠানামায় পার করলেও দিনশেষে সূচকের নামমাত্র উন্নতি ধরে রাখে দেশের পুঁজিবাজার। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচকের নামমাত্র উন্নতি ঘটে। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সূচকের উন্নতি ঘটল পুঁজিবাজারে। লেনদেনের বিভিন্নপর্যায়ে বিক্রয়চাপ কার্যকর থাকায় লেনদেনের পুরো সময়জুড়ে ছিল সূচকের ওঠানামা। এ সময় উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেন।
সাত দিন টানা পতনের পর গত মঙ্গলবার পুঁজিবাজার সূচক ঊর্ধ্বমুখী হয়। গতকালও দিনের শুরুতে এই ধারাবাহিকতা দেখা যায়। কিন্তু লেনদেন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যে শুরু হয় বিক্রয়চাপ। কিছুক্ষণের জন্য সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও পরক্ষণেই বিক্রয়চাপের মুখে সূচকের অবনতি ঘটতে দেখা যায়। এভাবে পুরো দিনই অস্থির আচরণ করে দুই পুঁজিবাজার সূচক। তবে দিনশেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রাখে। ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে দশমিক ৫৪ ও ১ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট।
দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসইএক্স সূচকের উন্নতি রেকর্ড করা হয় যথাক্রমে ২৮ দশমিক ১৩ ও ২২ দশমিক ১১ পয়েন্ট। সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ যথাক্রমে ২ দশমিক ২২ ও দশমিক ৯২ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়।
সূচকের উন্নতির এই ধারাবাহিকতা বাজারগুলোর লেনদেনেও প্রভাব ফেলে। বৃদ্ধি পায় দুই পুঁজিবাজারের লেনদেন। ডিএসই গতকাল ৩০৯ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন অপেক্ষা ৩৮ কোটি টাকা বেশি। মঙ্গলবার বাজারটির লেনদেন ছিল ২৭১ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে ১৬ কোটি টাকা থেকে ৩০ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন। তবে এখানে আইএফআইসি ব্যাংকের এককভাবে লেনদেন ছিল ১৪ কোটি টাকার।
এদিকে মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ হিসেবে রি-ইনভেস্টমেন্ট ইউনিট (আরআইইউ) পদ্ধতি বাতিল করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে এখন থেকে মেয়াদি ও বে-মেয়াদি উভয় ধরনের মিউচুয়াল ফান্ডকে নগদ লভ্যাংশ দিতে হবে।
গত মঙ্গলবার বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৬৯৩তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভাশেষে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা ২০০১-এর বিধি ৯(গ)-এ উল্লিখিত বে-মেয়াদি ফান্ডের উদ্যোক্তার লক-ইন এবং বিধি ৬৬-তে উল্লিখিত মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ বিতরণসংক্রান্ত নির্দেশনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এখন থেকে লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রে বোনাস হিসেবে বিবেচিত রি-ইনভেস্টমেন্ট ইউনিট (আরআইইউ) পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। ফলে বে-মেয়াদি এবং মেয়াদি উভয় ধরনের ফান্ডের ক্ষেত্রেই শুধু নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা যাবে।
তাছাড়া বে-মেয়াদি ফান্ডের ক্ষেত্রে মেয়াদি ফান্ডের মতো উদ্যোক্তার অংশ ফান্ড গঠনের তারিখ থেকে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হরে। আর এক বছর শেষে ফান্ডের অবসায়ন পর্যন্ত উদ্যোক্তাকে তার ধারণকৃত অংশের অন্তত ১০ শতাংশ সার্বক্ষণিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে মেয়াদি ও বে-মেয়াদি ফান্ডের ক্ষেত্রে যে ভিন্নতা ছিল সেটি দূর হবে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিনিয়োগকারীদের কাছে মিউচুয়াল ফান্ড অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি বিনিয়োগের মাধ্যম। তুলনামূলক কম ঝুঁকির কারণে নতুন বিনিয়োগকারী এবং অবসরপ্রাপ্তরা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অতীতে মিউচুয়াল ফান্ডে নগদ লভ্যাংশের প্রথা চালু থাকলেও ২০১১ সালের পর বিএসইসি লভ্যাংশ হিসেবে আরআইইউ পদ্ধতি চালু করে। এতে ফান্ডে বিনিয়োগকারীদের বড় অংশই এ খাতে বিনিয়োগে অনীহা দেখায়। তাই বেশ কিছু দিন থেকে এ পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্টেক হোল্ডাররা। এর পরিপ্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি আরআইইউ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
একই সভায় কমিশন ক্যাপিটেক পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ডের খসড়া প্রসপেক্টাসে অনুমোদন দিয়েছে। ক্যাপিটেক পপুলার লাইফ ইউনিট ফান্ড হলো একটি বে-মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড। এর প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ২৫ কোটি টাকা। ফান্ডটিতে উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। বাকি ২০ কোটি টাকা অন্যান্য বিনিয়োগকারীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই ২০ কোটি টাকা ইউনিট বিক্রির মাধ্যমে উত্তোলন করা হবে।
ফান্ডটির প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ধরা হয়েছে ১০ টাকা। এর সম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছে ক্যাপিটেক অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। এছাড়া ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান হিসেবে রয়েছে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।

 


আরো সংবাদ



premium cement