২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
রানার অটোমোবাইলসের ট্রেডিং শুরু

ব্যাংক দিয়ে সূচকের উন্নতি, ব্যাংকেই পতন

-

পুঁজিবাজার আবারো ধারাবাহিক পতনের শিকার হয়েছে। গতকাল নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিন সূচক হারাল দেশের দুই পুঁজিবাজার। এর আগে গত রোববার সূচকের বড় ধরনের উন্নতি ঘটলেও গত দু’দিনে তার পুরোটাই হারিয়ে বসে বাজারগুলো। সোমবারের মতো গতকালও লেনদেনের শুরু থেকে প্রচণ্ড বিক্রয়চাপের মধ্য দিয়ে পার করে বাজারগুলো। রোববার যে ব্যাংকিং খাতের মূল্যবৃদ্ধি দিয়ে সূচকের বড় উন্নতি ঘটে গত দু’দিনের একই খাতের ব্যাপক দরপতনেই সূচক হারাল বাজারগুলো।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৩৯ দশমিক ২৯ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ৫ হাজার ২৭৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি মঙ্গলবার দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ২৩৬ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে ১০ দশমিক ৫৮ ও ৩ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট। এর আগে সোমবার প্রধান সূচকটির প্রায় ৬০ পয়েন্ট হারায় ডিএসই। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচক ৯৫ দশমিক ০১ ও ৫৬ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট অবনতি ঘটে। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ হারায় ৬ দশমিক ৯১ ও ৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট। এ সময় উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগ দর হারায়।
সূচকের পাশাপাশি অবনতি ঘটে ডিএসইর লেনদেনে। দেশের প্রধান পুঁজিবাজারটি গতকাল ৩৫১ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিন অপেক্ষা ৩৬ কোটি টাকা কম। সোমবার বাজারটির লেনদেন ছিল ৩৮৭ কোটি টাকা। তবে লেনদেন বেড়েছে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে। এখানে ১০ কোটি টাকা থেকে ৩৬ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন।
এ দিকে বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করা রানার অটোমোবাইলস গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারেই লেনদেন শুরু করে। ঢাকায় ৯৭ দশমিক ৩০ টাকায় লেনদেন শুরু করে সর্বোচ্চ ১০৭ দশমিক ৮০ পর্যন্ত দর ওঠে। দিনের সর্বনি¤œ দর ছিল ৯২ টাকা। রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড বুকবিল্ডিং পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে বাজারে শেয়ার ছেড়ে ১০০ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি যোগ্য বিনিয়োগকারী তথা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৭৫ টাকা দরে ৮৩ লাখ ৩৩ হাজার ৩৩৩টি শেয়ার বিক্রি করেছে। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬৭ টাকা দরে বিক্রি করেছে ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ১৫টি শেয়ার। সে হিসেবে প্রথম দিনের লেনদেনে প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা মুনাফায় রয়েছে।
আইপিওর প্রসপেক্টাস অনুসারে, পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্য থেকে কোম্পানিটি ৬৩ কোটি টাকা ব্যয় করবে ব্যবসা সম্প্রসারণে, যার মধ্যে থাকবে ডিজাইন, গবেষণা ও মান উন্নয়ন ইত্যাদি। ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে ৩৩ কোটি টাকা।
গতকাল লেনদেনের শুরু থেকেই বিক্রয়চাপের মুখে ছিল পুঁজিবাজারগুলো। প্রথম দেড় ঘণ্টা বাজারের টানা পতন ঘটে। ঢাকা স্টকে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ হাজার ২৭৬ দশমিক ১৪৫ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে বেলা সাড়ে ১১টায় নেমে আসে ৫ হাজার ২২৩ পয়েন্টে। এ সময় সূচকের প্রায় ৫৩ পয়েন্ট হারায় ডিএসই। দিনের শেষভাগে হারানো সূচকের একটি অংশ ফিরে পেলে দিনশেষে ৫ হাজার ২৩৬ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে স্থির হয় সূচকটি।
দুই পুঁজিবাজারের প্রায় সব খাতেই দরপতন ঘটে গতকাল। কিন্তু সূচকের অবনতিতে ব্যাংকিং খাতের অবদানই ছিল বেশি। এ খাতের কয়েকটি কোম্পানির রেকর্ড পরবর্তী মূল্যসমন্বয় যেমন ছিল তেমনি স্বাভাবিক দরপতনের শিকারও ছিল কয়েকটি কোম্পানি, যা দিনের সূচকের বড় অবনতি ঘটায়। তা ছাড়া গতকাল ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বোনাস শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে আসায় এ ব্যাংকে প্রচণ্ড বিক্রয়চাপ তৈরি হয়। ৬ দশমিক ৯২ শতাংশ দর হারায় কোম্পানিটি। পাশাপাশি এক্সিম ও উত্তরা ব্যাংকের দরপতনের হার ছিল ৮ দশমিক ৮০ ও ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ। ব্যাংকগুলোর এ মূল্যসমন্বয় সূচকের অবনতিতে বড় ভূমিকা রাখে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে রানার অটোমোবাইলস। ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৩৫ লাখ ২২ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ১৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকায় ৩৭ লাখ ৩৬ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ফরচুন স্যুজ ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল এসকে ট্রিমস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, ব্র্যাক ব্যাংক, ডরিন পাওয়ার, ইস্টার্ন ক্যাবলস, ন্যাশনাল টিউবস, এস্ক্য্যোয়ার নিট কম্পোজিট ও বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

 


আরো সংবাদ



premium cement