২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সূচক ও লেনদেনের উন্নতি পুঁজিবাজারে

-

ঘুরে দাঁড়াতে যাচ্ছে পুঁজিবাজার। গতকাল সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচকের কমবেশি উন্নতি ঘটে। দিনের শুরুতে ক্রয়চাপের প্রাধান্য থাকায় সূচকের বড় ধরনের উন্নতির ইঙ্গিত দিলেও মাঝখানে বিক্রয়চাপ সক্রিয় হওয়ায় তা ধরে রাখতে পারেনি বাজারগুলো। তবে দিনশেষে উভয় বাজারই সূচকের উন্নতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়। এ সময় লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি বৃদ্ধি পায় বাজারগুলোর লেনদেনও।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ২৫ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৫ হাজার ২৪০ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি বৃহস্পতিবার দিনশেষে পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৬৬ দশমিক ১৭ পয়েন্ট। একই সময় ডিএসই শরিয়াহ সূচকটি ৩ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেলেও ৪ দশমিক ১৯ পয়েন্ট হারায় ডিএসই-৩০। এর আগে দু’দিনে প্রধান সূচকটির প্রায় ৮৪ পয়েন্ট হারায় ডিএসই।
দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবগুলো সূচকই ছিল ইতিবাচক। এখানে সিএসই সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে ১০২ দশমিক ৩৬ ও ৬১ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। বাজারটির দুই বিশেষায়িত সূচক সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে ৫ দশমিক ৮৮ ও ২ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট।
সূচকের ঘুরে দাঁড়ানোর প্রভাব ছিল বাজারগুলোর লেনদেনেও। ডিএসই গতকাল ৩৮২ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিন অপেক্ষা ৫০ কোটি টাকা বেশি। বুধবার ডিএসইর লেনদেন ছিল ৩৩২ কোটি টাকা। সিএসইতে ১৩ কোটি টাকা থেকে ১৮ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন।
বিনিয়োগকারীরা দিনের বাজার আচরণে সন্তোষ প্রকাশ করলেও তা টিকে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, সাম্প্রতিক বাজার প্রবণতায় বিভিন্ন সময় বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েও তা টিকে থাকেনি। বরং একদিন সূচকের উন্নতি ঘটলে পরদিন আরো পতনের মুখে পড়ে। তারা বাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে সরকারের নীতিনির্ধারকদের গঠনমূলক উদ্যোগের দাবি জানান। তা না করা গেলে বাজারে আস্থা ফিরবে না। আর বিনিয়োগকারীরা বাজারকে আস্থায় নিতে না পারলেও থামবে না দরপতন। আর নতুন করে বাজারে অংশগ্রহণও বাড়বে না।
গতকাল সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ডিএসইতে প্রধান সূচকটি ৫ হাজার ২৪০ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে মাত্র ১৫ মিনিটেই পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৭০ পয়েন্টে। এ পর্যায়ে সূচকের ৩০ পয়েন্ট উন্নতি রেকর্ড করা হয়। সূচকের এ অবস্থান থেকেই শুরু হয় বিক্রয়চাপ। পরবর্তী আধঘণ্টায় সূচকটি নেমে আসে ৫ হাজার ২৪৪ পয়েন্টে। তবে দ্রুতই এ চাপ সামলে ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজারটি। দুপুর সাড়ে ১২টায় সূচক ফের ৫ হাজার ২৬৮ পয়েন্টের ঘর অতিক্রম করে। এভাবে সূচকের ২৫ দশমিক ৮১ পয়েন্ট উন্নতিতে শেষ হয় লেনদেন।
বীমা ও চামড়া এ দুই খাত ছাড়া বাকি খাতগুলোতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গতকাল। ছোট কয়েকটি খাতে মূল্যবৃদ্ধি ঘটে শতভাগ কোম্পানির। ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানও হারানো দরের একটি অংশ ফিরে পায় গতকাল। তবে দরপতন ঘটে গ্রামীণ ফোনের মতো বড় মূলধনী কোম্পানির যা ডিএসইর বিশষায়িত ডিএসই-৩০ সূচকের পতন ঘটায়। ঢাকা স্টকে লেনদেন হওয়া ৩৪৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২০২টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১০২টি। অপরিবর্তিত ছিল ৪০টির দর। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টকে লেনদেন হওয়া ২৩৮টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ১৪৫টির দাম বাড়ে, ৭৩টির কমে এবং ২০টি সিকিউরিটিজের দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ফরচুন স্যুজ। ২২ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৫৮ লাখ ৬৫ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকায় ৭ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে মুন্নু সিরামিকস ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল ন্যাশনাল টিউবস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, ব্র্যাক ব্যাংক, ফাইন ফুড, ইউনাইটেড পাওয়ার, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ ও যমুনা ব্যাংক।

 


আরো সংবাদ



premium cement