২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইউনাইটেড পাওয়ারের শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব নাকচ সাড়ে ৪ মাসের সর্বনি¤œ অবস্থানে ডিএসই সূচক

-

পতন ঘটেই চলেছে পুঁজিবাজারে। গতকাল টানা দ্বিতীয় দিনের মতো সূচক হারায় দুই পুঁজিবাজার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৫ হাজার ২৬০ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি গতকাল দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ২৪০ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে। বিগত সাড়ে চার মাসের মধ্যে আর এ পর্যায়ে নামেনি ডিএসই সূচক। সর্বশেষ গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর এর নিচে ছিল সূচকটি।
গতকাল লেনদেনের শুরুতেই ভর করে বিক্রয়চাপ। দিনের মাঝামাঝি সময়ে হারানো সূচকের কিছুটা ফিরে পেলেও শেষদিকে এসে নতুন করে বিক্রয়চাপ তৈরি হয়। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট হারায়। একই সময় বাজারটির অন্য দুই বিশেষায়িত সূচক ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ হারায় ৪ দশমিক ৬১ ও ৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট। এর আগে মঙ্গলবার প্রধান সূচকটির প্রায় ৬৩ পয়েন্ট হারায় ডিএসই।
দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক মূল্যসূচক ও ডিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে ৭৭ দশমিক ০৬ ও ৪৫ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচক হারায় ৩ দশমিক ৮৭ ও ৮ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট।
সূচকের অবনতি ঘটলেও গতকাল দুই পুঁজিবাজারেই লেনদেনের উন্নতি ঘটে। ডিএসই ৩৩২ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে গতকাল যা আগের দিন অপেক্ষা ৩৪ কোটি টাকা বেশি। মঙ্গলবার বাজারটির লেনদেন ছিল ২৯৮ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে ১২ কোটি টাকা থেকে ১৩ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন।
গতকাল লেনদেনের শুরুতেই বিক্রয়চাপ শুরু হয়। ৫ হাজার ২৬০ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করা ডিএসইর প্রধান সূচকটি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নেমে আসে ৫ হাজার ২১০ পয়েন্টে। এ পর্যায়ে সূচকের প্রায় ৫০ পয়েন্ট হারায় ডিএসই। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে ক্রয়চাপ বৃদ্ধি পেলে ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে সূচকটি। বেলা সোয়া ১টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৬৮ পয়েন্টে। কিন্তু সূচকের ঊর্ধ্বমুখী এ প্রবণতা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। লেনদেনের এ পর্যায়ে নতুন করে বিক্রয়চাপ সৃষ্টি হলে দিনশেষে ২০ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট হারিয়ে ৫ হাজার ২৪০ দশমিক ৩৭ পয়েন্টে স্থির হয়।
এ দিকে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ইউপিজিডিসিএল) করপোরেট পরিচালক ইউনাইটেড ময়মনসিংহ পাওয়ার লিমিটেডের (ইউএমপিএল) কাছে থাকা শেয়ার একটি বিদেশী কোম্পানির কাছে বিক্রির প্রস্তাব অনুমোদন করেনি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল বিএসইসির ৬৮৩তম কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো: সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, একটি বিদেশী কোম্পানির কাছে ইউপিজিডিসিএলের শেয়ার বিক্রির উদ্দেশ্যে গত ৩১ মার্চ একটি শেয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (এসপিএ) সম্পাদন করা হয়। এ চুক্তির বিষয়টি ৭ এপ্রিল চিঠির মাধ্যমে কমিশনকে অবহিত করে কমিশনের সহায়তা কামনা করা হয়।
কমিশন ১০ এপ্রিল চিঠির মাধ্যমে ইউএমপিএলের কাছে কিছু তথ্য ও কাগজপত্র চায়। ১১ এপ্রিল কোম্পানিটির পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য ও কাগজপত্র কমিশনে দাখিল করা হয়। দাখিলকৃত তথ্য ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে কমিশনের কাছে বেশ কিছু বিষয় পরিলক্ষিত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ইউএমপিএল কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র। যেমন : এসপিএ দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সম্পাদন করা হয়নি এবং উল্লিখিত লেনদেনের সময় ও শেয়ারমূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি বিদ্যমান সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী সমর্থনযোগ্য নয়।
তা ছাড়া এসপিএতে একটি কল অপশন উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ভবিষ্যৎ বাজারমূল্য অপেক্ষা অধিকতর মূল্যে অর্থাৎ ইউপিজিডিসিএলের ৭৫ লাখ ৭ হাজার শেয়ার প্রতিটি ৪৭৬ টাকা ৬০ পয়সা দরে ওই বিদেশী কোম্পানি কর্তৃক বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রয় করার ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। পুঁজিবাজারে ওই কল অপশনের বিষয়টি বিদ্যমান সিকিউরিটিজ-সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ এখনো পুঁজিবাজারে কল অপশনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান পর্যন্ত প্রণয়ন করা হয়নি।
এসব বিষয়ে আলোচনা ও সার্বিক বিবেচনা করে ইউএমপিএল কর্তৃক ধারণকৃত ইউপিজিডিসিএলের সুনির্দিষ্টসংখ্যক শেয়ার সংশ্লিষ্ট বিদেশী কোম্পানির কাছে বিক্রির উদ্দেশ্যে গত ৩১ মার্চ সম্পাদিত এ সংক্রান্ত এসপিএর অধীনে প্রস্তাবিত লেনদেনটি বিদ্যমান সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী সমর্থনযোগ্য নয় বলে কমিশন এটি বিবেচনা করেনি।


আরো সংবাদ



premium cement