২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অবশেষে পুঁজিবাজারে সূচক ও লেনদেনের উন্নতি

-

অবশেষে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। গতকাল বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। দিনের শুরুতে সাময়িকভাবে বিক্রয়চাপ কার্যকর থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে থাকে। দিনশেষে দুই পুঁজিবাজারই সূচকের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ধরে রাখে। বাজারগুলোতে বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি বৃদ্ধি পায় উভয় পুঁজিবাজারের লেনদেনও।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৬১ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। পাঁচ হাজার ২৫৯ দশমিক ৪১ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি বৃহস্পতিবার দিনশেষে পৌঁছে যায় পাঁচ হাজার ৩২১ দশমিক ৪১ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ১৭ দশমিক ০৭ ও ১০ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ১৮১ দশমিক ৬৬ ও ১১০ দশমিক ৫১ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ যথাক্রমে ১১ দশমিক ৭৬ ও ১২ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়।
সূচকের পাশাপাশি গতকাল লেনদেনও বেড়েছে দুই পুঁজিবাজারে। ঢাকা শেয়ারবাজারে এ দিন ৩৫২ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি হতে দেখা যায়, যা আগের দিন অপেক্ষা ৩৮ কোটি টাকা বেশি। গত বুধবার বাজারটির লেনদেন ছিল ৩১৪ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১২ কোটি টাকা থেকে ১৮ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন।
বৃহস্পতিবার দুই বাজারই লেনদেন শুরুর পরপর বিক্রয়চাপের মুখে পড়ে। কিন্তু এ চাপ ছিল খুবই সামিয়ক। কিন্তু এ পর্যায়ে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উভয়পক্ষ থেকে ক্রয়চাপ বৃদ্ধি পেলে দ্রুতই বদলাতে শুরু করে বাজার পরিস্থিতি। পাঁচ হাজার ২৫৯ দশমিক ৪১ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা ডিএসইএক্স সূচকটি বেলা সাড়ে ১১টায় পৌঁছে যায় পাঁচ হাজার ২৯৫ পয়েন্টে। এ সময় সূচকের উন্নতি ৩৬ পয়েন্ট উন্নতি রেকর্ড করা হয়। সূচকের এ অবস্থান থেকে সাময়িকভাবে বিক্রয়চাপ তৈরি হলে দুপুর ১২টায় পাঁচ হাজার ২৮০ পয়েন্টে নেমে আসে সূচকটি। তবে বেলা সাড়ে ১২টায় নতুন করে গতি পায় বাজার। এ পর্যায়ে আবার ঊর্ধ্বমুখী রূপ নেয় বাজার সূচক যা শেষপর্যন্ত বজায় থাকে। দিনশেষে ৬১ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট উন্নতিতে পাঁচ হাজার ৩২১ পয়েন্টে স্থির হয় সূচকটি।
দিনের বাজার আচরণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দেয়। বিভিন্ন ব্রোকার হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের ট্রেডিং ফ্লোরগুলোতে বিনিয়োগকারীদের মনোভাবই এ ইঙ্গিত দিচ্ছিল। তবে তারা বাজারের এখনো পুরোপুরি আস্থাশীল হতে পারছেন না বলে জানালেন। কারণ অতীতেও বড় পতনের পর বাজার সাময়িকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর নজির রয়েছে। কিন্তু দু’দিন না যেতেই আবার পতনের ফাঁদে আটকে পড়ে বাজার। তাই এ মুহূর্তে নতুন বিনিয়োগের পরিবর্তে বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। কারণ তাদের অনেকের হাতেই নতুন করে বিনিয়োরেগর সক্ষমতা নেই। এ পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরার বিকল্প নেই বলেই মনে করেন তারা।
দুই পুঁজিবাজারের বেশির ভাগ খাতেই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গতকাল। বেশ কয়েকটি খাতে দাম বাড়ে শতভাগ কোম্পানির। তবে এর মধ্যেও আর্থিক তিনটি খাত দরপতনের বাইরে থাকতে পারেনি। যেখানে প্রকৌশল, রসায়ন, সিমেন্ট ও জ্বালানির মতো খাতগুলোতে প্রায় শতভাগ কোম্পানির দাম বাড়ে সেখানে আর্থিক তিনটি খাতেই বেশ কিছু কোম্পানি দর হারায়। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৪৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২৪৮টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ৫৭টি। অপরিবর্তিত ছিল ৪০টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৩৬টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ১৭৬টির দাম বাড়ে, ৪৪টির কমে এবং ১৬টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস। ১৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ১০ লাখ ৪৮ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকায় পাঁচ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ইউনাইটেড পাওয়ার ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে মুন্নু সিরামিকস, ফরচুন স্যুজ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ন্যাশনাল টিউবস, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, এস্কোয়্যার নিটিং, মুন্নু স্টাফলারস ও ইস্টার্ন ক্যাবলস।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল