২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বড় দরপতন দিয়েই পুঁজিবাজারের সপ্তাহ শুরু

ইনফিনিটির আইপিও আবেদন বাতিল
-

পুঁজিবাজারে দরপতনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারই বড় ধরনের সূচক হারায়। প্রচণ্ড বিক্রয়চাপের শিকার হওয়া বাজারগুলো লেনদেন শুরুর প্রথম মিনিটেই ব্যাপক বিক্রয়চাপের মুখে পড়ে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এ পতনের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। ব্যাপকভাবে দর হারায় ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি খাতের কোম্পানি। দিনশেষে উভয় পুঁজিবাজারেই লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির দরপতনের পাশাপাশি হ্রাস পায় লেনদেনও।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৫৮ দশমিক ০৭ পয়েন্ট হারায়। পাঁচ হাজার ৫৭০ দশমিক ১৪ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি রোববার দিনশেষে নেমে আসে পাঁচ হাজার ৫১২ দশমিক ০৭ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ২০ দশমিক ৭৩ ও ২ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট। এর আগে গত সপ্তাহে প্রধান সূচকটির ৮৫ পয়েন্টের বেশি, হারায় ডিএসই।
দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ২২০ দশমিক ০১ পয়েন্ট ও ১৩৪ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ হারায় যথাক্রমে ২০ দশমিক ১৪ ও ৫ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেনেরও অবনতি ঘটে ঢাকা শেয়ারবাজারে। ডিএসই গতকাল ৩৫৪ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিন অপেক্ষা ৩৬ কোটি টাকা কম। গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর লেনদেন ছিল ৩৯০ কোটি টাকা। তবে লেনদেন সামান্য বেড়েছে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে। সিএসই ১০ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন ছিল ৯ কোটি টাকা।
এ দিকে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইনফিনিটি টেকনোলজি ইন্টারন্যাশনালের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন বাতিল করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটি পাবলিক ইস্যু রুলস, ২০১৫ লঙ্ঘন করায় বিএসইসি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই মধ্যে কোম্পানিটিকে আইপিও বাতিলের বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছে বিএসইসি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, আইপিও আবেদনটি বিএসইসির বিবেচনাধীন থাকাবস্থায় ইনফিনিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করে। এ কারণে আবেদনটি বাতিল করা হয়। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইনফিনিটি টেকনোলজির ইস্যু ম্যানেজার আইআইডিএফসি ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সালেহ আহমেদ জানান, তারা বিএসইসির কাছে নতুন করে আবেদন করবেন। চলতি মার্চ মাস শেষের আর্থিক বিবরণী দিয়ে এই আবেদন করা হবে।
আবেদনের প্রকিয়ায় থাকতে বোনাস ইস্যু সম্পর্কে তিনি বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সম্প্রতি ৩০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা সঙ্গত ছিল না। এ বিষয়ে তারা ইস্যু ম্যানেজারের সাথে কোনো পরামর্শ করেননি। এই সময়ে যে বোনাস শেয়ার ইস্যু করা যাবে না সেটি তারা জানতেন না।
প্রসঙ্গত একটি কোম্পানির আইপিও আবেদনে বিদ্যমান পরিশোধিত মূলধন এবং আইপিও পরবর্তী মূলধন কত হবে তা উল্লেখ করতে হয়। আইপিও অনুমোদনের মাঝখানে বোনাস ইস্যু করা হলে পরিশোধিত মূলধনের আকার বেড়ে যায়, যার ফলে আবেদনে উল্লিখিত মূলধন ও প্রকৃত মূলধনের মধ্যে পার্থক্য দেখা দেয়। ইনফিনিটির ক্ষেত্রেও তা হয়েছে। এ বিষয়ে ইস্যু ম্যানেজার অর্থসূচককে বলেন, আমরা কোম্পানিটিকে পরামর্শ দিয়েছি, ঘোষিত বোনাস বাতিল করার জন্য। সেটি বিএসইসির কাছে আপিল করা যেতে পারে। আর বোনাস বাতিল করা না হলে বিএসইসির কাছ থেকে আগে মূলধন বৃদ্ধির অনুমোদন নিয়ে, তারপর নতুন আবেদন করতে হবে।
পুঁজিবাজার থেকে ৩০ কোটি টাকা উত্তোলনের লক্ষ্যে গত বছরের ১২ এপ্রিল ইনফিনিটি টেকনোলজির হয়ে বিএসইসিতে আইপিও আবেদন করে আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল। তবে এই প্রক্রিয়া চলমান থাকাকালীন সময়েই কোম্পানিটি ৩০ শতাংশ বোনাস ইস্যু করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির কাছে ৯ কোটি টাকা মূলধন বাড়ানোর আবেদন করা হয়। এ কারণে কোম্পানিটির আইপিও আবেদন বাতিল করে বিএসইসি।
এর আগে ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত ইনফিনিটি টেকনোলজির পরিশোধিত মূলধন ছিল ২০ কোটি টাকা। পরে তিন দফায় প্লেসমেন্টে শেয়ার ইস্যু করে ১০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। তাতে মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় ৩০ কোটি টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল