২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ওটিসির কোম্পানিই মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় সর্বনিম্ন লেনদেন ডিএসইর

-

সূচকের উন্নতির দিনই বড় অবনতি ঘটেছে পুঁজিবাজারের লেনদেনের। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারই সূচকের কমবেশি উন্নতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়। কিন্তু এ সময় উভয় বাজারেই লেনদেনের বড় ধরনের অবনতি ঘটে। ঢাকা সস্টক এক্সচেঞ্জ গতকাল ৬১১ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন অপেক্ষা ২৮০ কোটি টাকা কম। এটি পুঁজিবাজারটির সাম্প্রতিক সময়ের সর্বনি¤œ লেনদেন। এ বছরের ২ জানুয়ারির পর আর এ পর্যায়ে নামেনি ডিএসইর লেনদেন। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন নেমে আসে ২১ কোটিতে। একদিন আগেও বাজারটির লেনদেন ছিল ৩৪ কোটি টাকা।
গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দেশের পুঁজিবাজার। ওই সময় সূচকের উন্নতি ঘটার পাশাপাশি বাড়তে থাকে বাজারের লেনদেনও। একপর্যায়ের বাজারটির লেনদেন ১১০০ কোটি টাকা ছাড়ায়। কিন্তু জানুয়ারির শেষদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি ঘোষণার পর থেকে বাজার নেতিবাচক আচরণ শুরু করে। প্রায় নিয়মিত সূচকের অবনতির পাশাপাশি হ্রাস পাচ্ছে বাজারের লেনদেনও। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ডিএসইর লেনদেন নেমে আসে ৬১১ কোটিতে।
সোমবার বড় দরপতনের পর গতকাল দেশের দুই বাজারেই সূচকের উন্নতি ঘটে। ঢাকা শেয়ারবাজারে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ১১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৫ হাজার ৭২৪ দশমিক ৫২ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি মঙ্গলবার দিনশেষে পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৭৩৫ দশমিক ৯২ পয়েন্টে। এ সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে ৭ দশমিক ৬১ ও ২ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে ২৬ দশমিক ৪৫ ও ১৬ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট। বাজারটির সিএসই -৫০ ও সিএসই শরিয়াহ ৪ দশমিক ১৫ ও ৩ দশমিক ১২ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়।
এদিকে মাত্র ক’দিন আগেই ডিএসই কর্তৃপক্ষ ওটিসি মার্কেটে পাঠানো সিদ্ধান্ত নেয়া কোম্পানিগুলোই গতকাল দুই পুঁজিবাজারের মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় জায়গা করে নেয়। গতকাল ১০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি পেয়ে ডিএসইর মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসে মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ও ইমাম বাটন। দু’টি কোম্পানিকেই ওটিসি মার্কেটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত আছে ডিএসইর। এ ছাড়া সাভার রিফ্রেক্টরিজ ও মেঘনা পেট ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানি দু’টির মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৯ দশমিক ৯৬ ও ৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ। অথচ কোম্পানিগুলো ওটিসি মার্কেটে যাওয়ার ক্ষেত্রে শুধু নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনই যথেষ্ট। আর প্রাথমিক নিয়ন্ত্রক হিসেবে ডিএসইর নেয়া সিদ্ধান্তে বরাবরই সম্মতি দিয়ে থাকে বিএসইসি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এসব কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিকে একটি মহলের পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে শেয়ার ধরিয়ে দেয়ার জন্য পরিকল্পিত এ মূল্যবৃদ্ধি ঘটানো হচ্ছে। কারণ ওটিসি মার্কেটে গেলে এসব শেয়ার আর সহজ বিক্রয়যোগ্য থাকবে না।
মঙ্গলবার সূচকের উন্নতি দিয়েই লেনদেন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ঢাকায় ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৭২৪ দশমিক ৫২ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে ১০ মিনিটের মাথায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৭৩৯ পয়েন্টে। এ পর্যায়ে ডিএসই সূচকের উন্নতি ঘটে প্রায় ১৫ পয়েন্ট। সূচকের এ অবস্থান থেকেই শুরু হয় বিক্রয়চাপ। দুপুর সোয়া ১২টায় ডিএসই সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ৭১৩ পয়েন্টে। তবে এখান থেকে দ্রুতই ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। বেলা ১টার দিকে সূচকটি ফের পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৭৩৭ পয়েন্টে। এভাবে দিনশেষে ১১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রেখে ৫ হাজার ৭৩৫ দশমিক ৯২ পয়েন্টে স্থির হয় সূচকটি।
ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কিছু কিছু কোম্পানি গতকাল হারানো দর ফিরে পেলে তার প্রভাব পড়ে বাজার সূচকে। এ ছাড়া আগের দিন বেশি হারে দর হারানো বিভিন্ন খাতের কোম্পানিই হারানো দর ফিরে পায়, যা দিনের সূচকের উন্নতি ঘটায়। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৪৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১২৪টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১৬টি। অপরিবর্তিত ছিল ৫৬টির দর। অপরদিকে চট্টগ্রামে লেনদেন হওয়া ২৬১টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৭৭টির দাম বাড়ে, ১৪২টির কমে এবং ৪২টি সিকিউরিটিজের দাম অপরিবর্তিত থাকে।


আরো সংবাদ



premium cement