২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পতনের বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছে পুঁজিবাজার

বন্ডে ৫০ কোটি টাকা তুলবে এইচআর টেক্স

-

পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। মুদ্রানীতি ঘোষণার পর থেকে ছন্দ হারানো পুঁজিবাজারগুলো এ মুহূর্তে পতনের বৃত্তেই যেন ঘুরপাক খাচ্ছে। সপ্তাহের পাঁচটি কার্যদিবসের দুইটিতে বাজার সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলেও তিনটিতে পতন ঘটছে সূচকের। আবার এক দিন সূচকের বড় রকম উন্নতি ঘটলে পরে পতন ঘটছে তার দ্বিগুণ। এভাবে অস্থির বাজার আচরণে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বাজার আচরণের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিলেও নতুন করে লোকসানের মুখে পড়া ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা চরমভাবে হতাশ।
গত সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সবগুলো সূচকই ছিল নি¤œমুখী। এ সময় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স হারায় ৬১ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট। রোববার ৫ হাজার ৮১১ দশমিক ৯২ পয়েন্ট থেকে সপ্তাহ শুরু করা ডিএসইর প্রধান সূচক সপ্তাহ শেষে নেমে আসে ৫ হাজার ৭৫০ দশমিক ২৯ পয়েন্টে। একই সময় দুই বিশেষায়িত সূচক ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ২১ দশমিক ০১ ও ১১ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি হ্রাস পেয়েছে ডিএসইর লেনদেনও। গত সপ্তাহে মোট চার হাজার ৭৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৪ হাজার টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে পুঁজিবাজারটি, যা আগের সপ্তাহ অপেক্ষা ১ দশমিক ০১ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে বাজারটির লেনদেন ছিল চার হাজার ১১৯ কোটি ৭৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। একই হারে হ্রাস পায় সাপ্তাহিক গড় লেনদেন। গত সপ্তাহের বাজারটির গড় লেনদেন দাঁড়ায় ৮১৫ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহ অপেক্ষা ১ দশমিক ০১ শতাংশ কম। ওই সময় বাজারটির গড় লেনদেন ছিল ৮২ কোটি টাকা।
এ দিকে করপোরেট বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করতে চায় বস্ত্র খাতের কোম্পানি এইচআর টেক্সটাইল লিমিটেড। সংগৃহীত অর্থ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পাওয়া তথ্য অনুসারে, সাত বছর মেয়াদে অবসায়নযোগ্য এ করপোরেট বন্ডের সুদের হার নির্ধারিত থাকবে। প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ব্যাংক, বীমা, ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট প্রতিষ্ঠান, অনিবাসী বাংলাদেশী ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হবে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনসহ (বিএসইসি) অন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনসাপেক্ষে বন্ড ইস্যুর বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। সমাপ্ত হিসাব বছরে এর শেয়ার-প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৭০ পয়সা ও শেয়ার-প্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ১৫ টাকা ৩৬ পয়সা। চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৮৩ পয়সা, যা এর আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮১ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ শেষে এর এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৪২ টাকা ৩২ পয়সা।
ডিএসইতে বৃহস্পতিবার এইচআর টেক্সটাইল শেয়ারের সর্বশেষ দর ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ বা ৯০ পয়সা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬ টাকা ২০ পয়সায়। গত এক বছরে শেয়ারটির সর্বনি¤œ দর ছিল ৩০ টাকা ৬০ পয়সা ও সর্বোচ্চ দর ৬৯ টাকা ৯০ পয়সা।
প্রাইড গ্রুপের রফতানিমুখী নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার এইচআর টেক্সটাইল ১৯৯৭ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে বর্তমানে কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ২৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রিজার্ভ ১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৫১ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১০ দশমিক ৬৪, বিদেশী ৪ দশমিক ১৭ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে বাকি ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শেয়ার।
গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষস্থানটি দখলে ছিল চামড়া শিল্প খাতের ফরচুন স্যু’র। ২৪১ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় কোম্পানিটির ৬ কোটি ৫৭ লাখ ২৯ হাজার শেয়ার এ সময় হাতবদল হয়। ২৩২ কোটি ৯৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকায় ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ইউনাইটেড পাওয়ার ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে মুন্নু সিরামিকস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, লিগেসি ফুটওয়্যার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, মুন্নু জুট স্টাফলার, নুরানি ডাইং, গ্রামীণফোন ও জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেড।


আরো সংবাদ



premium cement