২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জেড শ্রেণীর কোম্পানির আবারো দৌরাত্ম্য

নামমাত্র উন্নতি পুঁজিবাজার সূচক ও লেনদেনে

-

সংশোধনের পর পুঁজিবাজার সূচকের স্বাভাবিক উন্নতির প্রত্যাশা থাকলেও বাস্তবে তা ঘটেনি। গতকাল দিনভর সূচকের ওঠানামার মধ্য দিয়ে পার করা দুই পুঁজিবাজারই দিনশেষে সূচকের নামমাত্র উন্নতি ধরে রাখে। এর আগে সোমবার ব্যাংকসহ আর্থিক খাতগুলোর সংশোধনে সূচক হারায় দুই বাজার। লেনদেনের বিভিন্ন পর্যায়ে সৃষ্ট বিক্রয়চাপের ফলে উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির দরপতন ঘটলেও ব্যাংকিং খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি এগিয়ে রাখে দিনের সূচককে। এ সময় উভয় বাজারেই লেনদেনের সামান্য উন্নতি ঘটে।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ৬ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৫ হাজার ৮৫৯ দশমিক ৩ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি মঙ্গলবার দিনশেষে পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৮৬৫ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে ৩ দশমিক ৫৫ ও ৪ দশমিক ৪১ পয়েন্ট। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে ২৫ দশমিক ৮৩ ও ১৪ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ দশমিক ১১ ও ৩ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়।
সূচকের মতো গতকাল উভয় বাজারের লেনদেনে কিছুটা উন্নতি ঘটে। ডিএসই গতকাল ৮৯০ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিন অপেক্ষা ৫ কোটি টাকা বেশি। সোমবার ৮৮৫ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করেছিল পুঁজিবাজারটি। চট্টগ্রামে ৩২ কোটি টাকা থেকে ৩৫ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন। তবে এ সময় দুই বাজারেই অপেক্ষাকৃত বড় মূল্যস্তরের শেয়ারের দিকেই বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক ছিল।
এদিকে গতকাল আবারো ‘জেড’ শ্রেণীর কয়েকটি কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে দেখা যায়। ডিএসইর মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ দশ কোম্পানির বেশ কয়েকটি ছিল এই শ্রেণীর। বাজারের নেতিবাচক প্রবণতার সুযোগ নিয়ে বরাবরই বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ এ ধরনের কোম্পানিগুলো নিয়ে অনৈতিক খেলায় মেতে ওঠেন। গত দু’দিন বাজার যখন নেতিবাচক প্রবণতার শিকার ঠিক তখনই এসব কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি শুরু হলো। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এ ধরনের খেলার অংশ না হলেই বাজার স্বাভাবিক হয়ে ওঠতে পারে।
গতকাল সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে প্রধান সূচকটি ৫ হাজার ৮৫৯ দশমিক ৩ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে বেলা সোয়া ১১টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৮৯৯ পয়েন্টে। সূচকের এ অবস্থান থেকে বিক্রয়চাপের শুরু। বেলা ২টা পর্যন্ত এ চাপ অব্যাহত থাকে। এ সময় ডিএসই সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ৮৫১ পয়েন্টে। তবে বেলা ২টার পর কিছুক্ষণের জন্য হলে দিনশেষে সূচকের উন্নতি ধরে রাখে বাজারটি।
গতকাল দুই পুঁজিবাজারের বেশির ভাগ খাতেই দরপতন ঘটে। দিনশেষে দর হারায় বাজারগুলোর প্রায় ৭০ শতাংশ কোম্পানি। তবে এ পতনের দিনেও কিছু কিছু মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে দেখা যায় যেগুলো অপেক্ষাকৃত বড় মূল্যস্তরের। তবে দিনের একটা সময় ব্যাংকগুলো সংশোধনের শিকার হলেও শেষদিকে এসে এদের বেশির ভাগই মূল্যবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসে যা দিনের সূচককে এগিয়ে রাখতে ভূমিকা রাখে। ঢাকায় লেনদেন হওয়া ৩৪৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৯৫টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ২২৪টি। অপরিবর্তিত ছিল ২৭টির দর। অপরদিকে, চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৬৮টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৯৭টির দাম বাড়ে, ১৫৫টির কমে এবং ১৬টির দর অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে প্রিমিয়ার ব্যাংক। ৬০ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৩ কোটি ৭৯ লাখ শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ৩৯ কোটি ২৯ লাখ টাকায় ৯ লাখ ৪৬ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল স্কয়ার ফার্মা, ঢাকা ব্যাংক, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, সাইহার টেক্সটাইলস, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডাইং, বঙ্গজ লি. ও আইএফআইসি ব্যাংক।


আরো সংবাদ



premium cement