২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আর্থিকখাতে সংশোধন, পতন ঘটল পুঁজিবাজার সূচকের

-

সূচকের বড় উন্নতির পর যথারীতি সংশোধন ঘটেছে পুঁজিবাজারে। গত রোববার ব্যাংকসহ আর্থিক খাতগুলোর ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি দেশের পুঁজিবাজার সূচকে বড় ধরনের উন্নতি ঘটায়। ঠিক এক দিন পর গতকাল এ খাতগুলো থেকে মুনাফা তুলে নিতে গিয়ে সৃষ্ট বিক্রয়চাপের ফলে সংশোধন ঘটলে সূচক হারায় দুই পুঁজিবাজাার। দিনশেষে উভয় পুঁজিবাজারেই লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির দরপতনের পাশাপাশি হ্রাস পায় বাজারগুলোর লেনদেনও।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট হারায় গতকাল। ৫ হাজার ৮৮৭ দশমিক ২৭ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি গতকাল সোমবার দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ৮৫৯ দশমিক ৩ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ৮ দশমিক ১৯ ও ৩ দশমিক ০৬ পয়েন্ট। এর আগে রোববার প্রায় ৬২ পয়েন্ট উন্নতি ঘটে ডিএসইর প্রধান সূচকটির। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ৮৪ দশমিক ০৭ ও ৫৪ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ হারায় যথাক্রমে ৯ দশমিক ৮৭ ও ১ দশমিক ৬১ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি অবনতি ঘটে দুই পুঁজিবাজারের লেনদেনে। ডিএসই গতকাল ৮৮৫ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিনের চেয়ে ৮৩ কোটি টাকা কম। রোববার বাজারটির লেনদেন ছিল ৯৬৮ কোটি টাকা। লেনদেনের শুরুতে বিক্রয়চাপের মুখে পড়া বাজারগুলো আগের গতি ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে অবনতি ঘটে লেনদেনের, এমনটিই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, ঊর্ধ্বমুখী বাজারে যেভাবে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ থাকে পড়ন্ত বাজারে তা আশা করা যায় না। এ সময় বিনিয়োগকারীদের মাঝে সতর্ক মনোভাব দেখা যায়। চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে ৫১ কোটি টাকার স্থলে ৩২ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি হয়েছে যা ১৯ কোটি টাকা কম।
গতকাল সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে পুঁজিবাজারগুলো। ঢাকা শেয়ারবাজারে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ হাজার ৮৮৭ দশমিক ২৭ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে মাত্র কয়েক মিনিটের মাথায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৫০৯ পয়েন্টে। বেলা ১১টা পর্যন্ত সূচকের এ অবস্থান ধরে রাখে বাজারটি। কিন্তু এর পরই বিক্রয়চাপ শুরু হয়। এ সময় শুরুতে মূল্যবৃদ্ধির ধারায় থাকা বিভিন্ন খাতের কোম্পানিগুলোতে দরপতন শুরু হয়। তবে সবচেয়ে বেশি পতনের শিকার হয় ব্যাংক ও নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত। দুপুর ১২টার দিকে ডিএসই সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ৮৭১ পয়েন্টে। তবে বরাবরের মতো প্রথম দিকের এ চাপ দ্রুত সামলে নেয় বাজারটি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সূচকটি আবার পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৮৯৫ পয়েন্টে। এরপর কিছু সময় বাজারটি সূচকের এ অবস্থান ধরে রাখলেও বেলা দেড়টার দিকে আবার বিক্রয়চাপের মুখে পড়ে বাজারটি। দিনশেষে ২৭ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট হারিয়ে ৫ হাজার ৮৫৯ দশমিক ৩ পয়েন্টে স্থির হয় সূচকটি।
ব্যাংকগুলোর সংশোধনের দিন গতকাল বীমা খাতে আবারো মূল্যবৃদ্ধির ঘটনা ঘটে। এ খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে দেখা যায় যা মধ্যে বেশ কিছু দিনের সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে পৌঁছে যায়। এদিন ডিএসইর মূল্যবৃদ্ধিতে শীর্ষ সাতটি কোম্পানির ৫টিই ছিল বীমা খাতের যার প্রায় সবগুলোরই মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৯ শতাংশের বেশি। অপর দিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে প্রায় শতভাগ কোম্পানি দর হারায় গতকাল। সিমেন্ট তথ্যপ্রযুক্তি ও খাদ্যখাতেও দর বাড়ে বেশির ভাগ কোম্পানির। অপর দিকে জ্বালানি, টেক্সটাইল ও বিবিধ খাতে দরপতনের শিকার হয় বেশির ভাগ কোম্পানি। ঢাকায় লেনদেন হওয়া ৩৪৭টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১২৬টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১৮৪টি। অপরিবর্তিত ছিল ৩৭টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রামে লেনদেন হওয়া ২৭৮টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ১০৬টির দাম বাড়ে, ১৫২টির কমে এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন। ২৫ কোটি ২৬ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৭ লাখ ১৫ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ২৪ কোটি ১৭ লাখ টাকায় ৯ লাখ ১৮ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে স্কয়ার ফার্মা ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে ড্রাগন সোয়েটার, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ফার্মাএইড, এসএস স্টিলস, জেএমআই সিরিঞ্জ, সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিবিএস ক্যাবলস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও লঙ্কাবাংলা ফিন্যান্স।


আরো সংবাদ



premium cement