২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার

পুঁজিবাজারে মূল্যবৃদ্ধিতে বীমা খাতের রাজত্ব

-

বীমা খাতের একক রাজত্বেই গত সপ্তাহের পুরোটা পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহ শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দর বাড়ার শীর্ষে আধিপত্য করছে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো। এ সময় ডিএসইতে মূল্যবৃদ্ধিতে শীর্ষ ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৯টিই বীমা খাতের দখলে। আর এর সবগুলোই হচ্ছে সাধারণ বীমা কোম্পানি। এ ক্ষেত্রে ৫৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ দর বেড়ে সবার শীর্ষে উঠে এসেছে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। সপ্তাহে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর বেড়েছে ৫৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া যায়।
তথ্য অনুযায়ী, শেয়ারটি সর্বশেষ ৩২ টাকা দরে লেনদেন হয়। সপ্তাহব্যাপী কোম্পানিটি সর্বমোট ৩৭ কোটি ৯২ লাখ ৮৮ হাজার টাকা লেনদেন করে, যা গড়ে প্রতিদিন সাত কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ৬০০ টাকা। মূল্যবৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স। সপ্তাহে শেয়ারটির দর বেড়েছে ৫৩ দশমিক ৪১ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ ২৭ টাকা দরে লেনদেন হয়। সপ্তাহব্যাপী কোম্পানিটি সর্বমোট ৪১ কোটি ৭১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা লেনদেন করে, যা গড়ে প্রতিদিন আট কোটি ৩৪ লাখ ৩৮ হাজার ৬০০ টাকা।
ইউনাইটেড ফিন্যান্স গেইনারের তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সপ্তাহে শেয়ারটির সর্বোচ্চ দর বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ। কোম্পানিটি শেয়ার সর্বশেষ ২৭ টাকা ৪০ পয়সা দরে লেনদেন হয়। সপ্তাহব্যাপী কোম্পানিটি সর্বমোট ৬২ কোটি ছয় লাখ ৩৩ হাজার টাকা লেনদেন করে, যা গড়ে প্রতিদিন ১২ কোটি ৪১ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা। তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছেÑ ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স ও বিডি ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিগুলোর মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৩২ দশমিক ৫৭, ৩১ দশমিক ০৩, ৩০ দশমিক ৮৬, ২৬ দশমিক ৪৬, ২৩ দশমিক ০৬, ২২ দশমিক ১৫ ও ২০ দশমিক ৩২ শতাংশ।
মূল্যবৃদ্ধিতে একক খাতের রাজত্ব থাকলেও গত সপ্তাহের পুঁজিবাজার আচরণ ছিল মিশ্র। এ সময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স নামমাত্র উন্নতি ধরে রাখলেও দুই বিশেষায়িত সূচকেরই কমবেশি অবনতি ঘটে। ডিএসইএস সূচকটি গত সপ্তাহে ২৮ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৫ হাজার ৭৯৭ দশমিক ৩০ পয়েন্ট থেকে সপ্তাহ শুরু করা সূচকটি বৃহস্পতিবার দিনশেষে পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৮২৫ দশমিক ৫৭ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে যথাক্রমে ২ দশমিক ৩৬ ও ৮ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট।
সূচকের মিশ্র আচরণ সত্ত্বেও গত সপ্তাহে বাজারের লেনদেনের উন্নতি ঘটে। ডিএসই পাঁচ হাজার ২৭১ কোটি ৬৮ লাখ তিন হাজার টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের সপ্তাহ অপেক্ষা ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন ছিল চার হাজার ৯২৫ কোটি ৬৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। একই হারে উন্নতি ঘটে সাপ্তাহিক গড় লেনদেনেও। আগের সপ্তাহের ৯৮৫ কোটি টাকা থেকে ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন দাঁড়ায় এক হাজার ৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে দু’দিন ১১ শ’ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন করে বাজারটি।
গেল সপ্তাহে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৬ খাতের দর বেড়েছে। তবে কমেছে ১১ খাতের দর। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তথ্যমতে, আলোচ্য সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে বীমা খাতের। এ খাতের দর বেড়েছে ১৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এরপরেই বেড়েছে প্রকৌশল খাতের। এ খাতের দর বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। অন্য খাতগুলোর মধ্যে আর্থিক খাতের ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ, সেবা-আবাসন খাতের ১ দশমিক ২৯ শতাংশ, বিবিধ খাতের ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, জ্বালানি খাতের ২ দশমিক ২৭ শতাংশ, সিরামিক খাতের শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ, ব্যাংক খাতের শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ দর বেড়েছে। একই সময় উল্লিখিত খাতগুলো ছাড়া বাকি খাতগুলোর দর কমেছে।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষে ছিল খুলনা পাওয়ার কোম্পানি। ১৭১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকায় কোম্পানিটির ২ কোটি ৪৬ লাখ ১৮ হাজার শেয়ার এ সময় হাতবদল হয়, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। ১৩২ কোটি ১২ লাখ ৫৭ হাজার টাকায় ১ কোটি ১৮ লাখ ৬৭ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে বিবিএস ক্যাবলস ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, জেএমআই সিরিঞ্জ, ইউনাইটেড পাওয়ার, ব্র্যাক ব্যাংক, সিঙ্গার বাংলাদেশ, অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস, ঢাকা ব্যাংক ও আলহাজ্ব টেক্সটাইলস।


আরো সংবাদ



premium cement