১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৪ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারাল ডিএসই

-

মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৪ হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। রোববার ৫ লাখ ৮৩ হাজার কোটি টাকার মূলধন দিয়ে সপ্তাহ শুরু করা পুঁজিবাজারটির মূলধন বৃহস্পতিবার দিনশেষে দাঁড়ায় ৩ লাখ ৭৯ হাজার কোটি টাকায় যা আগের সপ্তাহ অপেক্ষা দশমিক ৯৯ শতাংশ কম। সপ্তাহের ৫টি কর্মদিবসের সব ক’টিতে সূচকের ধারাবাহিক অবনতির ফলে এভাবে মূলধন হারায় পুঁজিবাজারটি।
পুঁজিবাজারের গত সপ্তাহের শুরুটাই ছিল দরপতন দিয়ে। সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতেও এ পতনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখে ডিএসই। এর ফলে সপ্তাহান্তে বড় ধরনের পতনের শিকার হয় বাজারটি। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এ সময় ৮১ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট হ্রাস পায়। রোববার ৫ হাজার ৩৩২ দশমিক ৮১ পয়েন্ট থেকে সপ্তাহ শুরু করা সূচকটি বৃহস্পতিবার দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ২৫১ দশমিক ০২ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসইর বিশেষায়িত দুই সূচক ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ হারায় ১৮ দশমিক ৭১ ও ১৭ দশমিক ৪১ পয়েন্ট।
সূচকের ধারাবাহিক এ অবনতি বড় ধরনের প্রভাব ফেলে বাজারটির লেনদেনেও। গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেন ছিল ২ হাজার ৫৫৫ কোটি ২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে বাজারটির মোট লেনদেন ছিল ৩ হাজার ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬ হাজার টাকা। একই হারে হ্রাস পায় ডিএসইর গড় লেনদেনও। ৬০০ কোটি ৭০ লাখ ৬১ হাজার টাকা থেকে তা নেমে আসে ৫১১ কোটি ৪৮ হাজার টাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মোট লেনদেনের মধ্যে ব্লক মার্কেটে ৩০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এসব কোম্পানির লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৮ কোটি ৭৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তথ্য মতে, গেলো সপ্তাহে বন্ড মার্কেটে সবচেয়ে বড় লেনদেন হয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের। আলোচ্য সময়ে কোম্পানির ৩০ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বন্ড মার্কেটে লেনদেনের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রেনেটা লিমিটেড। কোম্পানিটির লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বেঙ্গল উইন্ডসোর থার্মোপ্লাস্টিক লেনদেনে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। কোম্পানিটির ৯ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এ ছাড়া ব্লক মার্কেটে লেনদেনকৃত অন্যান্য কোম্পানির মধ্যে হোলসিম বাংলাদেশের ৪ কোটি ৪৮ লাখ ১০ হাজার টাকা, মুন্নু সিরামিকের ২ কোটি ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ২ কোটি ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা, এসকে ট্রিমসের ১ কোটি ৯৯ লাখ ২০ হাজার টাকা, খুলনা পাওয়ারের ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, ড্রাগন সোয়েটারের ১ কোটি ১৪ লাখ টাকা, মুন্নু জুট স্টাফলারের ১ কোটি টাকা, প্যাসিফিক ডেনিমসের ৬৭ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মার ৮৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও অ্যাডভেন্ট ফার্মার ৪৭ লাখ ২০ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হয়।
গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ইউনাইটেড পাওয়ার। ৭২ কোটি ১৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকায় কোম্পানিটির ২৪ লাখ ৩৮ হাজার ৩২৪টি শেয়ার এ সময় হাতবদল হয়। ৬৯ কোটি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ৫০৮টি শেয়ার বেচাকেনা করে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ছিল দ্বিতীয় স্থানে। একই সময় ডিএসইতে শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিক্যাল ডিভাইসেস, ওয়াটা কেমিক্যালস, এসকে ট্রিমস, ভিএফএস থ্রেড ডাইং, ন্যাশনাল টি কোম্পানি, খুলনা পাওয়ার, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ও সোনালি আঁশ।
সপ্তাহের মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল বীমা খাত। এ খাতের বেশ কয়েকটি কোম্পানি সপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ দশে উঠে আসে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ছিল শীর্ষ। ৩১ দশমিক ৬৯ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে কোম্পানিটির। এ ছাড়া ২৭ দশমিক ০৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি পেয়ে জেএমআই সিরিঞ্জ ছিল মূল্যবৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে। এ ছাড়া রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৭.৩৩, আনলিমা ইয়ার্ন ১৪.১৬ ও সানলাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৩.৯৭ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।
অপর দিকে গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ দরপতনের শিকার হয় ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক। ৩৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ দর হারায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এ কোম্পানি। ঘোষিত লভ্যাংশ প্রদানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার বিধিনিষেধের কারণে এ দরপতনের শিকার হয় কোম্পানিটি। এ ছাড়া এমএল ডাইং ২০.৬১, ইন্দো-বাংলা ফার্মা ১৮.৭৫, ড্রাগন সোয়েটার ১৮.৪৩ ও মুন্নু স্টাফলার ১৫.৩১ শতাংশ দর হারায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল