২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দরপতনেই সপ্তাহ পার করল পুঁজিবাজার

-

দরপতনের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ শুরু করা পুঁজিবাজার পতন দিয়েই শেষ করেছে সপ্তাহ। গতকাল সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসেও অবনতি হয় দেশের দুই পুঁজিবাজার সূচকের। এর আগে গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস থেকেই শুরু হয় দুই পুঁজিবাজরের দরপতন। মোট ছয়টি কর্মদিবসের সব ক’টিতেই কমবেশি অবনতি হয় বাজার সূচকের। আগের দিনগুলোর মতো গতকালও সূচকের উন্নতি দিয়ে দিন শুরু করা বাজারগুলো বিক্রয়চাপের মুখে সূচক ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। দর হারায় উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি ও ফান্ড।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ১৪ দশমিক ৮২ পয়েন্ট হারায়। ৫ হাজার ২৬৫ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি বৃহস্পতিবার দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ২৫১ দশমিক ০১ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ সূচকের অবনতি হয় ৩ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট। তবে দশমিক ৯৮ পয়েন্ট উন্নতি হয় ডিএসই শরিয়াহ সূচকের। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি হয় যথাক্রমে ৩৪ দশমিক ১২ ও ২৪ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট। এখানে সিএসই শরিয়াহ ১ দশমিক ৪০ পয়েন্ট হারায়।
সূচকের অবনতি হলেও গতকাল দুই পুঁজিবাজারে লেনদেনের কমবেশি উন্নতি হয়। ঢাকা শেয়ারবাজার গতকাল ৪৯৯ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিন অপেক্ষা ১২ কোটি টাকা বেশি। আগের দিন ডিএসইর লেনদেন ছিল ৪৮৭ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১৬ কোটি টাকা থেকে ২৫ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন।
বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, বাজারের চলমান দরপতন কোনোভাবেই স্বাভাবিক বলা যায় না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকলেও এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যার ফলে এভাবে টানা দরপতনের শিকার হবে পুঁজিবাজার। তারা মনে করেন, বরাবরের মতো যে এখনো নির্বাচনের জন্য সৃষ্ট সংশয়কে কাজে লাগিয়ে এবারো প্রতিষ্ঠানগুলোই হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি বাড়াচ্ছে যাতে আরো কম মূল্যস্তরে শেয়ার কিনে নিতে পারে। তাছাড়া বর্তমানে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের যে মূল্যস্তর তাতে শেয়ার বিক্রিতে মুনাফাতো দূরের কথা পুঁজি বাঁচানোও দায় হবে। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এ দরে শেয়ার বিক্রির প্রশ্নই আসে না।
বরাবরের মতো গতকাল সকালেও সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ঢাকা বাজারে ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ২৬৫ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করে বেলা ১১টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৯৩ পয়েন্টে। এ পর্যায়ে ডিএসই সূচকের উন্নতি হয় ২৮ পয়েন্ট। সূচকের এ অবস্থান থেকেই শুরু বিক্রয়চাপের। দিনের বাকি সময় বাজার আবর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দিনশেষে ১৪ দশমিক ৮২ পয়েন্ট হারিয়ে ৫ হাজার ২৫১ পয়েন্টে স্থির হয় সূচকটি।
দুই বাজারে বেশির ভাগ খাতেই দরপতন হয় গতকাল। সব চেয়ে বেশি দরপতনের শিকার হয় রসায়ন, টেক্সটাইল, পাট ও কাগজ খাত। এ সময় খাদ্য, জ্বালানি, চামড়া ও সিমেন্ট খাতে মিশ্রপ্রবণতা দেখা যায়। তবে দিনটি ভালো কাটে বীমা খাতের। আগের দিন জীবন বীমা কোম্পানিগুলোর ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি ঘটার পর গতকাল দেখা গেছে মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ বীমা কোম্পানিগুলোতে প্রাধান্য। বেশ কয়েকটি সাধারণ বীমা কোম্পানি উঠে আসে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ দশে। ঢাকায় গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৩৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১১২টির মূল্যবৃদ্ধিও বিপরীতে দর হারায় ১৮৩টি। অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টির দর। অন্য দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৫২টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৯৩টির দাম বাড়ে, ১২০টির কমে এবং ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। ২৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৯ লাখ ৫১ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়। ১৯ কোটি ৫১ লাখ টাকায় ৬ লাখ ৬৬ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ইউনাইটেড পাওয়ার ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিক্যাল ডিভাইসেস, ওয়াটা কেমিক্যালস, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলহাজ টেক্সটাইলস, ন্যাশনাল টি কোম্পানি, রুপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও ইফাদ অটোস।


আরো সংবাদ



premium cement