১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ইস্টার্ন ব্যাংক ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়বে

জীবন বীমা কোম্পানির দিকে ঝুঁকছেন বিনিয়োগকারীরা

-

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের কৌশলে প্রতিনিয়তই পরিবর্তন ঘটছে। কম মূল্যস্তর ও স্বল্প মূলধনের কোম্পানির জয়জয়কার ছিল গেল ক’দিন। এবার বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক জীবন বীমা কোম্পানির দিকে। গতকাল বুধবার দেশের দুই পুঁজিবাজারের মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসে বীমা খাতের জীবন বীমা কোম্পানির বেশ কয়েকটি। লেনদেন শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই এ খাতের বেশ কিছূ কোম্পানির শেয়ারের বিক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে কমপক্ষে ৩টি কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ১০ শতাংশ যা বাজারগুলোর দিনের সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ।
গতকাল ছিল পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের পঞ্চম দিন। গত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে বাজারে যে পতন শুরু হয় তা অব্যাহত ছিল গতকালও। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এ দিন ৯ দশমিক ৯২ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ৫ হাজার ২৭৫ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ২৬৫ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচক হারায় ৫ দশমিক ৯৩ ও ২ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে ৩ দশমিক ১৮ ও ২ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচক হারায় ৫ দশমিক ৬৮ ও দশমিক ২৬ পয়েন্ট।
এ দিকে তালিকাভুক্ত ব্যাংকিং কোম্পানি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডকে ৫০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ার অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। মঙ্গলবার বিএসইসির ৬৬৮তম কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে কমিশন সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গের কারণে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের প্যাসিফিক ডেনিমস ও স্টেক হোল্ডার আলী সিকিউরিটিজকে জরিমানা করে। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ইস্টার্ন ব্যাংককে অনুমোদন দেয়া বন্ডের মেয়াদ হবে ৭ বছর। এই বন্ডের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ফ্লোটিং রেট, নন-কনভার্টিবল। বন্ডটি ৭ বছর পূর্ণ অবসায়ন হবে যা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান,ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, বৈদেশিক উন্নয়নমূলক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে ইস্যু করা হবে। এই বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ উত্তোলন করে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড মূলধনভিত্তি শক্তিশালী করবে। এই বন্ডের প্রতি ইউনিটের অভিহিত মূল্য ১ কোটি টাকা। এই বন্ডের ট্রাস্টি এবং ম্যানডেটেড লিড অ্যারেঞ্জার হিসেবে সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল রিসোর্সেস লিমিটেড এবং ইবিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড কাজ করছে।
একই সভায় বস্ত্র খাতের প্যাসিফিক ডেনিমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ প্রত্যেক পরিচালককে (স্বতন্ত্র পরিচালক ছাড়া) ৩ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছে বিএসইসি। আইপিওর টাকা সঠিকভাবে ব্যবহার না করায় এ জরিমানা করা হয়।
এ সম্পর্কে জানানো হয়, প্যাসিফিক ডেনিমস কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবসংক্রান্ত প্রসপেক্টাসে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের যে সময়সূচি ছিল, সে অনুযায়ী কোম্পানিটি সেই ঋণ পরিশোধ করেনি। কোম্পানি তাদের খরচ নির্বাহ করার ক্ষেত্রে ৫৯ লাখ ১১ হাজার ৭৫৯ টাকা সম্মতিপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে খরচ করেছে। বিএসইসির বিশেষ নিরীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
এ ছাড়া কমিশনের নিযুক্ত বিশেষ নিরীক্ষককে সহায়তা করেনি প্যাসিফিক ডেনিমস। নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইপিওতে উত্তোলিত অর্থের ২০ কোটি ৯৮ লাখ ৬ হাজার ৬২৫ টাকা (যা ভবন নির্মাণ খাতে দেখানো হয়েছে) অপব্যবহার করেছে এবং কমিশনে মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর সেকশন ১৮ ভঙ্গ করেছে। উল্লিখিত আইনগুলো লঙ্ঘনের দায়ে এই জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। এ ছাড়া একই রসিদে একাধিকবার টাকা পরিশোধের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধ লেনদেন করায় কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ওই অর্থ কোম্পানিতে ফেরত দেয়ার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রমাণাদিসহ কমিশনকে অবহিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আলী সিকিউরিটিজকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করে কমিশন। কোম্পানিটি তাদের সমন্বিত গ্রাহক হিসেবে ঘাটতির মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর রুল ৮এ-এর সাব-রুল (২) ভঙ্গ করেছে। একই ব্যাংকে একাধিক সমন্বিত গ্রাহক হিসাব পরিচালনার মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭ এর রুল ৮এ (১) ভঙ্গ করেছে। গ্রাহকের নগদ হিসাবে চুক্তিবহির্ভূতভাবে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর রুল ৩(১) এবং রুল ৩(২) ভঙ্গ করেছে। এ ছাড়া ৫ লাখ টাকার অধিক নগদ গ্রহণের মাধ্যমে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস ১৯৮৭ এর রুল ৮(১)(সিসি)(আই) ভঙ্গ করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement