১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আবারো ৫০০ কোটির নিচে ডিএসইর লেনদেন

চতুর্থ দিনের মতো পুঁজিবাজার সূচকের অবনতি

-

মন্দা অব্যাহত রয়েছে পুঁজিবাজারে। গতকাল মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল সূচক পতনের ধারাবাহিকতা। এ নিয়ে চতুর্থ দিনের মতো সূচক হারিয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। মঙ্গলবার সূচকের উন্নতি দিয়ে দিন শুরু করা পুঁজিবাজারগুলো আধঘণ্টার মাথায় বিক্রয়চাপের শিকার হয়। পরবর্তী সময়ে এ চাপ আর কাটিয়ে ওঠতে পারেনি বাজারগুলো। এ সময় উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির দরপতনের পাশাপাশি হ্রাস পায় লেনদেন।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ১৯ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ৫ হাজার ২৯৫ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি মঙ্গলবার দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ২৭৫ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের অবনতি ঘটে দশমিক ৯৭ ও ৬ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট। এ নিয়ে গত চার দিনে প্রধান সূচকটির ৮৫ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট হারায় ডিএসই। দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের অবনতি ঘটে ৪০ দশমিক ৪৩ ও ২৪ দশমিক ৪১ পয়েন্ট। বাজারটির বিশেষায়িত দুই সূচক সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ হারায় ৩ দশমিক ২৭ ও ৩ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট।
এ দিকে টানা দরপতনের কারণে বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। গতকাল ডিএসইর লেনদেন ছিল ৪৮৩ কোটি টাকা। ২৪ কর্মদিবস পর আবার ৫০০ কোটির নিচে নামল দেশের শীর্ষ পুঁজিবাজারটির লেনদেন। গত ৭ নভেম্বরের পর আর এ পর্যায়ে ডিএসইর লেনদেন নামেনি। অথচ মাত্র ১৫ দিন আগেও ৮০০ কোটির উপরে ছিল বাজারটির লেনদেন। লেনদেন কমেছে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারেও। সিএসইতে ২২ কোটি টাকা থেকে ১৯ কোটিতে নামে লেনদেন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ধারাবাহিক দরপতনের কারণে বিনিয়োগকারীরা এ মুহূর্তে সংশয়ের মধ্যে কাটাচ্ছেন। অনেকে বিনিয়োগে আগ্রহী থাকলেও নির্বাচন সামনে রেখে আগামী দিনগুলোতে বাজার কোনদিকে মোড় নেয় তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। তাই সাইড লাইনে রয়েছেন অনেক বিনিয়োগকারী। বাজার ভালো আচরণ করলে আবার এ দলটি বাজারে ফিরবে।
গতকাল সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ঢাকা শেয়ারবাজারে ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ২৯৫ দশমিক ৬৯ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে বেলা ১১টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ৩১০ পয়েন্টে। সূচকের এ অবস্থান থেকে বিক্রয়চাপের শিকার হয় বাজারটি। বেলা ১টা পর্যন্ত এ চাপ অব্যাহত থাকলে ডিএসই সূচক নেমে আসে ৫ হাজার ২৫৯ পয়েন্টে। এ পর্যায়ে ৩৬ পয়েন্ট অবনতি ঘটে ডিএসই সূচকের। তবে দিনের শেষভাগে এসে হারানো সূচকের একটি অংশ ফিরে পায় বাজারটি। দিনশেষে সূচক স্থির হয় ৫ হাজার ২৭৫ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে।
গতকাল দুই পুঁজিবাজারের বেশির ভাগ খাতেই দরপতন ঘটে। দিনের বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা যায় দরপতনের দিক থেকে এগিয়ে ছিল স্বল্প মূলধনের কোম্পানিগুলো। বিভিন্ন খাতের এ কোম্পানিগুলোতেই দরপতন ঘটে বেশি। এ ছাড়া কয়েকটি খাতে শতভাগ কোম্পানির দর হারানোর ঘটনা ঘটে। ব্যাংকিং খাতের বেশির ভাগ কোম্পানি দর হারালেও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি কোম্পানি আগের দিনের হারানো দর ফিরে পায়। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৪১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১০০টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ২০২টি। অপরিবর্তিত ছিল ৩৯টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৪২টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৭০টির দাম বাড়ে, ১৪২টির কমে এবং ৩০টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ভিএফএস থ্রেড ডাইং। ২৩ কোটি ৯০ লাখ টাকায় ৩৭ লাখ ২৮ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় টেক্সটাইল খাতের কোম্পানিটির। ১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় ৩৮ লাখ ৬৩ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে এসকে ট্রিমস ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল জেএমআই সিরিঞ্জ অ্যান্ড মেডিক্যাল ডিভাইসেস, খুলনা পাওয়ার, রুপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালি আঁশ, ওয়াটার কেমিক্যালস, ন্যাশনাল টি কোম্পানি, ন্যাশনাল টিউবস ও ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যাল।

 


আরো সংবাদ



premium cement