২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেড় মাসের সর্বোচ্চ লেনদেন ডিএসইর

-

হঠাৎ পাল্টে গেল এল পুঁজিবাজারের লেনদেন চিত্র। সাইড লাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরা যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিনিয়োগে। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। রোববার ৫৫৬ কোটি টাকা লেনদেন করা পুঁজিবাজারটি গতকাল ৮০৩ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা টাকার অঙ্কে ২৪৭ কোটি টাকা বেশি। এটি পুঁজিবাজারটির বিগত দেড় মাসের সর্বোচ্চ লেনদেন। এ বছরের ৭ অক্টোবরের পর ডিএসইর লেনদেন আর এ পর্যায়ে পৌঁছেনি।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এখন পর্যন্ত শান্ত দেখা যাচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ মনে করছেন সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি অনুকূল থাকতে পারে। তাই দীর্ঘদিন সাইড লাইনে থাকা বিনিয়োগকারীর ওই অংশটি নতুন করে বিনিয়োগে আসছেন। তারা মনে করেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে লেনদেনে আরো গতি আসতে পারে।
গত ৭ অক্টোবর ডিএসইতে ৮০১ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। পরবর্তিতে ক্রমাগত কমতে থাকে বাজারটির দৈনিক লেনদেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪ অক্টোর বাজারটির লেনদেন নেমে আসে ৩৬৮ কোটি টাকায়। ওই সময় প্রতিদিনই হ্রাস পাচ্ছিল দেশের দুই পুঁজিবাজারের লেনদেন। তবে সম্প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হলে লেনদেনের কিছুটা উন্নতি ঘটে। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় তা নিয়ে এখনো সংশয়ে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এরই মধ্যে গতকাল হঠাৎ বড় ধরনের উন্নতি ঘটল লেনদেনে।
এ দিকে লেনদেনের উন্নতি ঘটলেও গতকাল দুই পুঁজিবাজার সূচকের উন্নতি ঘটে নামমাত্র। দিনভর সূচকের ব্যাপক ওঠানামায় কাটলেও দিনশেষে উভয় বাজারেই সূচকের সামান্য উন্নতি ঘটে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচকটি গতকাল ১ দশমিক ০৪ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৫ হাজার ২৫৬ দশমিক ০৬ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি সোমবার দিনশেষে ৫ হাজার ২৫৭ দশমিক ১০ পয়েন্টে স্থির হয়। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে দশমিক ০৩ ও ২ দশমিক ০১ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে ৮ দশমিক ২৯ ও ৭ দশমিক ০৩ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচক দশমিক ৩৪ ও দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়।
গতকাল সূচকের উন্নতি দিয়েই দিন শুরু করে দুই পুঁজিবাজার। ঢাকা শেয়ারবাজারে ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ২৫৬ দশমিক ০৬ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে সকাল পৌনে ১১টায় পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৮১ পয়েন্টে। এ সময় সূচকটির উন্নতি ঘটে প্রায় ২৫ পয়েন্ট। সূচকের এ অবস্থানেই বিক্রয়চাপ তৈরি হয়। কমতে থাকে সূচক। বেলা সোয়া ১১টায় সূচকটি নেমে আসে ৫ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে। পরবর্তী দুই ঘণ্টা সূচকের এ অবস্থানই ধরে রাখতে হিমশিম খায় বাজারটি। তবে বেলা ১টার পর ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে বাজার সূচক এবং দেড়টার দিকে তা পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৬৬ পয়েন্টে। তবে শেষ মুহূর্তে সৃষ্টি হওয়া বিক্রয়চাপের ফলে সূচকের এ অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি বাজারটি। দিনশেষে ৫ হাজার ২৫৭ দশমিক ১০ পয়েন্টে স্থির হয় ডিএসই সূচক।
ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ তিনটি আর্থিক খাতে গতকাল বড় ধরনের দরপতন ঘটে। দর হারায় এ তিনটি খাতের ৮০ শতাংশ কোম্পানি। অন্য খাতগুলোর মধ্যে দরপতনের শিকার হয় প্রকৌশল ও টেলিকমিউনিকেশন খাত। তবে রসায়ন, চামড়া, খাদ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, টেক্সটাইল ও সিমেন্ট খাতে ছিল মিশ্র আচরণ। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৩৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১২৬টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১৫৭টি। অপরিবর্তিত ছিল ৫২টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৪১টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৯৬টির দাম বাড়ে, ১১৮টির কমে এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে সায়হাম টেক্সটাইলস। ৫৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৯৩ লাখ ১৬ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়। ৪৩ কোটি ২৪ লাখ টাকায় ৬৬ লাখ ৭০ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ইনটেক ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার, কাট্টলি টেক্সটাইলস, সায়হাম কটন, খুলনা পাওয়ার, মুন্নু সিরামিকস, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, বিবিএস ক্যাবলস ও এসকে ট্রিমস।


আরো সংবাদ



premium cement