১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সূচকের উন্নতি দিয়েই সপ্তাহ শুরু পুঁজিবাজারে

-

দু’দিন পতনের পর ফের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফিরেছে দেশের পুঁজিবাজার। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারই সূচকের উন্নতি দিয়ে সপ্তাহ শুরু করে। তবে লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা সূচকের যে উন্নতি ঘটে মাঝামাঝি সময়ে সৃষ্ট বিক্রয়চাপের কারণে তার পুরোটাতে থাকেনি। এ সময় উভয় বাজারেই লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগের মূল্যবৃদ্ধি ঘটে।
গতকাল দিনের শুরুতে বিক্রয়চাপ কার্যকর হলেও দ্রুতই তা সামলে নেয় বাজারগুলো। পরবর্তিতে সূচকের ব্যাপক ওঠানামা করলেও গতি ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তবে দিনের শেষভাগে বিক্রয়চাপ তৈরি হলে বৃদ্ধি পাওয়া সূচকের একটি অংশ হারিয়ে বসে বাজারগুলো। দিনশেষে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রাখে। ৫ হাজার ২৪৪ দশমিক ৬২ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি রোববার দিনশেষে পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৫৬ দশমিক ০৬ পয়েন্টে। একই সময় ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেলেও ৩ দশমিক ০৬ পয়েন্ট হারায় ডিএসই-৩০ সূচক।
তবে দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবগুলো সূচকেরই কমবেশি উন্নতি ঘটে। এখানে সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচক ৭৩ দশমিক ৬২ ও ৪৪ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে ২ দশমিক ৯৮ ও ৯ দশমিক ১২ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি কমবেশি উন্নতি ঘটে বাজারগুলোর লেনদেনে। ডিএসই গতকাল ৫৫৬ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে যা আগের দিন অপেক্ষা ১ কোটি টাকা বেশি। গত বৃহস্পতিবার বাজারটির লেনদেন ছিল ৫৫৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে ২২ কোটি টাকা থেকে ২৪ কোটিতে পৌঁছে লেনদেন।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বাজার কিছুটা মন্দায় আক্রান্ত হলেও সামনের দিনগুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আবার গতি ফিরে আসবে বাজারে। এ মুহূর্তে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা দোদুল্যমান অবস্থায় আছেন। পরিস্থিতি অনুকূল দেখলে আবার বাজারে তাদের অংশগ্রহণ বাড়বে।
বিনিয়োগকারীরা এ কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। গতকাল বিভিন্ন ব্রোকার হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের ট্রেডিং ফ্লোরগুলোতে উপস্থিত বিনিয়োগকারীদের সাথে এ বিষয়ে আলাপ করলে তারা তাদের এ মনোভাবের কথা জানান। তারা মনে করেন এ মুহূর্তে বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশই সাইড লাইনে রয়েছেন। কারণ ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি এখনো তাদের মনে দাগ কেটে আছে। তাই সবাই এ মুহূর্তে সতর্ক। যদি পরিস্থিতি অনুকূল থাকে তাহলে সাইড লাইনে থাকা সবাই নতুন করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবেন।
গতকাল দিনের শুরুতে সাময়িকভাবে বিক্রয়চাপ সৃষ্টি হলেও দ্রুতই বাজারচিত্র পাল্টে যায়। একদিকে সূচকের ওঠানামা চলছিল অন্য দিকে ওঠানামার মধ্যেও কমবেশি উন্নতি ঘটছিল বাজার সূচকের। ৫ হাজার ২৪৪ দশমিক ৬২ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা ডিএসইর প্রধান সূচকটি এর মধ্যেও দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌঁছে যায় ৫ হাজার ২৭৩ পয়েন্টে। বেলা ১টার দিকে নতুন করে বিক্রয়চাপের শুরু। দিনের বাকি সময় এ চাপ কার্যকর থাকলে বৃদ্ধি পাওয়া সূচকের একটি অংশ হারায় ডিএসই। দিনশেষে ১১ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রাখে ডিএসই সূচক।
ব্যাংকিং খাতের ব্যাপক দরপতনের মধ্যেও গতকাল দুই বাজার সূচকের উন্নতি কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটনা। একই সঙ্গে বেশ কয়েকটি কোম্পানির রেকড পরবর্তী মূল্যসমন্বয়ও ছিল। তা সত্ত্বেও লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগের মূল্যবৃদ্ধিই বাজার সূচককে এগিয়ে নেয়। বিশেষ করে বীমা খাতেই মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা ছিল বেশি যা দিনের সূচক এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখে। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৩৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৪৪টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১২৮টি। অপরিবর্তিত ছিল ৪৩টির দাম। অপর দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২২০টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ১১১টির দাম বাড়ে, ৮৯টির কমে এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত থাকে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষস্থানে ছিল ইউনাইটেড পাওয়ার। ৩৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় ১২ লাখ ৩১ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় বেসরকারি এ বিদ্যুৎ কোম্পানির। ৩৪ কোটি ২৭ লাখ টাকায় ৩৭ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে একই খাতের খুলনা পাওয়ার ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল এসকে ট্রিমস, সায়হাম কটন মিলস, ইফাদ অটোস, ওয়াটা কেমিক্যালস, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, কনফিডেন্স সিমেন্ট, সিলভা ফার্মা ও ফলচুন স্যুজ।

 


আরো সংবাদ



premium cement