২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে পুঁজিবাজার

-

পুঁজিবাজারে ঝুঁকির মানদণ্ড হিসেবে মূল্য-আয় অনুপাত (পিই) কেই বিবেচনায় নেয়া হয়। যে বাজারের পিই যত কম বাজারটি ততই কম ঝুঁকিতে। সে হিসেবে এ মুহূর্তে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কম ঝুঁকিতে রয়েছে পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহান্তে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পিই নেমে আসে ১৪ দশমিক ৭৩ এ। ২০১৫ সালের পর পুঁজিবাজারটির পিই আর এ পর্যায়ে নামেনি। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিগত তিন সপ্তাহের টানা দরপতনের ফলে ব্যাপকভাবে হ্রাস পায় বিভিন্ন খাতে থাকা কোম্পানিগুলোর শেয়ারের মূল্যস্তর। আর এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পায় বাজার ঝুঁকি।
আগের দুই সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও ডিএসইর সব ক’টি সূচকের অবনতি হয়। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এ সময় ১৫ দশমিক ৬২ পয়েন্ট হারায়। ৫ হাজার ৪৪৩ দশমিক ৩১ পয়েন্ট থেকে সপ্তাহ শুরু করা সূচকটি গত বৃহস্পতিবার দিনশেষে নেমে আসে ৫ হাজার ৫২৯ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে। একইভাবে বিশেষায়িত দুই সূচক ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ হারায় যথাক্রমে ১০ দশমিক ৫১ ও ১৭ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট।
সূচকের অবনতি হলেও গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এ সময় দুই হাজার ৩৫৭ কোটি ৯৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকায় লেনদেন নিষ্পত্তি করে পুঁজিবাজারটি যা আগের সপ্তাহ অপেক্ষা ২০ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেন ছিল এক হাজার ৯৫২ কোটি ৫৬ লাখ ৬৮ হজার টাকা। একই হারে বৃদ্ধি পায় সপ্তাহিক গড় লেনদেন। আগের সপ্তাহের ৩৯০ কোটি ৫১ লাখ ৩৩ হাজার টাকায় স্থলে গত সপ্তাহে ডিএসইর গড় লেনদেন দাঁড়ায় ৪৭১ কোটি ৫৮ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।
সমাপ্ত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে প্রকৌশল ও বস্ত্র খাত। ডিএসইতে মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশ করে অবদান রয়েছে এ দু’টি খাতে।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ লিমিটেড সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, পুরো সপ্তাহে প্রকৌশল খাতে গড়ে ৬০ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর বস্ত্র খাতে প্রতিদিন গড়ে ৫৮ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ব্যাংক ও জ্বালানি-খাত ১৩ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ব্যাংক খাতে গড়ে ৪৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর জ্বালানি খাতে গড়ে ৫২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১১ শতাংশ লেনদেন করে বিবিধ খাত তালিকার তৃতীয় স্থানে ছিল। লেনদেনের শীর্ষে থাকা অন্য খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ-রসায়ন খাতে ১০ শতাংশ, ট্যানারি খাতে ৪ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন ও খাদ্য খাতে ৩ শতাংশ, আইটি, আর্থিক, জীবন বীমা, সিরামিক খাতে ২ শতাংশ করে লেনদেন হয়।
এ ছাড়া মিউচ্যুয়াল ফান্ড, পাট, সাধারণ বীমা, ভ্রমণ-অবকাশ ও সিমেন্ট খাতে ১ শতাংশ করে লেনদেন হয়েছে।
একই সূত্র অনুসারে বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে দর কমেছে ১৭ খাতে। অন্য দিকে দর বেড়েছে বাকি তিন খাতে।
পাওয়া তথ্য অনুসারে আলোচ্য সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে সিমেন্ট খাতে। এই খাতে ৩.৬৮ শতাংশ দর কমেছে। এরপরে টেলিকমিউনিকেশন খাতে ৩ দশমিক ৪০ শতাংশ দর কমেছে। অন্য খাতগুলোর মধ্যে ব্যাংক খাতে দশমিক ১৭ শতাংশ, সিরামিক খাতে ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ১.৫১ শতাংশ, খাদ্য খাতে ১.৮৮ শতাংশ, জ্বালানি-বিদ্যুৎ খাতে দশমিক ৩৫ শতাংশ, সাধারণ বীমা খাতে দশমিক ৮৫ শতাংশ, জীবন বীমা খাতে ১ দশমিক ০৯ শতাংশ দর কমেছে। এ ছাড়া আইটি খাতে ২.৩৫ শতাংশ, পাট খাতে ৩.১৫ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে দশমিক ৮৪ শতাংশ, আর্থিক খাতে দশমিক ৭৬ শতাংশ ও কাগজ খাতে ১.৭৬ শতাংশ দর কমেছে। অন্যান্য খাতগুলোর মধ্যে ওষুধ-রসায়ন খাতে দশমিক ৮০ শতাংশ, সেবা-আবাসন খাতে ১ দশমিক ৩২ শতাংশ, ভ্রমণ-অবকাশ খাতে ২.১০ শতাংশ দর কমেছে।
অন্য দিকে দর বেড়েছে তিন খাতে। সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে বিবিধ খাতে। এই খাতে ১৩.৬৯ শতাংশ দর বেড়েছে। আর ট্যানারি খাতে দশমিক ৪০ শতাংশ ও বস্ত্র খাতে দশমিক ৪১ শতাংশ দর বেড়েছে।
গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন। ১১৭ কোটি ৯১ লাখ ৯৮ হাজার টাকায় কোম্পানিটির দুই কোটি ৩৭ লাখ ৮৯ হাজার শেয়ার হাতবদল হয়। ৭৭ কোটি ৭৫ লাখ ৮৭ হাজার টাকায় এক কোটি পাঁচ লাখ ৮১ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে ব্র্যাক ব্যাংক ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে বিএসআরএম লিমিটেড, বেক্সিমকো লিমিটেড, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, লিগেসি ফুটওয়্যার, অ্যাডভেন্ট ফার্মা, কুইন সাউথ টেক্সটাইলস, গ্রামীণফোনও ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড।

 


আরো সংবাদ



premium cement