২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বরগুনার আমতলী-তালতলী উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১২২টি সাইক্লোন সেল্টার। সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার জন্য খোলা হয়েছে দু’টি কন্ট্রোল রুম।

বরগুনার আমতলী ও তালতলীতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর প্রভাবে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আকাশ অন্ধকাচ্ছন্ন ও হালকা থেকে মাঝারী বাতাস বইছে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত এখনো অব্যাহত আছে।

এ অঞ্চল ১০ নম্বর মহাবিপদ সংক্ষেতের আওতায় থাকায় দু’উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শুক্রবার বিকেলে জরুরী সভা করে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাব মোকাবেলা ও সকল প্রস্তুতি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা করেছেন।

এ সভায় স্থানীয়ভাবে দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। কার্যক্রমের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে টানানো হয়েছে সর্তকতা সংকেত পতাকা, দুই উপজেলার সর্বত্র মাইকিং করে সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

প্রস্তুত রাখা হয়েছে দু’উপজেলার ১২২টি সাইক্লোন সেল্টার। আমতলী পৌরসভাসহ উপজেলায় ৭৩টি ও তালতলী উপজেলায় ৪৯টি সাইক্লোন সেল্টারের পাশাপাশি বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্য রাতের কোন এক সময় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ইতোমধ্যে দু’উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে এলাকাবাসী। বেড়িবাঁধের বাহিরে বসবাসকারী লোকজন গতকাল শুক্রবার রাতেই আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করছে।

এসব আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজনদের শুকনা খাবার চিড়া, মুড়ি ও চিনি বিতরণ করা হয়েছে।

আমতলী পৌরসভার উদ্যোগে ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজনের জন্য বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার ও খিচুড়ীর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান আমতলী পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকসহ উপজেলা প্রশাসন, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগ উপজেলার সর্বত্র মাইকিং করে যাচ্ছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে আমতলী বিভিন্ন খেয়াঘাটের খেয়া ও ফেরী চলাচল। বন্ধ রয়েছে ঢাকা- আমতলীসহ অভ্যন্তরীন নৌ-রুটের সকল নৌযান। বন্ধ রয়েছে দু’উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) ইউনিট টিম লিডার মোঃ রিপন মুন্সী জানান, আমার ইউনিটের ১৫ জন্য স্বেচ্ছাসেবক একযোগে পৌরসভাসহ উপজেলার বিভিন্নস্থানে সর্তকতা সংকেত পতাকা উত্তোলন, মাইকিং করে সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য অনুরোধ করেছি।

আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আমতলী থানার উদ্যোগে পূর্ব প্রস্তুতিমূলক সর্তকতা ও ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী প্রস্তুতি হিসেবে দা, কুঠার, করাত সংগ্রহে রেখেছি। যাতে রাস্তাঘাটে গাছপালা পড়লে তা কেটে পরিস্কার করে দিতে পারি।

চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুজ্জামান বাদল খান বলেন, আমার ইউনিয়নের বৈঠাকাটা সাইক্লোন সেল্টারসহ সকল আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজনের মাঝে শুকনো খাবার বিরতণ করা হয়েছে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় এ উপজেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ মুঠোফোনে বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় বরগুনা জেলাসহ উপজেলার সকল সরকারী কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জেলার সাড়ে ৭ হাজার রেডক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবকরা সর্বত্র মাইকিং করে জন সাধারণকে সতর্ক করে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে অনুরোধ করছে। দুর্যোগ পরবর্তী চিকিৎসার জন্য গঠন করা হয়েছে ৪২টি মেডিকেল টিম। সার্বক্ষণিক সহযোগিতার জন্য আমতলী-তালতলীসহ জেলায় ৭টি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement