২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে শ্রমিক নিহতের ঘটনায় মামলা, ১৬ বাংলাদেশী শ্রমিক আটক 

-

গত ১৮ জুন মঙ্গলবার পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিহত বাঙালী শ্রমিকের লাশ গুমের চেষ্টার গুজবের খবরে ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের হামলা ও তান্ডবের ঘটনার দুই দিন পর বাংলাদেশী শ্রমিকদের বিরূদ্ধে ভাংচুর ও লুটপাটের মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার চায়না কর্তৃপক্ষের বিগ বস "ওয়াং লিং পিও" কলাপাড়া থানায় মামলাটি দায়েরের পর ১৬ জন বাংদেশী শ্রমিককে আটক করেছে পুলিশ।

এর মধ্যে সুজন তালুকদার (৩৫), জলিল ফকির (৪২), সজিব শরীফ (২০) ও মামুন তালুকদার (২০)কে গত বৃহস্পতিবার রাতে ধানখালী পাওয়ার প্লান্ট এলাকা থেকে চায়নাদের হারিয়ে যাওয়া ল্যাপটপ, সিপিইউ ও মনিটরসহ আটক করে কলাপাড়া থানা পুলিশ।

শুক্রবার সকালে তাদের সবাইকে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল মেজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয় বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন। আদালত তাদের সবাইকে পটুয়াখালী জেলা কারাগারে প্রেরণ করেছে। ধৃত সবার বাড়ি কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

এদিকে ঢাকা জেলার দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ ১২ জন বাংলাদেশী শ্রমিককে এ মামলায় গ্রেফতার করে কলাপাড়া থানার এসআই মোজাম্মেলের কাছে হস্তান্তর করেছে। এরা হলো নাসির, সুজন, আবদুল লতিফ, আতিকুর রহমান, ইমাম হাসান, মেহেদী হাসান, রাসেল আলী, শামিম মিয়া, মামুন, আইয়ুব, ফারুক ও বেল্লাল। এদের বাড়ী বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বলে জানা গেছে।

কলাপাড়া থানার এস আই মোজাম্মেল জানান, ১২ জনকে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ আটক করেছে। আমি গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিয়ে কলাপাড়া থানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি।

কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, নিহত বাংলাদেশী শ্রমিক সাবিন্দ্র দাসের মৃহ দেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এবং পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

অপরদিকে চীনা শ্রমিকের নিহতের ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাওয়ার প্লান্টে আটশতাধিক পুলিশসহ বিজিবি, র‌্যাব ও আর্ম পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দুপুরে কলাপাড়ার নির্মানাধীন পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের অভ্যন্তরে বয়লার থেকে পড়ে সাবিন্দ্র দাস নামের এক বাঙালী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় বাঙালী শ্রমিক ও চায়নিজ শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত বাঙালী শ্রমিকের লাশ গুমের চেষ্টার গুজবের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হামলার ঘটনা ঘটায়। বিকেল তিনটা থেকে অন্তত ছয় হাজার বাঙালী শ্রমিক ও তিন সহস্রাধিক চায়নিজ শ্রমিক দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জাং ইয়াং ফাং (২৬) নামের এক চাইনিজ শ্রমিক নিহত হয়। 

এদিকে ঘটনার তিন দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সকল ধরনের কাজ বন্ধ রয়েছে। অনেক বাংলাদেশী শ্রমিকরা পুলিশের গ্রেফতারের ভয়ে বাড়ী চলে গেছেন বলে জানা গেছে। 


আরো সংবাদ



premium cement