২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাওনা টাকা আদায়ে শেকলে বেঁধে নির্যাতন

শেকলে বাঁধা সুমন(ডানে) ও গ্রেফতারকৃত শহিদুল (ডানে) -

বরিশালের উজিরপুরের শোলক ইউনিয়নের দক্ষিণ কাংশি গ্রামে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য সুমন হালদার (৩৭) নামের এক যুবককে পাঁয়ে শিকল বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত পাওনাদার শহিদুল ইসলামকে (৫৫) গ্রেফতার করে শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।

নির্যাতনের শিকার সুমন হালদার একই উপজেলার বড়াকোঠা গ্রামের শিশু কুমার হালদারের পুত্র। আর গ্রেফতারকৃত শহিদুল ইসলাম দক্ষিণ কাংশি গ্রামের মৃত আক্কেল আলীর পুত্র। সুমনের স্বজনরা জানান, তিন বছর আগে বিদেশ যাওয়ার জন্য সুমন হালদারকে ৭৫ হাজার টাকা দিয়েছিল শহিদুল ইসলাম। পরবর্তীতে সমূদয় টাকা পরিশোধ করা সত্বেও সুদ বাবদ আরও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করে আসছিল শহিদুল। ওই টাকার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সুমন হালদারকে ইচলাদী এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যায় শহিদুল।

পরে তার বাড়িতে নিয়ে সুমনের পাঁয়ে শিকল দিয়ে খাটের পায়ার সাথে তালা মেরে নির্যাতন চালায় শহিদুল। সুমনের স্বজনরা শুক্রবার বিষয়টি জানতে পেরে থানা পুলিশকে অবহিত করেন। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, সুমনকে নির্যাতনের অভিযোগে তার স্ত্রী বিথী রানী হালদার থানায় মামলা দায়ের করার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিকল বাঁধা অস্থায় সুমনকে উদ্ধার করে। একই সাথে নির্যাতনকারী শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।

আরো পড়ুন:

উজিরপুরে কলেজ ছাত্রকে গলা কেটে হত্যা

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লায় ইমরান হোসেন হাওলাদার (২৫) নামে এক কলেজ ছাত্রকে গলা কেটে করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকালে শহিদ স্মরনীকা ডিগ্রী কলেজ সংলগ্ন (নিজ বাড়ি) ফসলী জমি থেকে তার গলা কাটা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত ইমরান উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের মুনসির তাল্লুক গ্রামের সরোয়ার হোসেন হাওলাদারের ছেলে। সে স্থানীয় ভবানীপুর হাজী তাহের উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ থেকে এ বছর বিএ পরীক্ষা দিয়েছে। ইমরানকে কে বা কারা হত্যা করেছে প্রাথমিকভাবে তা জানাতে পারেনি নিহতের পরিবার বা পুলিশ।

স্থানীয় ও নিহত ইমরানের স্বজনরা জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে প্রতিবেশী সেনা সদস্য আবুল কালাম আজাদের বাসায় বিপিএল এর ফাইনাল খেলা দেখতে যায় ইমরান। খেলা বিরতির সময় রাতের খাবার খেতে পাশেই নিজ ঘরে যায় সে। এ সময় ইমরানের মোবাইলে ফোনে একটি ফোন আসে। খাবার শেষে ফোনে কথা বলতে বলতেই ঘর থেকে বেরিয়ে যান ইমরান। পরে গভীর রাতেও ইমরান বাড়িতে ফিরে না আসায় এবং তার ইমরান মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় পরিবারের সদস্যরা প্রতিবেশী ওই সেনা সদস্যর বাড়িতে খুঁজতে গিয়েও ইমরানকে পাননি।

উজিরপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো: হেলাল উদ্দিন খান নিহতের পরিবার ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় এক নারী ফসলি জমিতে ইমরানের রক্তাক্ত লাশ দেখে চিৎকার দেয়। পরে স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। নিহতের গলা অর্ধ বিচ্ছিন্ন এবং ডান হাতের কব্জি বিভিন্নসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত জখম ছিলো। ধারণা করা হচ্ছে- তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তবে কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে আপাতত সে সম্পর্কে কিছুই বলা সম্ভব নয়।

উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, পূর্ব শত্রুতা কিংবা নারী সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কলেজ ছাত্র ইমরানকে হত্যা করা হতে পারে। হত্যার বিষয়ে তদন্ত ও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এদিকে এ ঘটনার পর থেকে এলাকা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পাশাপাশি নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement