২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ধরা পড়লো ২০০০ মণ ইলিশ

নদী থেকে আহরণের পর বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডের একটি আড়তে স্তুপ করে রাখা ইলিশ মাছ - নয়া দিগন্ত

প্রজনন মৌসুমের টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বরিশালের মোকামগুলো ইলিশে ভরে গেছে। তাও আবার সাগর নয়, নদীর ইলিশেরই দখল মোকাম ও আড়তগুলোতে। নিষেধাজ্ঞা শেষে গত রোববার মধ্যরাত থেকে জেলেরা নদী ও সাগরে মাছ শিকারে নেমেছেন। আর নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার ১২ ঘণ্টা পার হতে না হতেই বরিশালের একমাত্র বেসরকারি বৃহৎ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পোর্ট রোড ইলিশে ভরে গেছে।

এদিকে আমদানি বাড়ায় ইলিশের দামও কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার দুপুরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি মোকামেই প্রচুর ইলিশ রয়েছে, পাইকার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি খুচরা ক্রেতাদের ভিড়ও রয়েছে প্রচুর।

অবতরণ কেন্দ্রসংলগ্ন খালে ছোট ছোট ট্রলার-নৌকা এমনকি স্পিডবোটে করে স্থানীয় নদীর মাছ আসছে। প্রতিটি নৌযান থেকে বাঁশের সাজি, প্লাস্টিকের কাটাড্রাম, বস্তা বোঝাই করে শ্রমিকরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ নামাচ্ছেন। এসব মাছের মধ্যে ছোট থেকে বড় সব আকারের ইলিশই রয়েছে।
তবে অনেক ইলিশ মাছের পেটে এখনো ডিম রয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ ধরা পড়ার কারণে দাম কিছুটা কম থাকায় পাইকারী ক্রেতাদের সাথে সাথে খুচরা ক্রেতারাও মাছ কিনতে এ অবতরণ কেন্দ্রে ভিড় করছেন।

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের শ্রমিক আলতাফ হোসেন জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর প্রথমদিনেই মাছের চাপ বৃদ্ধি আমাদের সবার মুখে হাসি এনে দিয়েছে। ঝিমিয়ে থাকা পোর্টরোডে বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্যতা। এরকম চাপ আরো কয়েকদিন থাকবে বলেও জানান তিনি।

আড়তদার নাছির উদ্দিন খান জানান, এখন পর্যন্ত বরিশালের অবতরণ কেন্দ্রে আনুমানিক ২ হাজার মণের মতো মাছ এসেছে। আর এর সবই নদীর ইলিশ। আমদানি বেশি থাকায় দামও এখন কিছুটা কম।
তিনি আরো জানান, ইলিশের মাছের এরকম চাপ আরো ২/১ দিন থাকবে, তবে ১ নভেম্বর থেকে জাটকা নিধন বন্ধের কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর ইলিশের চাপ কমে যাবে।

ভাই ভাই ফিসের মোঃ কুদ্দুস হাওলাদার জানান, মাছের দাম কম ও আমদানি বেশি হওয়ায় বরফের দাম বেড়েছে। ২৫-৩০ টাকার একঝুঁড়ি ভাঙ্গা বরফ ৪০-৪৫ টাকা হয়েছে, অর্থাৎ এক ক্যান (পিস) আড়াইশ’ টাকার বরফ হয়েছে ৩শ’ টাকা।

এদিকে বরিশাল জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম দিনেই ইলিশের পরিমাণ সন্তোষজনক জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে সরকারের ইলিশ সংরক্ষণপদ্ধতি এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে সাগর ও নদনদীতে ইলিশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এখন প্রতিবছরই বড়বড় আকারের ইলিশ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সমন্বিত কর্মসূচির কারণেইএটা সম্ভব হয়েছে।
বর্তমানে পাইকারি বাজারে মণপ্রতি এলসি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ হাজার টাকায়, এলসির নিচের আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪-১৫ হাজার টাকায় এবং এর নিচের আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ হাজার টাকায়। আর এর চেয়েও ছোট আকারের মাছ মণপ্রতি ৬-৯ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে এক কেজি আকারের ইলিশ মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩২ হাজার টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মণপ্রতি ৪৮-৫০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বোমা উদ্ধারের ঘটনায় ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এদিকে বরিশালের হিজলা উপজেলায় পেট্রোল ও হাতবোমা উদ্ধারের ঘটনায় সাতজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার হিজলা থানার ওসি মাকসুদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি মাকসুদুর রহমান বলেন, সোমবার সন্ধ্যার পরে নাশকতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে বেশ কয়েকজন মিলে হিজলা-বরিশাল সড়কের কামারখালী এলাকায় একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক মিজান গাজীকে আটক করে পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি পেট্রোল বোমা ও ১২টি ‘বোমা সদৃশ বস্তু’ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় রাতেই পুলিশের এসআই খলিলুর রহমান বাদী হয়ে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলায় মিজান গাজীসহ সাতজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩২ জনকে আসামি করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement