২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে রাতভর নির্যাতন

নির্যাতনে আহত গৃহবধু সীমা খানম - নয়া দিগন্ত

দাবিকৃত যৌতুকের ২ লাখ টাকা না পেয়ে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের বড়বাশাইল গ্রামের গৃহবধু সীমা খানমকে (১৯) শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাষন্ড স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার গৃহবধু সীমা এখন গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

নির্যাতিত গৃহবধু সীমার মা নিলুফা বেগম জানান, এক বছর আগে গৌরনদী উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের এরশাদ আলী বেপারীর একমাত্র কন্যা সীমা খানমের (১৯) সাথে আগৈলঝাড়া উপজেলার বড়বাশাইল গ্রামের মোতালেব ফকিরের বড় ছেলে মানিক ফকিরের (২৬) পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সেসময় জমি বিক্রি করে জামাতা মানিককে যৌতুক হিসেবে নগদ দেড়লাখ টাকা, সোয়া ২ ভরি স্বর্ণালংকার, খাট, আলমিরাসহ ৩ লক্ষাধিক টাকার মালামাল যৌতুক দেয়া হয়।

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন গৃহবধু সীমা খানম অভিযোগ করেন, গত ২ মাস ধরে তার স্বামী ও দেবর ড্রেজার মেশিন কেনার জন্য আরো দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য তাকে বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করে আসছিল।

তিনি আরো জানান, দাবিকৃত যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার করায় প্রায়ই স্বামী মানিক ফকির, দেবর ছালাম ফকির, শ্বশুর মোতালেব ফকির, শাশুড়ি রওশনারা বেগম তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। দাবিকৃত যৌতুকের ২ লাখ টাকা না পেয়ে স্বামী মানিক ফকির গত ২৬ অক্টোবর গভীর রাতে সীমার মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধে। এরপর রাতভর তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।

তার সারা শরীরে কিল-ঘুষিসহ রড দিয়ে পেটানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় বাঁচার জন্য গৃহবধু সীমা আর্তচিৎকার করলেও কেউ তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেনি।

তিনি বলেন, পরদিন ২৭ অক্টোবর ভোরে সীমাকে ঘরে আটক রাখা হয়। যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখার বিষয়টি ওইদিন সকালে সিমা তার ভাই জুয়েল বেপারীর জানানোর পর তার পরিবারের সদস্যরা সীমাকে উদ্ধার করতে যায়।

নির্যাতিতার সেজভাই জুয়েল বেপারী বলেন, তাৎক্ষনিক আমি আমার বাবাকে সাথে নিয়ে ওই বাড়িতে যাওয়ার পর ভগ্নিপতি মানিক ও তার স্বজনরা আমাদের গালাগাল করে মারধর করার জন্য উদ্যত্ত হয়। এরপর আমি ও আমার বাবা আগৈলঝাড়া থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিলে থানার এসআই মোঃ জসিম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় সীমাকে উদ্ধার করেন।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে সীমার স্বামী মানিক ফকির বলেন, সংসারে মাঝেমধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়েই থাকে। এটা স্বাভাবিক বিষয়।

আগৈলঝাড়া থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন জানান, এ ব্যাপারে নির্যাতিত গৃহবধুর পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেয়া হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement