পাথরঘাটায় ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসক ২ জন!
- এএসএম জসিম, পাথরঘাটা (বরগুনা)
- ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ১০:২০, আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ১০:২৪
যুগযুগ ধরে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার প্রায় চার লক্ষাধিক মানুষ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র দুইজন ডাক্তার দিয়েই চলছে চিকিৎসা সেবা। ২৮টি চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র দুইজন। ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান ও কর্মচারী সংকটে কারণে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসাপাতালে চিকিৎসার বেহাল দশা। নামসর্বস্ব চলছে এর কার্যক্রম।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তাসহ ২৯টি চিকিৎসকের পদ। উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ও দু’জন সহকারী চিকিৎসক রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে বাকি পদগুলো। মাঝে মধ্যে দু’একজন ডাক্তার এখানে যোগদান করলেও তদবির করে দুয়েক মাসের ব্যবধানে অন্যত্র চলে যান।
গত দুই মাস আগে ডা: মো. ফয়সাল নামের একজন চিকিৎসক এ হাসপাতালে যোগদান করলেও এক মাসের মধ্যে অন্যত্র বদলী হয়ে যান। এখানে দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলছে ডাক্তারদের যোগদান ও বদলীর পালা।
গাইনী চিকিৎসক কিছুদিন থাকেলও ডেন্টাল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদটি হাসপাতাল শুরু থেকেই খালি। হাসপাতালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্যাথলজি ল্যাব ও এক্সে-রে মেশিন শুরু থেকেই বাক্সবন্দী। গত ১৮ বছর যাবত ল্যাব টেকনিশিয়ান ও এক্সে-রে অপারেটর পদ শূন্য থাকায় সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে এসব কার্যক্রম।
ভুক্তভোগীরা নিরুপায় হয়ে পার্শ্ববর্তী ক্লিনিক থেকে গলাকাটা খরচে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। এছাড়াও যেতে হচ্ছে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ও বিভাগীয় শহর বরিশালে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসক ২৮ জনের বিপরীতে আছে ২৬ জন, ২৪ জন নার্স থাকার কথা থাকলেও সেখানে আছে আটজন, আয়া ছয়জনের বিপরীতে দুই জন এবং ওয়ার্ড বয় তিনজন থাকার কথা থাকলেও আছে এক জন। দুইজন মাত্র চিকিৎসক আনোয়া উল্যাহ ও কাওছার আহমেদকেই সামলাতে হচ্ছে জরুরী বিভাগ ও আবাসিকসহ অন্যান্য বিভাগের রোগীকে।
হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে অসংখ্য রোগী লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করছেন। একমাত্র ডাক্তার আনোয়ার উল্যাহ রোগী দেখছেন। অনেকে আবার চিকিৎসা না পেয়ে ক্ষোভে চলে যাচ্ছেন বাড়ি।
ভুক্তভোগী রোগী আব্দুল, ছোমেদ, ছগিরসহ বেস কয়েকজনে জানান, প্রতিদিন অসংখ্য রোগী এ হাসপাতালে আসেন, লম্বা লাইন দেখে অনেকে আবার চলে যান। আবার অনেক ওষুধ কোম্পানির লোকজনও অফিসের সময় অনিয়ম করে পরিচিত অনেক রোগীকে ভিতরে ডুকিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে দেন। আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকলেও অনেক সময় না দেখিয়েই চলে যেতে হয়।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাসুমুল হক খান জানান, এত বড় উপজেলায় দুইজন ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হচ্ছে। চিকিৎসকের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার চাহিদা পাঠানো সত্ত্বেও কোনো ফল হচ্ছে না আমাদের।