২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিধবাকে মাথার চুল কেটে নির্যাতন!

বিধবার মাথার চুল কেটে দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত উত্তম চৌধুরী। - ছবি: নয়া দিগন্ত

বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক বিধবা নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে মাথার চুল কেটে দেয়া ও পায়ে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

থানায় দায়ের করা ভুক্তভোগীর মামলা সূত্রে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আফজাল হোসেন জানান, গত দেড়যুগ আগে উপজেলার রতপুর ইউনিয়নের রতপুর গ্রামের কানন চৌধুরীর স্বামী মারা যায়। স্বামীর মৃত্যুর পর বৃদ্ধা শ্বাশুরী ও ছেলে মেয়েদের নিয়ে দিনমজুরের কাজ করে কোন রকমে স্বামীর ভিটায় বসবাস করে আসছিল কানন।

দেড় বছর আগে তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি মেয়ে বিথী রানীকে মাদারীপুর সদর থানার পূর্ব রাজদী গ্রামের ননী গোপাল দাসের ছেলে মিন্টু দাস এর সাথে বিয়ে দেন তিনি। মেয়ে বিথীর স্বাভাবিক জ্ঞান বুদ্ধি না থাকায় মেয়ে ও মেয়ে জামাতা কানন তার নিজের বাড়িতে রেখে সেখানে তার নিজের সম্পত্তিতে বসত ঘর নির্মাণ করতে কিছু গাছ কাটেন। মেয়ে জামাতাকে ঘরজামাই রাখতে ও গাছ কাটতে বাঁধা দেয় একই বাড়ির লোকজন। তারা বিথী ও বিথীর জামাতা ঝন্টুকে ওই বাড়িতে থাকতে দেবে না বলে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধুমকি দিয়ে আসছিল।

বাড়ির লোকজনের বিরোধিতার পরেও মেয়ে বিথী ও মেয়ে জামাতা ঝন্টুকে বাড়িতে রাখায় ওই বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বিধবার বিরুদ্ধে অপমানজনক মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর খুব সকালে বিধবার বসত ঘরে প্রবেশ করে তার উপর মধ্যযুগীয় হামলা চালায়। মেয়ে জামাতা মিন্টু তার শাশুড়িকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাকেও এলোপাথারি মারধর করে জখম করে তারা।

এসময় বিধবাকে জোর করে আটকে তার মাথার চুল কেটে দিয়ে পায়ে লোহার শিকল দিয়ে খুঁটির সাথে বেঁধে রাখে হামলাকারীরা। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ভুক্তভোগী বিধবা কানন চৌধুরী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় নির্যাতনকারী একই বাড়ির মৃত রাজ্যেশ্বর চৌধুরীর ছেলে উত্তম চৌধুরী (৪৫) কে মঙ্গলবার রাতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জামাল হোসেন নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃতকে বরিশাল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

আরো পড়ুন: সরকার দলীয় এমপির অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের দাবিতে মামলা
পাথরঘাটা (বরগুনা) সংবাদদাতা 
 ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:২২


বরগুনা-০২ (পারঘাটা-বামনা-বেতাগী) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন বরগুনা মহকুমার রাজাকার কমান্ডার খলিলুর রহমানের ছেলে শওকত হাচানুর রহমান রিমনের অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার দাবিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এঘটনা সংসদ সদস্য রিমন ছাড়াও তার পিতা রাজাকার কমান্ডার ও পিস কমিটির সভাপতি মৃত খলিলুর রহমান ও তার চাচা মো: শাহজাহান মিয়াকে আসামী করা হয়েছে।

রোববার পাথরঘাটা উপজেলার মাদারতলী গ্রামের ইউনুছ খান নামের এক ব্যাক্তি পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। এসময় আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্বাস উদ্দিন বাদীর আর্জি শোনার পর রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।

মামলা সত্রে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন খলিলুর রহমান ও তার বড় ভাই শাহ্জাহান মিয়া পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগীতায় রাজাকার, আলবদর, আলসামস বাহিনী গঠন করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কর্মকাণ্ডে ভূমিকা রাখেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের নাগরিক মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সমর্থনকারীদের নির্যাতন, হত্যা, নারী ধর্ষণ, সম্পদ লুট ও বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করে বিভিষীকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন।

মুক্তিযুদ্ধকালীন বাদীর প্রতিবেশী মাদারতলী গ্রামের আ: মোতালেব কেরানীকে নির্যাতন শেষে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া আসামীরা বিভিন্ন বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ করে টাকা, স্বর্ণলাংকার ও অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। মামলার দুই নম্বর আসামী খলিলুর রহমান পাকিস্তানের স্বপক্ষে সক্রিয় অবস্থান নেওয়ায় তৎকালীন পাকিস্তান জান্তারা তাকে বরগুনা মহকুমা পিস কমিটির সভাপতি নির্বাচিত করেন।

মামলার বাদী ইউনুছ খান বলেন, আসামীরা আমার বাড়িসহ আমার এলাকার ৪টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ২নম্বর আসামী খলিলুর রহমান বরগুনা মহাকুমা ব্যাপী সাধারণ মানুষের টাকা, স্বর্ণলংকার ও সম্পদ লুটপাট করে স্থাবর-অবস্থাবর সম্পদের পাহাড় গড়েন। যা তার একমাত্র পুত্র ৩ নম্বর আসামী বর্তমান সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমন এই অবৈধ সম্পদের সুবিধা ভোগ করছে। তাই আসামীর অবৈধ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের নিরূপনসহ রাষ্ট্রের পক্ষে বাজেয়াপ্ত করার জন্য আদালতের নিকট প্রার্থনা জানিয়েছি।


তিনি আরো বলেন, রাজাকারপুত্র রিমন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাবার আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্ঠা করছে। সেই সাথে ত্যাগী আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। রিমনের সমর্থকরা আমাকে আদালত চত্বরে বসে হুমকি দিয়েছে। যে কোন সময় আমার উপর হামলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এবিষয়ে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি।

 

আরো পড়ুন: বরগুনায় প্রেমিকাসহ সেই ছাত্রলীগ নেতা জেলহাজতে

গোলাম কিবরিয়া, বরগুনা ও এএসএস জসিম, পাথরঘাটা, ১৯ জুলাই ২০১৮


বরগুনার পাথরঘাটায় উপজেলা ছাত্রলীগেরসেই নেতা অন্যেও বিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় আদালত তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরন করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হলে হাকিম মঞ্জুরুলই সলাম জামিন নামঞ্জুর কওে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরন করেন। 

রুহুল আমিন খলিল পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পদক ও কালমেঘা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত হাবিবুরর হমানের ছেলে। হুমায়রা আক্তার সুমী চরদুয়ানী ইউনিয়নের মো. শাহিন খানের মেয়ে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা চরদুয়ানী ইউনিয়নের মো.শাহিন খানের মেয়ে হুমায়রা আক্তার সুমীর সাথে পাথরঘাটা উপজেলা ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পদক রুহুল আমিন খলিল এর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক পর্যায় গত ১৭ জুন আনুষ্ঠানিক ভাবে মঠবাড়িয়া উপজেলা আয়নাল হক এর ছেলে শাহাদাত এর সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের খবর শুনে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা খলিল গত ৯ জুলাই সুমিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সুমির দাদা মো. ফজলুল হক খান পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৪ জনকে আসামী করে মামলা করেন। মামলার খবর শুনে প্রেমিক প্রেমিকা আদালতে হাজির হলে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

পাথরঘাটা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্জ সহকারী কামাল হোসেন জানান, চার জনের মধ্যে ছেলে ও মেয়ের জামিন নামঞ্জুর করেছেন। বাকি দুই আসামী জলিল ও আছিয়াকে জামিন দেয়া হয়েছে।

মেয়ের দাদা মোফজলুল হক খান জানান, আমার নাতি সুমিকে ফুসলিয়ে নগদ টাকা ও স্বার্ণালংকারসহ নিয়ে যায়।


আরো সংবাদ



premium cement