২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পায়রা নদীর ব্লক সরে যাচ্ছে ॥ ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে বরগুনা

-

পায়রা নদীর ভাঙ্গনে বরগুনা সদর উপজেলার পুরাকাটা ও বাশবুনিয়ার বেরিবাধ নদী গর্ভে ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া পায়রা ও বিষখালী নদীর ভাঙ্গনে শহর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক সরে যাওয়ায় ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে বেতাগী ও আমতলী পৌর শহর। ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ হুমকির মুখে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে বিলিন হয়ে যাবে পাউবো অফিস, খাদ্যগুদাম, মুক্তিযোদ্ধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাটসহ বহু স্থাপনা।
জানাগেছে, পায়রা ও বিষখালীর ভাঙ্গনে বরগুনা সদর উপজেলার বাশবুনিয়া,পুরাকাটা,বড়ইতলা,নলটোনা,বামনার রামনা,খোলপটুয়া, বেতাগী পৌরশহর, বদনীখালী, মোকামিয়া,আমতলী পৌরমহর রক্ষাবাধসহ প্রায় শতাধিক গ্রাম নদীতে বিলীন হতে চলছে। আমতলী পৌর শহরকে পায়রা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় ফেরীঘাট থেকে পাউবোর অফিস পর্যন্ত ১২০০ মিটার শহর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের অধিনে সিসি ব্লক ফেলে শহর রক্ষাবাধঁ নির্মাণ করা হয়। ওই সময় নি¤œমানের কাজ করায় অল্পদিনে মধ্যেই ব্লক সরে যেতে থাকে। ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, মহাসেন ও রোয়ানুর প্রভাবে আমতলী পৌর শহর সংলগ্ন পায়রা নদীর সিসি ব্লক সরে ও ভেঙ্গে যায়। এতে ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট, কাঠপট্রি, পুরাতন লঞ্চঘাট ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকা নদী বক্ষে বিলিন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০১৪ সালে সিডর প্রকল্পের আওতায় আমতলী পৌরশহরকে পায়রা নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষায় ১২০০ মিটার ব্লক মেরামতের কাজ অন্তর্ভুক্ত করে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমবিইএল ১১৫ মিটার পায়রা নদীর তীর সংরক্ষনে সিসি ব্লক সংস্কার করে অবশিষ্ট কাজ না করেই চলে যায়। এতে আরো হুমকির মুখে পড়ে পৌর শহর।
পায়রা নদী সংলগ্ন শহর রক্ষা বাঁধ এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, পায়রা নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের ¯্রােতে ঢেউ তীরে আঘাত হানে। এতে ব্লকগুলো সরে যাচ্ছে এবং দুর্বল অনেক ব্লক ভেঙ্গে নদীতে বিলিন হচ্ছে। আমতলী স্লুইজগেট এলাকায় দু’পাশের ব্লক সরে গেছে। বাড়ীঘর ভেঙ্গে যাচ্ছে। ফেরিঘাট, শ্বশ্মানঘাট, সবুজবাগ মুক্তিযোদ্ধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, লঞ্চঘাট ও খাদ্যগুদাম হুমকির মুখে পড়েছে।
শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় বসবাসকারী আবদুর রাজ্জাক হাওলাদার জানান, পূর্ব থেকেই নদী ভেঙ্গে ব্লক সরে যেত। সিডরের প্রভাবে ব্লক সরে গিয়ে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে এ এলাকায় বসবাসরত মানুষের দূর্ভোগ আরও ঘনিভূত হয়েছে।
কালাম শিকদার বলেন, ব্লক সরে পায়রা নদীতে বিলীন হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকাসহ পৌর শহর হুমকির মুখে পরেছে। অতিদ্রুত ব্লক সংস্কার করা না হলে তীর ভেঙ্গে বাড়ীঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
বরগুনা পৌর মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, পায়রা নদীর ভাঙ্গনে প্রতিদিনই বরগুনা সদও উপজেলার আয়তন ছোট হচ্ছে। ভাঙ্গনে বহু স্থাপনা হুমকির মুখে পরেছে। পুরাতন সিসি ব্লক সরে নদীতে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত শহর রক্ষা বাধ সংস্কার করা না হলে ভাঙ্গনের ভয়াবহতা আরো বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, এ শহরকে রক্ষায় তিন কিলোমিটার পায়রা নদীর তীরে সিসি ব্লক নির্মাণ করা প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে দ্রুত সিসি ব্লক নির্মাণের দাবী জানাই।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলম বলেন, পঞ্চম স্তরের প্রজেক্টে আমতলী ও বেতাগী পৌর শহর রক্ষায় পায়রা নদীর ব্লক সংস্কারের প্রস্তবনা দিয়েছি।
পাউবোর বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মশিউর রহমান নয়াদিগন্তকে বলেন, বরগুনায় নদীর ভাঙ্গনের তীব্রতা একটু বেড়ে গেছে, ভাঙ্গনের সদর উপজেলার শহর রক্ষা বাঁধের অধিকাংশ বিলীন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে বরগুনা শহর রক্ষায় প্রস্তবনা দেয়া হয়েছে। বাজেট পাওয়া গেলে কার্যক্রম শুরু করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement