২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে ২ শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন

-

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বুক চিরে প্রবাহিত সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে গুঠিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে গুঠিয়া ইউনিয়নের আশোয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এলজিইডির প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আশোয়ার সাইক্লোন শেল্টার।

গত কয়েক মাসে সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে দাসেরহাট খেয়াঘাটে জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত যাত্রীছাউনীটি বিলীন হয়েছে নদী গর্ভে। ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে নদী সংলগ্ন প্রায় সাতটি গ্রামের কয়েক শতাধিক পরিবার। চলতি বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে উজিরপুরের সন্ধ্যা নদী লাগোয়া দাসেরহাট, কমলাপুর, আশোয়ার, চথলবাড়ি, নারকেলী, চৌধুরীর হাট, কালিরবাজার ভেড়ীবাঁধ ও শিকারপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছে এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সন্ধ্যা নদীর তীব্র স্রােতে গুঠিয়া অংশের চরমলঙ্গা থেকে আশোয়ার পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা জুড়ে কয়েক বছর ধরে অব্যাহত ভাঙ্গন চলছে। এতে উজিরপুরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে রৈভদ্রাদী, দাসেরহাট, হানুয়া, আশোয়ার গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বিশাল অংশ। নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে শত বছরের পুরাতন ভিটাবাড়ি, ভেড়ীবাধ, রাস্তাঘাট, স্কুল-মসজিদসহ ফসলী জমি। এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় অবশিষ্ট পরিবারগুলো ঘর-বাড়ি নিয়ে অন্যত্র আশ্রয়ের সন্ধানে হন্য হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

তারা আক্ষেপ করে বলেন, গত কয়েক বছরে নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে আমরা সর্বস্ব হারিয়ে এখন দিশেহারা। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত আমাদের সহযোগীতা দূরের কথা কোনো খোঁজ খবরও নেয়া হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত কয়েক মাসের নদী ভাঙ্গনে গুঠিয়া ইউনিয়নের দাসেরহাট খেয়াঘাট সংলগ্ন বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানঘর নদীর বুকে ঢলে পড়েছে। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়া হলে যে কোন সময় বাজারের শতাধিক দোকনঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। একইভাবে উপজেলার চৌধুরীরহাট বাজারটি বিলীনের উপক্রম দেখা দিয়েছে। তাছাড়া গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নদীতে জোয়ারের পানির চাপ ও তীব্র স্রােত থাকায় ভাঙ্গনের পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে গুঠিয়া ইউনিয়নের হানুয়া, কমলাপুর, দাসেরহাট, বান্না ও আশোয়ার গ্রামের বিস্তীর্ন এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

আশোয়ার গ্রামের (৪০), মো. কাওসার (১৮) ও নাঈম সিকদারসহ অনেকে জানিয়েছেন, আশোয়ার গ্রামের এসাহাক হাওলাদার, মো. সেলিম হাওলাদার, কালাম হাওলাদার, নুরুল হক রাঢ়ী, সুলতান খান, মানিক বালীসহ প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এসব পরিবারের লোকজন তাদের শেষ সম্বল ভিটেমাটি হারিয়ে এখন দিশেহারা। এদের মধ্যে কেউ কেউ উজিরপুর পৌর এলাকায় ঘর ভাড়া করে আবার কেউবা নিকটাত্মীয়দের বাড়িতে পরিবারের লোকজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

তারা আরও জানান, হানুয়া গ্রামের তিনের এক অংশ ইতিমধ্যে নদী গর্ভে গ্রাস হয়ে গেছে। ভিটাবাড়ি হারিয়েছে অনেক পরিবার। এ বিষয়ে গুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের দাসেরহাট ও আশোয়ার এলাকার বিভিন্নস্থানে বেশ কিছুদিন যাবত সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। কিন্তু এরপরও ভাঙ্গন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বলে তিনি অভিযোগ করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনি অবগত নন, তবে খতিয়ে দেখে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু সাঈদ জানিয়েছেন, ভাঙ্গন রোধে ৭টি পাইপ লাইন আছে। সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন রোধে তিনি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ধুনটে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃদ্ধের মৃত্যু বাকৃবির এক্স রোটারেক্টরর্স ফোরামের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত পাবনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড, হিট স্ট্রোকে মৃত্যু ১ দাগনভুঞায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির ঘটনায় আ’লীগ নেতাকে শোকজ দখলে থাকা ৪ গ্রাম আজারবাইজানকে ফিরিয়ে দেবে আর্মেনিয়া স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর আত্মহত্যা! কুলাউড়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু যেসব এলাকায় রোববার ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে পলাশ প্রেসক্লাবের সভাপতি মনা, সম্পাদক রনি তীব্র গরমে আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না বগুড়া পশ্চিম সাংগঠনিক জেলা জামায়াতের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সকল