১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সূর্যভানু বেগমের পানিই জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম

-

‘মোরা বাবা কাম না করলে খামু কি? কেউ তো মোগো লইগা খাওন বাড়ি লইয়া আয় না। বেয়ান হইতে রাইত পর্যন্ত হগোল দোহানে পানি দিয়া যে ট্যাহা পাই ওইয়া দিয়া চাউল কিনি , ওইতেই মোর সংসার চলে।’ এ কথাগুলো বলছিলেন বেতাগী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সূর্যভানু বেগম। তিনি এক অভাবনীয়, অসহনীয় , বর্ষার সময়ও বিষ্টিতে ভিজে ও প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে, অত্যন্ত দুঃখ-কষ্ঠের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন দোকানে পানি সূর্যবানু’র সংসার চলে। দেখলে মনে হবে ষার্টোধ বুড়ি। কিন্তু বয়স ৪৫ বছর। দোকানের চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ করার জন্য সময় মত খেতে পারে না। কখনও সকালের খাবার দুপুরে, কখনও দুপুরের খাবার রাতের খাবারের সাথে খেতে হয়।

৯ বছর পূর্বে তার স্বামী আব্দুস ছোমেদ মারা যায়। সূর্যভানু’র স্বামী আব্দুস ছোমেদ মারা যাওয়ার পূর্বে থেকেই কোন কাজ করতে না পারায় সংসারের উর্পাজনের পথ বেছে নেন তিনি। প্রথমে ঝিঁয়ের কাজ করে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করত। পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৩ জন । ছেলে শাহীন (২১) মাত্র ৪র্থ শ্রেণি পর্যন্ত এবং মেয়ে মুন্নি (১৯) মাত্র ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার পড়ালেখা’র সুযোগ পায়। স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর সংসারে টানাপোড়েন পরলে শাহীন ও মুন্নিও উপার্জনের জন্য পথ বেছে নিতে হয়। মাত্র ১ বছর পূর্বে মেয়ে মুন্নিকে বিয়ে দেওয়া হয়।

সূর্যবানু বেগম সকাল ৭টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত বাসস্ট্যান্ডের বিভিন্ন চায়ের দোকানে কলসি ভর্তি পানি দেয়। দোকানের চাহিদা অনুযায়ী কোন দোকানে টিউবওয়েলের পানি আবার কারো দোকানে রান্নার জন্য খালের পানি দিতে হয়। এ থেকে তিনি কোন দিন ১৫০ টাকা , কোন দিন ২৫০ টাকা আয় করে থাকেন। ওই কষ্টার্জিত উর্পাজনের টাকা দিয়েই চলে তার সংসার। শারীরিক বিভিন্ন রোগ-শোকের কারণে এবং বিরামহীন কাজ করতে করতে তার বয়স দেখলে মনে হবে ষার্টোধ বুড়ির মতো হয়। সুর্যবানু বলেন,‘ মুই এ্যহন আর আগের মতো কাম করতে পারি না।’ এ ব্যাপারে বেতাগী পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,‘ আমরা প্রায়ই পৌরসভা থেকে আর্থিক সহযোগিতা করে থাকি।’


আরো সংবাদ



premium cement