২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইলিশ নেই তাই জমে না মাছের আড়ৎ

ইলিশ নেই তাই জমে না মাছের আড়ৎ। ছবি - নয়া দিগন্ত।

আগে এই ঘাট থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ লাখ টাকার ইলিশ রপ্তানি হতো, কিন্তু এখন হচ্ছে মাত্র ৪০ হাজার টাকার ইলিশ। এভাবে চলতে থাকলে একদিকে যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হবে আড়ৎদাররা অন্যদিকে জেলেরাও অভাব-অনাটনে না খেয়ে কাটাবে। ইলিশ সংকট নিয়ে ভোলা সদরের জোড়খাল ঘাটের আড়ৎদার মাসুদ রানা এ কথাগুলোই বলেছিলেন।
তিনি বলেন, আমাদের এ ঘাটে ১৩টি মাছের গদি রয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ ৫০ লাখ, ৬০ লাখ এমনকি ১ কোটি টাকাও দাদন দিয়েছেন, কিন্তু তারা ভয়াবহ লোকসানের মুখে রয়েছেন। কারন, নদীতে ইলিশ নেই, তাই আড়তের ৭০ জন শ্রমিক বেকার বসে সময় পার করছেন। বুধবার রাতে পর্যন্ত মাত্র ৪০ হাজার টাকার মাছ রপ্তানি হয়েছে। বৃহস্পতিবার তা কমে মাত্র ২০ হাজার হয়েছে।
তিনি বলেন, ১০০ জন জেলেকে ৩৫ লাখ টাকা দিয়েছি, অথচ প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে, শ্রমিকদের বিনা কাজে বেতন দিতে হচ্ছে। অথচ এমন দিনে গত বছর ঘাট বেশ জমজমাট ছিলো। ভোলা সদরের অন্যতম একটি বড় মৎস্য অবতরন কেন্দ্র জোড়খাল।
ভোর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মাছের কেনা-বেচা হয় এ ঘাটে। তাই জেনারেটর ও সৌর বিদ্যুতের আলোতে আলোকিত মাছের ঘাট, কিন্তু নদীতে ইলিশ নেই তাই ঘাট জমে উঠেনি।
জেলে-পাইকারদের হাকডাকে মুখরিত থাকার কথা থাকলেও ঘাটে নিরবতা। জেলে পল্লীতেও যেন হাহাকার।
জোড়খালে গিয়ে দেখা গেছে, ঘাটে নোঙ্গর দেয়া শতাধিক নৌকা, পাশেই মাছের আড়ত। সেখানে জেনারেটর ও সৌর বিদ্যুতে বাল্ব জলছে। মাঝে মধ্যে দু'একটি নৌকা তীরে ভীড়লেও তাতে মাছ নেই, কারো ট্রলারে ১০টি কারো বা ১২টি ইলিশ ধরা পড়ছে।
আড়ৎদার রব মাল, আলতাব মাতাব্বর ও কামাল চৌধুরীসহ অনেকের আড়ৎ থেকে জেলেদের দাদন দিয়েছেন, কিন্তু তাদের আড়ৎ ফাঁকা। নদীতে মাছ নেই আড়ৎ জমে উঠেনা, ঘাটে আলো আছে, হাকডাক নেই।

আড়ৎদার সাজাহান বেপারী বলেন, নদীতে সারাদিন জাল বেয়ে ইলিশ পাচ্ছে না জেলেরা। তাই আড়ৎদাররা লোকসানের মুখে পড়েছে।

আড়ৎদারা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পর্যন্ত মাত্র ২০ হাজার টাকার মাছ কেনা-বেচা হয়েছে, জেলে ও বেপারীদের দুর্দশার শেষ নেই। শুধু জোড়খাল নয়, জেলার শতাধিক মৎস্যঘাটের একই অবস্থা।

তবে মাছের সংকটের বিষয়ে আড়ৎদাররা বলছেন, নদীতে বেপরোয়া কারেন্ট জালের ব্যবহার, ডুবোচর এবং নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারনে সাগর থেকে চ্যানেলে মাছ আসতে বাধা পাচ্ছে, তাই মাছ আসছে না, ইলিশ মিলছে না জেলেদের জালে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ রেজাইল করিম বলেন, জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়তে আরো দুই মাস লাগতে পারে। তখন জেলেদের সংকট কেটে যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement