১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চালকের আসনে কিশোর, হেলপার শিশু

বারইয়ারহাট রুটে লেগুনা চালাচ্ছে এক কিশোর। ইনসেটে লেগুনার পেছনে যাত্রী ডাকছে এক শিশু হেলপার : নয়া দিগন্ত -

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চালকের আসনে বসে গাড়ি চালাচ্ছে কিশোররা। অথচ এ সময় তাদের স্কুলে পড়াশোনার কথা। গাড়ির পেছনে হেলপারের দায়িত্ব পালন করছে শিশুরা। বারইয়ারহাট- থেকে বড়দারোগাহাট-সীতাকুণ্ড ব্যস্ত এই সড়কে প্রতিদিন দেখা যাচ্ছে ১০ থেকে ১৬ বছর বয়সের শিশু-কিশোরদের। তাদের কোনো লাইসেন্স নেই। মাত্র কয়েক দিন গাড়িতে হেলপারি করেছে স্টিয়ারিং ধরে চালক বনে যাচ্ছে তারা।
যাত্রীরা বলেন, অল্প বয়সী এসব চালক গাড়ি চালায় বেপরোয়া গতিতে। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
গত শনিবার সকালে ১ ঘণ্টার ব্যবধানে বারইয়ারহাট-বড়দারোগাহাট রুটে চারজন কিশোরকে সেইফ লাইন ও লেগুনা চালাতে দেখা গেছে। তাদের বয়স বড় জোর ১৩ থেকে ১৫ বছর হবে। একজনের নাম বাবলু, আরেকজনের নাম আনোয়ার।
দুর্ঘটনার ঝুঁকির কথা স্বীকার করে গাড়ির মালিক আবুল হাশেম বলেন, বাবলুর বয়স কিছুটা কম হলেও সে ভালোভাবে গাড়ি চালায়। তিনি আরো বলেন, এই রুটে যে পরিমাণ লেগুনা ও সেইফ লাইন আছে, সে তুলনায় চালক নেই। বাধ্য হয়ে মালিকেরা কম বয়সী চালকদের গাড়ি দিচ্ছেন। বাবলুর দাবি তার বয়স ১৬ বছর। লাইসেন্সের জন্য সে আবেদন করেছে। এখনো লাইন্সেস বের হয়নি। তবে এ নিয়ে তার কোনো সমস্যা হয় না বলে জানায় ইকবাল।
আরেক চালক আনোয়ারের দাবি, তার বয়স ১৯ বছর। সে আট বছর ধরে মহাসড়কে গাড়ি চালাচ্ছে। সে কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেনি। তবে কয়েকজন যাত্রী বলেন, আনোয়ারের বয়স ১৪-১৫ বছরের বেশি হবে না।
গাড়ির মালিক মামুন বলেন, চালকের দায়িত্ব নেয়ার সময় আনোয়ার একটি লাইসেন্স দেখিয়েছিল। তিনি সেই লাইসেন্স যাচাই করে দেখবেন। যদি লাইসেন্সটি ভুয়া হয়, তাহলে তাকে আর গাড়ি চালাতে দেবেন না।
কথা হয় হেলাপারের দায়িত্ব পালন করা রাব্বি, ওছমান, নুর উদ্দিন, মোশারফসহ একাধিক শিশুর সাথে। তাদের মধ্যে কেউ পরিবারকে সহযোগিতা করতে গাড়িতে উঠেছে। কেউ পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়ায় মা-বাবা গাড়িতে তুলে দিয়েছেন। আবার কেউ হেলপার থেকে চালক হওয়ার আশায় এই পেশায় এসেছে।
জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ করে দেয়ার পর লক্কর-ঝক্কর পুরনো গাড়ি দিয়ে বারইয়ারহাট-বড়দারোগাহাট ও সীতাকুন্ড রুটে লেগুনা ও সেইফ লাইন নামে শত শত গাড়ি দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় চালক নেই। তাই গাড়ি মালিকরা বাধ্য হয়ে অদক্ষ, শিশু-কিশোরদের হাতে গাড়ির চাবি তুলে দিচ্ছেন।
ঝুঁকি নিয়ে কেন কিশোর চালকের গাড়িতে উঠেছেন জানতে চাইলে যাত্রী শহিদুল ইসলাম বলেন, গাড়িতে ওঠার সময় চালকের দিকে তাকাননি। সামনে পেয়েছেন, তাই গাড়িতে উঠে পড়েছেন।
অপর যাত্রী নেপাল নাথ বলেন, এই রুটে ১৩ থেকে ১৪ বছর বয়সী অনেক চালক আছে। যানবাহনের সঙ্কটের কারণে ঝুঁকি আছে জেনেও তারা এসব গাড়িতে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন।
বারইয়ারহাট বাজারের ব্যবসায়ী শাহদাত হোসেন বলেন, সড়কে লেগুনা-সেইফ লাইন পরিবহনের অনেক চালক কিশোর। তারা এখনো অদক্ষ। তারা অনেক দ্রুত বেগে গাড়ি চালায়। সড়কে দাঁড়ানো যাত্রী তুলতে হঠাৎ ব্রেক দেয়। এতে যাত্রীর সমস্যা হয়। এ ছাড়া অনেক সময় উল্টো পথের যাত্রী নিতে এদিক-ওদিক না তাকিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেয়। এ সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ সোহেল সরকার বলেন, লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করছে হাইওয়ে পুলিশ। কিশোর চালকদের হাতে গাড়ি না দিতে তারা বিভিন্ন সময়ে মালিক-শ্রমিকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা করেছেন। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভা করেও সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি

সকল