২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কুমিল্লা মহাসড়কে আবর্জনার ভাগাড় দুর্গন্ধে পথচারীদের দম বন্ধ

কুমিল্লা মহাসড়কের পাশে ময়লার ¯ু‘প হনয়া দিগন্ত -

কুমিল্লা মহাসড়কের পাশের বিভিন্ন এলাকায় পচা দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে আসার উপক্রম হয়েছে। সড়কের পাশ দিয়ে চলাচলকারীদের নাকে মুখে কাপড় বেঁধে যাতায়াত করতে হয়। দুর্গন্ধে যাত্রীদের অনেক সময় বমি করতে দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, বুড়িচং উপজেলার নিমসার, নাজিরাবাজার, চান্দিনা বাসস্টেশনসহ কুমিল্লার বিভিন্ন অংশের মহাসড়ক যেন খোলা আবর্জনার ভাগাড়। মরা পশুপাখি, হাসপাতাল ও কারখানার বর্জ্য, হাটবাজার, পৌরসভা ও আবাসিক এলাকার ময়লা এনে মহাসড়ক ও ফুটপাথের উপরেই অবাধে ফেলা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর শোধনাগার না থাকায় রোগীদের ব্যবহৃত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে মহাসড়কে। এতে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আশপাশের জনবসতিগুলোতে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বাড়ছে মশার বিস্ত—ার।
স্থানীয় কৃষকদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও জোর করে ফসলি জমির উপরে ফেলা হচ্ছে এসব বর্জ্য পদার্থ। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কৃষকরা। তা ছাড়া ময়লার স্তূপ পরিষ্কারের নামে অনেক সময় আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয় লাখ লাখ টাকার সরকারি গাছ। রাতের আঁধারে এসব গাছ কৌশলে কেটে নিয়ে বিক্রি করেছে একটি চক্র।
দাউদকান্দি থেকে পদুয়ার বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা যায়, কয়েক শত মূল্যবান গাছ অনুমতি ছাড়াই কেটে নেয়া হয়েছে। রাতের আঁধারে স্থানীয় প্রভাবশালীরা এসব গাছ প্রথম উপড়ে ফেলে দিয়ে পরে তা টুকরো করে কেটে নেয়। মহাসড়কের পাশে ও ফুটপাথে এসব দূষিত বর্জ্য ও আবর্জনা থেকে রোগবালাই তো ছড়াচ্ছেই সেই সাথে আশপাশের
পরিবেশের উপর এর বিরূপ প্রভাবও পড়ছে। উন্মুক্ত স্থানে ফেলে দেয়া বিষাক্ত ওষুধ ও বিষজাতীয় দ্রব্য খাওয়ার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী জীবজন্তু ও পাখি মারা যাচ্ছে। দেবিদ্বার বাগুর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক যাদব রায় বলেন, একটি সভ্য দেশে এভাবে খোলামেলা আবর্জনা ফেলা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ব্যবহার করে দেশ-বিদেশের ভিআইপি ও পর্যটকরা চলাচল করে। এশিয়ান হাইওয়ের পাশে এমন পরিবেশ অবশ্যই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করে। পৌরসভাগুলোতে আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত স্থান নির্ধারণের পাশাপাশি বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন করা খুবই জরুরি।
কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহাদ উল্লাহ বলেন, বিষয়টি নিয়ে এর আগে বহুবার বিভিন্ন পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়া হয়েছে, মৌখিকভাবেও বহুবার তাদের বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ এদিকে নজর দেননি।
ফলে সরকারের লাখ লাখ টাকার মূল্যবান গাছ নষ্ট হচ্ছে। শুধু গাছই নয় সড়কের সৌন্দর্য ও পরিবেশের ও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করা জনগণসহ সকলেরই দায়িত্ব। অবৈধভাবে সড়কের গাছ যারা কাটছে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement