২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশের সর্ববৃহৎ গুড়ের হাট চুয়াডাঙ্গায়

-

খেজুর গুড় উৎপাদন ও বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার সরোজগঞ্জে জমে ওঠেছে দেশের সর্ববৃহৎ খেজুর গুড়ের হাট। স্বাদে ও গন্ধে এখানকার গুড় অতুলনীয়। সেই সাথে নলেন পাটালির খ্যাতি এখনো কমেনি। তাই এ গুড় কিনতে মানুষের ভিড় চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী সরোজগঞ্জ খেজুর গুড়ের হাটে। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় খেজুর গুড়ের চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়েছে। খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহ করা রস দিয়ে তৈরি ঝোলাগুড় ও নলেন পাটালি বেচাকেনার জন্য এই হাটের ঐতিহ্য কয়েক শত বছরের। সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের সরোজগঞ্জে চুয়াডাঙ্গা-ঢাকা মহাসড়ক ঘেঁষে স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রতি সোম ও শুক্রবার এ হাট বসে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।
গুড় ব্যবসায়ীরা জানান, এখান থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, পাবনাসহ দেশের বড় বড় মোকামে গুড় যায়। প্রতি হাটের দিন ২০০ থেকে ২৫০ টন খেজুর গুড় বিক্রি হয়। যার বিক্রয় মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। এই মৌসুমে হাটে হাজারো মানুষের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর শীত মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেজুর গুড়ের আমদানি এবং বেচাকেনা হয় এই হাটে। স্বাদে ও গন্ধে এখানকার গুড় অতুলনীয়। মৌসুমের পুরো সময়জুড়েই হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে জমজমাট থাকে এই হাট। স্থানীয় পাইকার, মহাজন এবং বিভিন্ন মোকাম থেকে আসা ব্যাপারীরা এমনটাই দাবি করেন। সরেজমিন দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সাজানো খেজুর গুড় ভর্তি মাটির কলস ও ছোট ছোট বেতের তৈরি ঝুড়িতে নলেন পাটালি। ক্রেতা-বিক্রেতারা তা দাঁড়িয়ে দেখছেন। দরদাম ঠিক হলে ওজন করে ট্রাক ভর্তি করা হচ্ছে। হাটের প্রবেশ পথের দুই ধারে বসে কৃষকেরা বাড়িতে তৈরি পাটালি বিক্রি করছেন। আর গুড়ের মাতাল করা মিষ্টি ঘ্রাণে মন ভরে যায়। পাটালি ব্যবসায়ীরা জানান, মৌসুমের শুরুতে এ ধরনের পাটালি প্রতি কেজি ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় পাইকাররা বলেন, আগের হাটের তুলনায় গুড়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের গুড়ের কলস এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেশি দাম জেনেও ব্যাপারীরা ভালো গুড় কিনতে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জেই ছুটে আসেন। এলাকার কয়েকজন গাছি জানান, এবার শুরু থেকেই খেজুর গুড়ের দাম চড়া। জ্বালানি খরচ অনেক বেশি। তাই অনেকে কাঁচা রস ফেরি করে বাজারে বিক্রি করছেন। উৎপাদন ও হাটে আমদানির তুলনায় ক্রেতা বেশি হওয়ায় গুড়ের দাম ঊর্ধ্বমুখী। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে বর্তমানে এ জেলায় তিন লাখের মতো খেজুর গাছ রয়েছে। যার প্রায় অর্ধেকই সদর উপজেলায়। দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান জানান, মৌসুমে প্রতিটি গাছ থেকে অন্তত ৮-১০ কেজি গুড় পাওয়া যায়। সে হিসাবে প্রতিবছর তিন হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদিত হয়। সরোজগঞ্জ হাট খেজুর গুড়ের প্রধান মোকাম। এ ছাড়া দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর ও জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়ায় পাইকারিচৌদ্দগ্রামে মূল হোতাসহ ১১ সড়ক ডাকাত আটক


আরো সংবাদ



premium cement